মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৭ নভেম্বর :
নওগাঁ জেলার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তপক্ষ (বিএমডিএ) নওগাঁর ৬ উপজেলায় ৭৯ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খনন করেছে। নির্মাণ করেছে ১৩ টি ক্রস ড্যামসহ ফুটওভার ব্রীজ। এতে বছরে ২৩০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ফসল উৎপন্ন হচ্ছে। সুফল ভোগ করছে অতিরিক্ত ৮০ হাজার পুরুষ ও ৮৫ হাজার মহিলা।
প্রকল্পের আওতাভূক্ত উপজেলাগুলো হলো নওগাঁ সদর, মান্দা, রাণীনগর, আত্রাই, পত্নীতলা, ধামইরহাট। বছর চারেক আগেও জলাবদ্ধতার কারণে এসব উপজেলায় হেক্টরের পর হেক্টর জমি চাষ করতে পারেননি কৃষক। ঋণ করে ফসল লাগিয়েছেন তবে অধিকাংশ সময়ে সেই ফসল ঘরে ওঠেনি। চার বছরের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। আবাদের আওতায় এসেছে ১৬ হাজার হেক্টরের বেশি পতিত আবাদি জমি। বেড়েছে ধান উৎপাদন। সুফল ভোগ করছেন দেড় লাখের বেশি কৃষক।
এই এলাকার কৃষকরা বলছেন, বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) উদ্যোগে এক খাল খনন প্রকল্পই বদলে দিয়েছে এই চিত্র। প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। আর শেষ হয় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে। যার কারণে বছর প্রতি ধান, রবি শষ্যসহ ৪ লাখ মেট্রিক টনের বেশি অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার মাগনা কোমরকোঠা এলাকার আফজাল শাহ নামের এক কৃষক বলেন, বন্যার পানি জমে থাকতো। আগে ঘরবাড়ি ডুবে যেতো। ধান লাগাতে ২ থেকে ৩ মাস দেরি হয়ে যেতো, আর সময় ধান কাটার আগেই বন্যা চলে আসতো। অনেক ধান উঠানো যায়নি। তবে এখন সময় মতোই ফসল আবাদ সক্ষম হয়েছে।
মান্দা উপজেলার গড়িয়াচান এলাকার ইনছের আলী নামের কৃষক বলেন, বোরো আবাদ নিশ্চিত করেছে এই কাজটি। জমিগুলো চাষ উপযোগী হয়েছে । প্রতি হেক্টরে যেখানে আগে ধান উৎপাদন হতো ৬০ থেকে ৭০ মণ। সেখানে এখন ১০০ থেকে ১১০ মণ ধান উৎপাদন হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও বিএমডিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ টি এম মাহফুজুর রহমান বলেন, পূর্বে আমন, আউশ, বোরো এবং রবি শষ্য উৎপাদন করতে পারিনি আমরা। এখন পতিত জমিগুলো আবাদের আওতায় আসছে। শুধু ধান উৎপাদন নয়, সবজিচাষ, হাঁসপালনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এই উদ্যোগ। #