নওগাঁ ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নওগাঁয় সাত দিনের প্রথম দিন লকডাউন ছিল ঢিলেঢালা<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, মাহমুুদুন নবী বেলাল, স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ, ৩ জুন ২০২১ :

করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হওয়ার প্রেক্ষিতে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (৩ জুন) ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শহরে সকাল থেকে অসংখ্য মানুষ, কিছু মোটরসাইকেল, ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। পথচারীদের অনেকেই মাস্ক ছাড়াই চলাচল করেছেন।

বুধবার (২ জুন) নওগাঁ জেলা প্রশাসন এক সপ্তাহের জন্য নওগাঁ সদর পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় লকডাউনের ঘোষণা দেন। এরপর সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন, শ্রমিক সংগঠন থেকে লকডাউনের বিধি নিষেধ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: এবিএম আবু হানিফ জানান, ঈদের আগে যেখানে শনাক্তের হার ছিল গড়ে ১৮ ভাগ। বর্তমানে সেটি বৃদ্ধি পেয়ে ২৫ ভাগ শনাক্ত হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১০৫ জনের নমুনার পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ২৩ জন। এ মাসে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ১০৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ালো দুই হাজার তিনশ’ ৩৯ জনে এবং মোট মৃত্য হয়েছে ৪৩ জনের। তিনি জানান, এ পর্যন্ত সর্বমোট সুস্থ্য হয়েছেন দুই হাজার ৩৫ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন একশ’ চার জন। আর আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ১৭ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১ জন।

লকডাউনে বৃহস্পতিবার নওগাঁ শহরে সকাল থেকে দোকানপাট ও হোটেল বন্ধ ছিল। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত জনবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। লকডাউনের সময় সব রকমের গণপরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও রিক্সা, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল চলাচল করেছে। শহরের তাজের মোড়, মুক্তির মোড়, বালুডাঙ্গাসহ একাধিক স্থানে জেলা পুলিশের পক্ষে বসানো চেকপোস্টে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। মোটরসাইকেল আরোহীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় মামলাও দেওয়ায় হয়েছে। জেলা শহরের অধিকাংশ রিক্সা, অটোরিক্সা বন্ধ রাখায় লোকজনকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত সকাল থেকে শহরের বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চালালেও অধিকাংশ এলাকাতেই আদালতের কার্যক্রম দেখা যায়নি। ফলে শহরের অলিগলিতে মানুষের ভিড়, বিভিন্ন অজুহাতে বাড়ির বাইরে মাস্ক ছাড়াই মানুষের যাতায়াত, অফিস ও জরুরী প্রয়োজনের দোহাই দিয়ে চলাফেরা ইত্যাদি কারণে লকডাউন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। সচেতন মহল মনে করছেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে এর সুফল পাওয়া যাবে না। করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।

নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: রফিকুল ইসলাম জানান, প্রথম দিনে প্রশাসন কঠোর থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে অনেক লোকজন ঘরের বাহির হয়েছে। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় আগামীকাল শুক্রবার থেকে রাস্তাঘাটে লোকজন থাকবেন না বলে তিনি দাবি করেন।

নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কেএম মামুন খান চিশতী জানান, লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই সরকারের দির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যারা যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের কঠোরভাবে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়া যারা প্রয়োজন ব্যতিত যানবাহনে যাতায়াত করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি যাতে কেউ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হন। নিত্য প্রযোজনীয় দোকানপাট ছাড়া যেন অন্য কোন দোকান খুলে না রাখে সেদিকেও বিশেষ নজরদারী রাখা হচ্ছে।

জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার পাশেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় নিয়ামতপুরে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। এছাড়াও নওগাঁ শহরে করোনা শনাক্তের হার বেশি হওয়ায় এই দুই এলাকায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানান, জেলা শহরের সঙ্গে বাকি ১০টি উপজেলার যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। যার কারণে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে তিনিসহ প্রশাসন মাঠে আছে। বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গতবারের চেয়ে বর্তমানে খুব ভালোভাবে লকডাউন চলছে বলে দাবি করেন জেলা প্রশাসক।#

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁয় সাত দিনের প্রথম দিন লকডাউন ছিল ঢিলেঢালা<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০১:১৫:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুন ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, মাহমুুদুন নবী বেলাল, স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ, ৩ জুন ২০২১ :

করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হওয়ার প্রেক্ষিতে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (৩ জুন) ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শহরে সকাল থেকে অসংখ্য মানুষ, কিছু মোটরসাইকেল, ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। পথচারীদের অনেকেই মাস্ক ছাড়াই চলাচল করেছেন।

বুধবার (২ জুন) নওগাঁ জেলা প্রশাসন এক সপ্তাহের জন্য নওগাঁ সদর পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় লকডাউনের ঘোষণা দেন। এরপর সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন, শ্রমিক সংগঠন থেকে লকডাউনের বিধি নিষেধ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: এবিএম আবু হানিফ জানান, ঈদের আগে যেখানে শনাক্তের হার ছিল গড়ে ১৮ ভাগ। বর্তমানে সেটি বৃদ্ধি পেয়ে ২৫ ভাগ শনাক্ত হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১০৫ জনের নমুনার পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ২৩ জন। এ মাসে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ১০৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ালো দুই হাজার তিনশ’ ৩৯ জনে এবং মোট মৃত্য হয়েছে ৪৩ জনের। তিনি জানান, এ পর্যন্ত সর্বমোট সুস্থ্য হয়েছেন দুই হাজার ৩৫ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন একশ’ চার জন। আর আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ১৭ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১ জন।

লকডাউনে বৃহস্পতিবার নওগাঁ শহরে সকাল থেকে দোকানপাট ও হোটেল বন্ধ ছিল। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত জনবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। লকডাউনের সময় সব রকমের গণপরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও রিক্সা, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল চলাচল করেছে। শহরের তাজের মোড়, মুক্তির মোড়, বালুডাঙ্গাসহ একাধিক স্থানে জেলা পুলিশের পক্ষে বসানো চেকপোস্টে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। মোটরসাইকেল আরোহীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় মামলাও দেওয়ায় হয়েছে। জেলা শহরের অধিকাংশ রিক্সা, অটোরিক্সা বন্ধ রাখায় লোকজনকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত সকাল থেকে শহরের বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চালালেও অধিকাংশ এলাকাতেই আদালতের কার্যক্রম দেখা যায়নি। ফলে শহরের অলিগলিতে মানুষের ভিড়, বিভিন্ন অজুহাতে বাড়ির বাইরে মাস্ক ছাড়াই মানুষের যাতায়াত, অফিস ও জরুরী প্রয়োজনের দোহাই দিয়ে চলাফেরা ইত্যাদি কারণে লকডাউন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। সচেতন মহল মনে করছেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে এর সুফল পাওয়া যাবে না। করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।

নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: রফিকুল ইসলাম জানান, প্রথম দিনে প্রশাসন কঠোর থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে অনেক লোকজন ঘরের বাহির হয়েছে। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় আগামীকাল শুক্রবার থেকে রাস্তাঘাটে লোকজন থাকবেন না বলে তিনি দাবি করেন।

নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কেএম মামুন খান চিশতী জানান, লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই সরকারের দির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যারা যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের কঠোরভাবে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়া যারা প্রয়োজন ব্যতিত যানবাহনে যাতায়াত করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি যাতে কেউ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হন। নিত্য প্রযোজনীয় দোকানপাট ছাড়া যেন অন্য কোন দোকান খুলে না রাখে সেদিকেও বিশেষ নজরদারী রাখা হচ্ছে।

জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার পাশেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় নিয়ামতপুরে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। এছাড়াও নওগাঁ শহরে করোনা শনাক্তের হার বেশি হওয়ায় এই দুই এলাকায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানান, জেলা শহরের সঙ্গে বাকি ১০টি উপজেলার যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। যার কারণে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে তিনিসহ প্রশাসন মাঠে আছে। বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গতবারের চেয়ে বর্তমানে খুব ভালোভাবে লকডাউন চলছে বলে দাবি করেন জেলা প্রশাসক।#