নওগাঁ ০২:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নামাজের বিনিময়ে আল্লাহ দিবেন অনন্তকালের জান্নাত

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ :

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাজার কেন্দ্রীয় জামেহ মসজিদে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে পেশ ইমাম মাওলানা মো: জিল্লুর রহমান বাংলায় যে খুৎবা দেন, তার সারমর্ম মহাদেবপুর দর্পণের অগণিত পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো :

এ সপ্তাহে ইমাম সাহেব পবিত্র কোরআনুল কারিমের সুরা মমিনুলের কয়েকটি আয়াত তেলওয়াত করে তার অর্র্থ ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন, মানুষ সারাজীবন এবাদৎ করে। এসময়টা কারও ৬০ বছর, কারও ৭০ বছর, বা তারও বেশী বা কম হতে পারে। কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন এর বিনিময়ে যে জান্নাৎ দিবেন, তা হবে অনন্তকালের। মানুষের জীবন এক সময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু জান্নাতের জীবন আর শেষ হবেনা। আর যে একবার জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাকে কখনো সেখান থেকে বের করে দেয়া হবেনা।

তিনি বলেন, একজন মানুষ ৫০ বছর বাঁচলো। আর একজন বাঁচলো ১০০ বছর। যে ৫০ বছর এবাদত করলো, তার বেহেস্ত আর যে ১০০ বছর এবাদত করলো তার বেহেস্ত কি সমান হবে? তিনি বলেন, যে বেশী বাঁচলো, বেশী এবাদত করলো তার বেহেস্তও সমান হবে। এটা বেশী বছর বাঁচার উপর নির্ভর করেনা। কারণ আল্লাহ মানুষকে বেশী হায়াত দেন তাকে পরীক্ষা করার জন্য। তিনি দেখতে চান যে, যে বেশী বাঁচলো সে বেশী এবাদত করে, নাকি নাফরমানী করে।

ইমাম সাহেব বলেন, শিশু বয়সে যারা মারা যায়, তাদের তো কোন পাপ নাই। তাহলে তারা তো সকলেই জান্নাতে যাবে। কিন্তু আল্লাহ তাদেরও একটি পরীক্ষা নিবেন। শিশুদেরকে সামনে একটি আগুনের গর্ত রেখে তাদেরকে হুকুম করা হবে, যাও আগুনে ঝাঁপ দাও। যারা তাঁর হুকুম মেনে তাতে ঝাঁপ দেবে তারা সাথে সাথেই বেহেস্তে প্রবেশ করবে। আর যারা তাঁর হুকুম মানবেনা তাদেরকে বেহেস্তে দাখিল করা হবেনা। কারণ তারা বড় হলে আল্লাহর নাফরমানী করতো।

ইমাম সাহেব বলেন, সুরা মমিনুলে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন উল্লেখ করেন যে, যারা অনন্তকালের জন্য বেহেস্তে যাবে তাদেরকে কয়েকটি গুণের অধিকারী হতে হবে। এর মধ্যে ৩ টি গুণের বিষয় আলোচনা করেন। বাকীগুলো আগামী সপ্তাহে আলোচনা করা হবে।

গুণগুলোর মধ্যে রয়েছে, যারা খুশু খুজুর সাথে নামাজ আদায় করবে। যারা যাকাৎ দিবে। যারা নিজ কওমের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখবে।

তিনি ব্যাখ্যায় বলেন, নামাজ আদায় করতে হবে আল্লাহর ভয়কে সামনে রেখে। রাসুল (দ:) ও তার সাহাবীরা যেভাবে নামাজ আদায় করেছেন, সেভাবে নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজে পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। নামাজ পড়ার সময় অন্য বিষয় চিন্তা করলে চলবেনা।

এ প্রসঙ্গে তিনি কয়েকটি হাদিসের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি। কেউ বেহেস্ত পেল, কিন্তু চাবির অভাবে তার দরজা খুলতে পারলোনা। তাহলে কোন লাভ হবেনা। রোজ হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেয়া হবে। তার নামাজের হিসাব সহজ হবে, তার অন্য হিসাবও সহজ হবে। রাসুল (দ:) বলেছেন, কারও বাড়ীর সামনে যদি স্বচ্ছ পানির নহর থাকে, এবং সে যদি প্রতিদিন পাঁচবার তাতে গোসল করে, তবে তার শরীরে কি কোন ময়লা লাগতে পারে? তদ্রুপ যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তার কোন গুনাহ থাকেনা। যদি কোন কারখানার শ্রমিকের কারখানা ও বাড়ীর রাস্তায় পাঁচটি স্বচ্ছ পানির নহর থাকে, আর সে কারখানায় কাজ করে কালি মেখে বাড়ী ফেরার পথে প্রত্যেক নহরে গোসল করে, তবে কি তার শরীরে কারখানার কোন কালি থাকতে পারে? হযরত আবু যর (রা:) বর্ণনা করেন যে, রাসুল (দ:) একবার শীতকালে একটি গাছের শাখা ধরে ঝোক দিলেন। গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়তে লাগলো। তখন রাসুল (দ:) বললেন, হে আবু যর, আমি কেন এমন করলাম তুমি জিজ্ঞাসা করলে না? আবু যর জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, কোন মুসলমান যখন নামাজ আদায় করে, তখন তার গুণাহ সমূহ এইভাবে ঝরে পড়তে থাকে। একজন সাহাবী অন্য একজন সাহাবী অজু করার সময় দেখতে পেলেন যে, পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার সময় তার মুখের দ্বারা, চোখের দ্বারা যেসব গুণাহ হয়েছিল, সেগুলো ঝরে পড়ছে। তিনি ওই সাহাবীকে বললেন, তুমি তো অমুক গুণাহ করেছিলে। ওই সাহাবী তা স্বীকার করলেন। তিনি কিভাবে এটা জানতে পারলেন তা রাসুল (দ:) কে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুল (দ:) তার সেই ক্ষমতা খর্ব করলেন।

ইমাম সাহেব বলেন, রাসুল (দ:) বলেছেন, সে হচ্ছে বড় চোর, যে, নামাজে চুরি করে। কেউ জিজ্ঞাসা করলেন, হুজুর নামাজে চুরিটা কি? তিনি বললেন, রুকুতে সময় না দেওয়া, সেজদায় সময় না দেয়া। #

আপলোডকারীর তথ্য

নামাজের বিনিময়ে আল্লাহ দিবেন অনন্তকালের জান্নাত

প্রকাশের সময় : ১০:০৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ :

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাজার কেন্দ্রীয় জামেহ মসজিদে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে পেশ ইমাম মাওলানা মো: জিল্লুর রহমান বাংলায় যে খুৎবা দেন, তার সারমর্ম মহাদেবপুর দর্পণের অগণিত পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো :

এ সপ্তাহে ইমাম সাহেব পবিত্র কোরআনুল কারিমের সুরা মমিনুলের কয়েকটি আয়াত তেলওয়াত করে তার অর্র্থ ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন, মানুষ সারাজীবন এবাদৎ করে। এসময়টা কারও ৬০ বছর, কারও ৭০ বছর, বা তারও বেশী বা কম হতে পারে। কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন এর বিনিময়ে যে জান্নাৎ দিবেন, তা হবে অনন্তকালের। মানুষের জীবন এক সময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু জান্নাতের জীবন আর শেষ হবেনা। আর যে একবার জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাকে কখনো সেখান থেকে বের করে দেয়া হবেনা।

তিনি বলেন, একজন মানুষ ৫০ বছর বাঁচলো। আর একজন বাঁচলো ১০০ বছর। যে ৫০ বছর এবাদত করলো, তার বেহেস্ত আর যে ১০০ বছর এবাদত করলো তার বেহেস্ত কি সমান হবে? তিনি বলেন, যে বেশী বাঁচলো, বেশী এবাদত করলো তার বেহেস্তও সমান হবে। এটা বেশী বছর বাঁচার উপর নির্ভর করেনা। কারণ আল্লাহ মানুষকে বেশী হায়াত দেন তাকে পরীক্ষা করার জন্য। তিনি দেখতে চান যে, যে বেশী বাঁচলো সে বেশী এবাদত করে, নাকি নাফরমানী করে।

ইমাম সাহেব বলেন, শিশু বয়সে যারা মারা যায়, তাদের তো কোন পাপ নাই। তাহলে তারা তো সকলেই জান্নাতে যাবে। কিন্তু আল্লাহ তাদেরও একটি পরীক্ষা নিবেন। শিশুদেরকে সামনে একটি আগুনের গর্ত রেখে তাদেরকে হুকুম করা হবে, যাও আগুনে ঝাঁপ দাও। যারা তাঁর হুকুম মেনে তাতে ঝাঁপ দেবে তারা সাথে সাথেই বেহেস্তে প্রবেশ করবে। আর যারা তাঁর হুকুম মানবেনা তাদেরকে বেহেস্তে দাখিল করা হবেনা। কারণ তারা বড় হলে আল্লাহর নাফরমানী করতো।

ইমাম সাহেব বলেন, সুরা মমিনুলে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন উল্লেখ করেন যে, যারা অনন্তকালের জন্য বেহেস্তে যাবে তাদেরকে কয়েকটি গুণের অধিকারী হতে হবে। এর মধ্যে ৩ টি গুণের বিষয় আলোচনা করেন। বাকীগুলো আগামী সপ্তাহে আলোচনা করা হবে।

গুণগুলোর মধ্যে রয়েছে, যারা খুশু খুজুর সাথে নামাজ আদায় করবে। যারা যাকাৎ দিবে। যারা নিজ কওমের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখবে।

তিনি ব্যাখ্যায় বলেন, নামাজ আদায় করতে হবে আল্লাহর ভয়কে সামনে রেখে। রাসুল (দ:) ও তার সাহাবীরা যেভাবে নামাজ আদায় করেছেন, সেভাবে নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজে পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। নামাজ পড়ার সময় অন্য বিষয় চিন্তা করলে চলবেনা।

এ প্রসঙ্গে তিনি কয়েকটি হাদিসের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি। কেউ বেহেস্ত পেল, কিন্তু চাবির অভাবে তার দরজা খুলতে পারলোনা। তাহলে কোন লাভ হবেনা। রোজ হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেয়া হবে। তার নামাজের হিসাব সহজ হবে, তার অন্য হিসাবও সহজ হবে। রাসুল (দ:) বলেছেন, কারও বাড়ীর সামনে যদি স্বচ্ছ পানির নহর থাকে, এবং সে যদি প্রতিদিন পাঁচবার তাতে গোসল করে, তবে তার শরীরে কি কোন ময়লা লাগতে পারে? তদ্রুপ যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তার কোন গুনাহ থাকেনা। যদি কোন কারখানার শ্রমিকের কারখানা ও বাড়ীর রাস্তায় পাঁচটি স্বচ্ছ পানির নহর থাকে, আর সে কারখানায় কাজ করে কালি মেখে বাড়ী ফেরার পথে প্রত্যেক নহরে গোসল করে, তবে কি তার শরীরে কারখানার কোন কালি থাকতে পারে? হযরত আবু যর (রা:) বর্ণনা করেন যে, রাসুল (দ:) একবার শীতকালে একটি গাছের শাখা ধরে ঝোক দিলেন। গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়তে লাগলো। তখন রাসুল (দ:) বললেন, হে আবু যর, আমি কেন এমন করলাম তুমি জিজ্ঞাসা করলে না? আবু যর জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, কোন মুসলমান যখন নামাজ আদায় করে, তখন তার গুণাহ সমূহ এইভাবে ঝরে পড়তে থাকে। একজন সাহাবী অন্য একজন সাহাবী অজু করার সময় দেখতে পেলেন যে, পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার সময় তার মুখের দ্বারা, চোখের দ্বারা যেসব গুণাহ হয়েছিল, সেগুলো ঝরে পড়ছে। তিনি ওই সাহাবীকে বললেন, তুমি তো অমুক গুণাহ করেছিলে। ওই সাহাবী তা স্বীকার করলেন। তিনি কিভাবে এটা জানতে পারলেন তা রাসুল (দ:) কে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুল (দ:) তার সেই ক্ষমতা খর্ব করলেন।

ইমাম সাহেব বলেন, রাসুল (দ:) বলেছেন, সে হচ্ছে বড় চোর, যে, নামাজে চুরি করে। কেউ জিজ্ঞাসা করলেন, হুজুর নামাজে চুরিটা কি? তিনি বললেন, রুকুতে সময় না দেওয়া, সেজদায় সময় না দেয়া। #