নওগাঁ ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

রাণীনগরের কুমড়ো বড়ির কারিগররা আজও অবহেলিত<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ :

নওগাঁর আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার সুস্বাদু কুমড়ো বড়ির কারিগররা আজও অবহেলিতই থেকে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা গ্রামীণ এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখলেও তাদের কোন উন্নতি হয়নি। না পেয়েছেন কোন সরকারী সহায়তা, না পেয়েছেন প্রয়োজনীয় পুঁজি, না কোন ঋণ সহায়তা। ফিবছর কলাইয়ের দাম বাড়লেও বাড়েনি তাদের মজুরী।

শীত এলেই ব্যস্ততা বাড়ে কুমড়ো বড়ি তৈরীর কাজে নিয়োজিত গ্রামীণ নারীদের। আশ্বিন থেকে ফাল্গুন এই ৬ মাস কুমড়ো বড়ি তৈরী আর বিক্রির মৌসুম। গ্রামের মেয়েরা মাঝ রাত থেকে শুরু করে সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করেন এ বড়ি তৈরী করতে। আর পুরুষরা সে বড়ি নিয়ে বিক্রি করেন হাটে বাজারে।

আত্রাই উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের ৩০-৪০টি পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরী করেন। এ গ্রামের নারী কারিগর লতা মহন্ত বলেন, ‘আগে কুমড়ো বড়ির ব্যবসায়ী পরিবারগুলো তেমন স্বচ্ছল ছিল না। এখন অনেকেই এই এ ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এক কেজি বড়ি তৈরি করতে ১২০ টাকা খরচ হচ্ছে। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।’

বড়ি ব্যবসায়ী গৌড় চন্দ্র বলেন, ‘এখানকার কুমড়া বড়ি খুব সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলের বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বিশেষ করে ঢাকায় এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।’

রাণীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, ‘খট্টেশ্বর গ্রামকে বলা হয় কুমড়া বড়ির গ্রাম। সরকারী সহযোগীতা পেলে এ শিল্পটিকে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।’

কারিগর নরেন দেবনাথ বলেন, ‘আমরা খুবই অবহেলিত। সরকারের কাছ থেকে সবাই সব সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের দিকে কোনো নজর নেই। যতই দিন যাচ্ছে অনেকেই এই পেশা বদলে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। প্রতিটি উপকরণের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এই ব্যবসা ধরে রাখা মুশকিল। যদি সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে ঋণের সুবিধা দেয়া হতো তাহলে আমরা এই শিল্পটাকে আরও অনেক দূর নিতে পারতাম।’

কুজাইল গ্রামের কারিগর পলাশ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘এ শিল্পটিকে আধুনিকায়ন করা হলে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন জানান, ‘শীত মৌসুমে গ্রামের নারীরা কুমড়া বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন। গ্রামীণ নারীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।’

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘উপজেলায় যারা বাণিজ্যিকভাবে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুস্বাদু মাসকালাইয়ের কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন তারা যোগাযোগ করলে তাদের সরকারীভাবে সহযোগীতা প্রদান করার চেষ্টা করবো।’#

আপলোডকারীর তথ্য

রাণীনগরের কুমড়ো বড়ির কারিগররা আজও অবহেলিত<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ :

নওগাঁর আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার সুস্বাদু কুমড়ো বড়ির কারিগররা আজও অবহেলিতই থেকে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা গ্রামীণ এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখলেও তাদের কোন উন্নতি হয়নি। না পেয়েছেন কোন সরকারী সহায়তা, না পেয়েছেন প্রয়োজনীয় পুঁজি, না কোন ঋণ সহায়তা। ফিবছর কলাইয়ের দাম বাড়লেও বাড়েনি তাদের মজুরী।

শীত এলেই ব্যস্ততা বাড়ে কুমড়ো বড়ি তৈরীর কাজে নিয়োজিত গ্রামীণ নারীদের। আশ্বিন থেকে ফাল্গুন এই ৬ মাস কুমড়ো বড়ি তৈরী আর বিক্রির মৌসুম। গ্রামের মেয়েরা মাঝ রাত থেকে শুরু করে সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করেন এ বড়ি তৈরী করতে। আর পুরুষরা সে বড়ি নিয়ে বিক্রি করেন হাটে বাজারে।

আত্রাই উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের ৩০-৪০টি পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরী করেন। এ গ্রামের নারী কারিগর লতা মহন্ত বলেন, ‘আগে কুমড়ো বড়ির ব্যবসায়ী পরিবারগুলো তেমন স্বচ্ছল ছিল না। এখন অনেকেই এই এ ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এক কেজি বড়ি তৈরি করতে ১২০ টাকা খরচ হচ্ছে। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।’

বড়ি ব্যবসায়ী গৌড় চন্দ্র বলেন, ‘এখানকার কুমড়া বড়ি খুব সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলের বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বিশেষ করে ঢাকায় এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।’

রাণীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, ‘খট্টেশ্বর গ্রামকে বলা হয় কুমড়া বড়ির গ্রাম। সরকারী সহযোগীতা পেলে এ শিল্পটিকে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।’

কারিগর নরেন দেবনাথ বলেন, ‘আমরা খুবই অবহেলিত। সরকারের কাছ থেকে সবাই সব সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের দিকে কোনো নজর নেই। যতই দিন যাচ্ছে অনেকেই এই পেশা বদলে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। প্রতিটি উপকরণের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এই ব্যবসা ধরে রাখা মুশকিল। যদি সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে ঋণের সুবিধা দেয়া হতো তাহলে আমরা এই শিল্পটাকে আরও অনেক দূর নিতে পারতাম।’

কুজাইল গ্রামের কারিগর পলাশ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘এ শিল্পটিকে আধুনিকায়ন করা হলে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন জানান, ‘শীত মৌসুমে গ্রামের নারীরা কুমড়া বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন। গ্রামীণ নারীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।’

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘উপজেলায় যারা বাণিজ্যিকভাবে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুস্বাদু মাসকালাইয়ের কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন তারা যোগাযোগ করলে তাদের সরকারীভাবে সহযোগীতা প্রদান করার চেষ্টা করবো।’#