নওগাঁ ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদের ফোনে বয়লার শ্রমিক পেলেন নায্য মজুরী

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২১ জানুয়ারী ২০২০ :

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো: হারুন অর রশিদের ব্যক্তিগত তৎপরতায় একজন বয়লার শ্রমিক তার নায্য মজুরী পেয়েছেন। তার এই বদান্যতায় আমরা অভিভূত। তার আন্তরিকার সে দরদ মাখানো সত্য কিচ্ছা আমরা তাঁর ভাষাতেই মহাদেবপুর দর্পণের অগণিত পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরলাম :

”গতকাল আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে। কলারকে জিজ্ঞাসা করি আপনার জন্য কি করতে পারি। তিনি বলেন নওগাঁর একটি অটো রাইস মিলে তিনি কাজ করেছেন এক মাস বিশ দিন। এরপর তিনি চার দিনের ছুটি চাইলে ছুটি না দেয়ায় কাজ ছেড়ে দেন। এক মাসের টাকা আগেই পেয়েছেন, কিন্তু বাকী বিশ দিনের টাকা দিচ্ছেনা। আজ দেব কাল দেব করেছে, এখন বলে টাকা দেবেনা, মিলে গেলে মাইর দেবে। মিলের ম্যানেজারের নাম্বার সে আমাকে দেয়। তরুণ কন্ঠ এবং একেবারেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিল এবং আমাকে ভাই সম্ভাষণ করছিল। আমি তুমি সম্ভাষণে তাকে জিজ্ঞাসা করি আমার নাম্বার সে কোথায় পেল। বলল 333 নাম্বারে কল করে নিয়েছে।

ম্যানেজারকে একটু পরেই ফোন করি। তিনি বলেন স্যার আজ পাঠিয়ে দেন টাকা দিচ্ছি। ঘন্টাখানেক পরে ম্যানেজার সাহেব আমাকে ফোন করে ভাই সম্ভাষণে বলেন ”কোথাত থেকে বলছেন ভাই”। আমি বলি কিছুক্ষণ আগেতো কথা বললাম পরিচয় দিয়ে। আমি ডিসি নওগাঁ। উত্তরে তিনি বলেন, “ওতো ডিসির কাছে যাতেই পারবেনা, কি কন না কন”। আমি মনে মনে হাসি আর বলি আপনি কি ডিসির সাথে দেখা করতে পারেন। তিনি বলেন, “না আমিও পারিনা” আমি বলি কে কে দেখা করতে পারেন আর পারেন না, তার লিস্ট আপনার কাছে আছে? “না নেই”। আমি বলি আচ্ছা কাল ওকে যেতে বলেছি টাকাটা দেবেন, নাহয় কাল ওকেসহ ডিসি অফিসে আসেন। একটু পরে আবার ছেলেটা ফোন করে বলে ভাই কাল সকালে আপনাকেসহ ডেকেছে। আমি ওকে বলি তুমি কাল যাও টাকা দেবে। এরমধ্যে আরেকটি নাম্বার থেকে আমার পরিচয় জানতে চেয়ে ফোন আসে। আজ সকাল 10 টার দিকে ছেলেটি আবার ফোন করে বলে ভাই টাকা দেবেনা বলছে। আমি ডিসি, ফুড সাহেবকে বলি মিলের মালিক বা ম্যানেজারকে আমার কাছে আসতে বলার জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলেটি আবার ফোন করে বলে সম্পূর্ণ টাকা পেয়েছে।

এই ঘটনাটিকে আমার বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একটি খন্ড চিত্র বলে মনে হয়েছে। আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়নের অনেক দৃশ্য চোখে দেখি। ঘটনাটি এখানে পোস্ট করলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্য যে দিকটি ঘটনাটির মাধ্যমে আমার নিকট উদঘাটিত হল তা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

1) ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল আমরা কতটা ভোগ করছি তার একটি ছোট্ট উদাহরণ এ ঘটনা। আজ একজন নিরক্ষর শ্রমিকও ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণ করছেন। 333তে ফোন দিয়ে ডিসির নাম্বার সংগ্রহ করতে না পারলে তার হয়তো ঘাম ঝরানো শ্রমের 20 দিনের মজুরি পাওয়াই সম্ভব হতোনা।

2) সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলে যাওয়া মানসিকতা এ ঘটনায় প্রস্ফুটিত হয়েছে। ডিসির কাছে এভাবে মানুষ সহজে পৌঁছতে পারে তা এখনো হয়তো অনেকে বিশ্বাস করতে চাননা। তাছাড়া মানুষের ধারনা ডিসির কাছে একটা কিছু বললে তিনি তার এডিসিকে বলবেন, এডিসি ইউএনওকে বলবেন। এভাবে তিন চারজন ঘুরে মেসেজ যাবে। ডিসি সরাসরি মানুষকে ফোন দিতে পারেন তাও মানুষ বিশ্বাস করতে চাননা।

এখানে দায়িত্ব নিয়েই বলতে চাই জেলা প্রশাসকগণের নিকট যে কেউ দেখা করতে পারেন, ফোন করতে পারেন। কারুর ভায়া বা মাধ্যম হয়ে ডিসিদের কাছে আসতে হয়না। এমনকি বুধবার এমন একটি দিবস যেদিন ডিসিগণ কোন অফিসিয়াল ট্যুর রাখেননা, মিটিংয়ে এটেন্ড করেননা। শুধুমাত্র জনসাধারণকে শোনার জন্য অফিসে অবস্থান করেন।

আসুন আমরা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।”

(নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ এর ফেসবুক থেকে নওয়া গত শনিবারের পোষ্ট)

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদের ফোনে বয়লার শ্রমিক পেলেন নায্য মজুরী

প্রকাশের সময় : ১০:২৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২০
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২১ জানুয়ারী ২০২০ :

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো: হারুন অর রশিদের ব্যক্তিগত তৎপরতায় একজন বয়লার শ্রমিক তার নায্য মজুরী পেয়েছেন। তার এই বদান্যতায় আমরা অভিভূত। তার আন্তরিকার সে দরদ মাখানো সত্য কিচ্ছা আমরা তাঁর ভাষাতেই মহাদেবপুর দর্পণের অগণিত পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরলাম :

”গতকাল আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে। কলারকে জিজ্ঞাসা করি আপনার জন্য কি করতে পারি। তিনি বলেন নওগাঁর একটি অটো রাইস মিলে তিনি কাজ করেছেন এক মাস বিশ দিন। এরপর তিনি চার দিনের ছুটি চাইলে ছুটি না দেয়ায় কাজ ছেড়ে দেন। এক মাসের টাকা আগেই পেয়েছেন, কিন্তু বাকী বিশ দিনের টাকা দিচ্ছেনা। আজ দেব কাল দেব করেছে, এখন বলে টাকা দেবেনা, মিলে গেলে মাইর দেবে। মিলের ম্যানেজারের নাম্বার সে আমাকে দেয়। তরুণ কন্ঠ এবং একেবারেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিল এবং আমাকে ভাই সম্ভাষণ করছিল। আমি তুমি সম্ভাষণে তাকে জিজ্ঞাসা করি আমার নাম্বার সে কোথায় পেল। বলল 333 নাম্বারে কল করে নিয়েছে।

ম্যানেজারকে একটু পরেই ফোন করি। তিনি বলেন স্যার আজ পাঠিয়ে দেন টাকা দিচ্ছি। ঘন্টাখানেক পরে ম্যানেজার সাহেব আমাকে ফোন করে ভাই সম্ভাষণে বলেন ”কোথাত থেকে বলছেন ভাই”। আমি বলি কিছুক্ষণ আগেতো কথা বললাম পরিচয় দিয়ে। আমি ডিসি নওগাঁ। উত্তরে তিনি বলেন, “ওতো ডিসির কাছে যাতেই পারবেনা, কি কন না কন”। আমি মনে মনে হাসি আর বলি আপনি কি ডিসির সাথে দেখা করতে পারেন। তিনি বলেন, “না আমিও পারিনা” আমি বলি কে কে দেখা করতে পারেন আর পারেন না, তার লিস্ট আপনার কাছে আছে? “না নেই”। আমি বলি আচ্ছা কাল ওকে যেতে বলেছি টাকাটা দেবেন, নাহয় কাল ওকেসহ ডিসি অফিসে আসেন। একটু পরে আবার ছেলেটা ফোন করে বলে ভাই কাল সকালে আপনাকেসহ ডেকেছে। আমি ওকে বলি তুমি কাল যাও টাকা দেবে। এরমধ্যে আরেকটি নাম্বার থেকে আমার পরিচয় জানতে চেয়ে ফোন আসে। আজ সকাল 10 টার দিকে ছেলেটি আবার ফোন করে বলে ভাই টাকা দেবেনা বলছে। আমি ডিসি, ফুড সাহেবকে বলি মিলের মালিক বা ম্যানেজারকে আমার কাছে আসতে বলার জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলেটি আবার ফোন করে বলে সম্পূর্ণ টাকা পেয়েছে।

এই ঘটনাটিকে আমার বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একটি খন্ড চিত্র বলে মনে হয়েছে। আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়নের অনেক দৃশ্য চোখে দেখি। ঘটনাটি এখানে পোস্ট করলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্য যে দিকটি ঘটনাটির মাধ্যমে আমার নিকট উদঘাটিত হল তা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

1) ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল আমরা কতটা ভোগ করছি তার একটি ছোট্ট উদাহরণ এ ঘটনা। আজ একজন নিরক্ষর শ্রমিকও ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণ করছেন। 333তে ফোন দিয়ে ডিসির নাম্বার সংগ্রহ করতে না পারলে তার হয়তো ঘাম ঝরানো শ্রমের 20 দিনের মজুরি পাওয়াই সম্ভব হতোনা।

2) সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলে যাওয়া মানসিকতা এ ঘটনায় প্রস্ফুটিত হয়েছে। ডিসির কাছে এভাবে মানুষ সহজে পৌঁছতে পারে তা এখনো হয়তো অনেকে বিশ্বাস করতে চাননা। তাছাড়া মানুষের ধারনা ডিসির কাছে একটা কিছু বললে তিনি তার এডিসিকে বলবেন, এডিসি ইউএনওকে বলবেন। এভাবে তিন চারজন ঘুরে মেসেজ যাবে। ডিসি সরাসরি মানুষকে ফোন দিতে পারেন তাও মানুষ বিশ্বাস করতে চাননা।

এখানে দায়িত্ব নিয়েই বলতে চাই জেলা প্রশাসকগণের নিকট যে কেউ দেখা করতে পারেন, ফোন করতে পারেন। কারুর ভায়া বা মাধ্যম হয়ে ডিসিদের কাছে আসতে হয়না। এমনকি বুধবার এমন একটি দিবস যেদিন ডিসিগণ কোন অফিসিয়াল ট্যুর রাখেননা, মিটিংয়ে এটেন্ড করেননা। শুধুমাত্র জনসাধারণকে শোনার জন্য অফিসে অবস্থান করেন।

আসুন আমরা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।”

(নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ এর ফেসবুক থেকে নওয়া গত শনিবারের পোষ্ট)