নওগাঁ ০৪:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

পত্নীতলার নাদৌড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : রাস্তার অভাবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ :

নওগাঁর পত্নীতলায় স্কুল আছে কিন্তু যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নাদৌড় গ্রামের শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়টি ২০১২ সালে স্থাপিত হয় । কিন্তু কোমলমতি শিশুদের যাতায়াতের জন্য এখন পর্যন্ত কোন রাস্তা তৈরি হয়নি। গ্রামের সরু আইলই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

বিদ্যালয়ের তিন পাশে ধান ক্ষেত। এর পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। আর সেই পুকুরের পাশ দিয়ে সরু চিকন আইল রাস্তা। সেটাও পুকুরের গর্ভে বিলীনের পথে। বিদ্যালয়ে যেতে রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। একটি কালভার্ট থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।

বর্ষা মৌসুমে পুকুরটি যখন পানিতে ভরে যায় তখন কোন উপায় থাকেনা। মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। রাস্তা সরু হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদেও পুকুরে পড়ে গিয়ে কাপড়, বই-পত্র ভিজিয়ে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে বহুবার। এমতাবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও বছরের পর বছর ধরে সেই ভোগান্তি নিয়েই চলে আসছে শিক্ষালাভের প্রক্রিয়া।

বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র এখলাস উদ্দিনের মা শিউলি বেগম বলেন, ‘রাস্তা না-থাকায় বাচ্চারা একা একা স্কুলে যেতে চায় না। বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে দু:শ্চিন্তায় থাকি পুকুরে পড়ে যায় কিনা। এ জন্য স্কুলে এসে বসে থাকতে হয় এতে সংসারের কাজের ক্ষতি হয়।’

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু আফতাব বলেন, ‘রাস্তা না থাকায় অনেক ভোগান্তি হয়। স্কুলে ছাত্রছাত্রী আসতে চায় না। অভিভাবকরা বাচ্চাদের দিতে চান না। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্র-ছাত্রীই অন্য স্কুলে চলে গেছে। বর্ষা মওসুমে আরো বেশী সমস্যা হয়। অনেক শিক্ষকও পোষ্টিং নিতে চান না। ১০০ ছাত্রছাত্রী নিয়ে বিদ্যালয় শুরু হলেও এখন ৬১ জন আছে। রাস্তা না থাকায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামো কিছু উন্নয়নও হচ্ছে না। শ্রেণিকক্ষের ঘাটতি আছে। তাই রাস্তা তৈরির করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। রাস্তাটি হলে তা এলাকার শিক্ষা বিস্তারে সহায়ক হবে।’

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল বাবু বলেন, ‘গ্রামীণ পাকা সড়ক থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা নষ্ট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ পোহালেও বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না। দিন দিন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান সাদেক উদ্দীন বলেন, ‘রাস্তার বিষয়টি মাথায় আছে। এমপি মহোদয়কে বলে বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল গাফ্ফার বলেন, ‘বিষয়টি জানি। এর আগে একজন সুহৃদ ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। পরবর্তীতে সেখানে রাস্তার জন্য কেউ জমি দিতে না চাওয়ায় কাজটি থমকে আছে। জমি দিতে রাজি হলে ব্যক্তিগত খরচে হলেও রাস্তাটি তৈরি করে দেয়া হবে।’

নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকার এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ‘এ বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘স্কুল কানেকটিং রোড’ নামক একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। দেশের যেসব স্কুলে এক কিলোমিটারের কম দূরত্বের এমন রাস্তার প্রস্তাবনা রয়েছে পর্যায়ক্রমে সবগুলোই এ প্রকল্পের আওতায় আসবে।’#

আপলোডকারীর তথ্য

পত্নীতলার নাদৌড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : রাস্তার অভাবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ :

নওগাঁর পত্নীতলায় স্কুল আছে কিন্তু যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নাদৌড় গ্রামের শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়টি ২০১২ সালে স্থাপিত হয় । কিন্তু কোমলমতি শিশুদের যাতায়াতের জন্য এখন পর্যন্ত কোন রাস্তা তৈরি হয়নি। গ্রামের সরু আইলই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

বিদ্যালয়ের তিন পাশে ধান ক্ষেত। এর পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। আর সেই পুকুরের পাশ দিয়ে সরু চিকন আইল রাস্তা। সেটাও পুকুরের গর্ভে বিলীনের পথে। বিদ্যালয়ে যেতে রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। একটি কালভার্ট থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।

বর্ষা মৌসুমে পুকুরটি যখন পানিতে ভরে যায় তখন কোন উপায় থাকেনা। মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। রাস্তা সরু হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদেও পুকুরে পড়ে গিয়ে কাপড়, বই-পত্র ভিজিয়ে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে বহুবার। এমতাবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও বছরের পর বছর ধরে সেই ভোগান্তি নিয়েই চলে আসছে শিক্ষালাভের প্রক্রিয়া।

বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র এখলাস উদ্দিনের মা শিউলি বেগম বলেন, ‘রাস্তা না-থাকায় বাচ্চারা একা একা স্কুলে যেতে চায় না। বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে দু:শ্চিন্তায় থাকি পুকুরে পড়ে যায় কিনা। এ জন্য স্কুলে এসে বসে থাকতে হয় এতে সংসারের কাজের ক্ষতি হয়।’

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু আফতাব বলেন, ‘রাস্তা না থাকায় অনেক ভোগান্তি হয়। স্কুলে ছাত্রছাত্রী আসতে চায় না। অভিভাবকরা বাচ্চাদের দিতে চান না। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্র-ছাত্রীই অন্য স্কুলে চলে গেছে। বর্ষা মওসুমে আরো বেশী সমস্যা হয়। অনেক শিক্ষকও পোষ্টিং নিতে চান না। ১০০ ছাত্রছাত্রী নিয়ে বিদ্যালয় শুরু হলেও এখন ৬১ জন আছে। রাস্তা না থাকায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামো কিছু উন্নয়নও হচ্ছে না। শ্রেণিকক্ষের ঘাটতি আছে। তাই রাস্তা তৈরির করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। রাস্তাটি হলে তা এলাকার শিক্ষা বিস্তারে সহায়ক হবে।’

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল বাবু বলেন, ‘গ্রামীণ পাকা সড়ক থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা নষ্ট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ পোহালেও বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না। দিন দিন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান সাদেক উদ্দীন বলেন, ‘রাস্তার বিষয়টি মাথায় আছে। এমপি মহোদয়কে বলে বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল গাফ্ফার বলেন, ‘বিষয়টি জানি। এর আগে একজন সুহৃদ ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। পরবর্তীতে সেখানে রাস্তার জন্য কেউ জমি দিতে না চাওয়ায় কাজটি থমকে আছে। জমি দিতে রাজি হলে ব্যক্তিগত খরচে হলেও রাস্তাটি তৈরি করে দেয়া হবে।’

নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকার এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ‘এ বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘স্কুল কানেকটিং রোড’ নামক একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। দেশের যেসব স্কুলে এক কিলোমিটারের কম দূরত্বের এমন রাস্তার প্রস্তাবনা রয়েছে পর্যায়ক্রমে সবগুলোই এ প্রকল্পের আওতায় আসবে।’#