মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৭ জানুয়ারী ২০২১ :
নওগাঁঁ পৌর নির্বাচনে গণসংযোগের সময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র নজমুল হক সনির ওপর হামলার প্রতিবাদে নওগাঁ জেলা বিএনপির উদ্যোগে রোববার (১৭ জানুয়ারী) দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাস্টার হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘১১ জানুয়ারি নওগাঁ পৌরসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের প্রচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে বিএনপির প্রার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মী নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রায় প্রতিদিন নেতা–কর্মীদের নিয়ে মোটরসাইকেল শোডাউন ও মিছিল করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা প্রতিনিয়ত ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ছেন। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাঁর কর্মীদের নির্বাচনী এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টির প্রবণতা ততই বাড়ছে।
গতকাল শনিবার রাতে বিএনপির প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীরা হামলা চালানোর অভিযোগ তুলে হাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে শহরের নওযোয়ান মাঠ এলাকায় সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বিএনপির প্রার্থী নজমুল হক। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্মী শাহপরান নয়নের নেতৃত্বে লোহার রড ও লাঠি নিয়ে বিএনপির প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় বিএনপির প্রার্থীসহ ২০-২৫ জন নেতা–কর্মী আহত হন। পরে তাঁরা শহরের দয়ালের মোড় ও কালীতলা মোড় এলাকায় বিএনপির নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে।
এর আগে ১২ জানুয়ারি শহরের কালীতলা সাবান ফ্যাক্টরি এলাকায় বিএনপির প্রচারকাজে ব্যবহৃত দুটি অটোরিকশা ও মাইক ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এসব বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।‘
হাফিজুর রহমান বলেন, `নির্বাচনে বিএনপির কর্মী ও সমর্থকদের মাঠছাড়া করতে এবং সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতির তৈরি করতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের হামলা চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা না চালানোর জন্য বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।‘
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নওগাঁ পৌরসভার মেয়র ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ, অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য রায়হান আকতার রনিসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে এই ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে জেলা বিএনপির দলীয় অফিসের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
হামলা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে নজমুল হক সনি অভিযোগ করেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু একদল মানুষ ভোট ডাকাতির পায়তারা নিয়ে ব্যস্ত। এজন্য নির্বাচনের আগেই তারা আমার এবং নেতা-কর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।’ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সব দল ও প্রশাসনকে কার্যকরী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান এই মেয়র প্রার্থী।
তিনি বলেন, ‘তাদের হামলার উদ্দেশ্য আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা, যাতে কেউ ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাওয়ার সাহস না করে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরুর পর থেকেই পৌর এলাকায় ইতোমধ্যে ভোট সন্ত্রাস শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্মল কৃষ্ণ সাহা বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা বিএনপির প্রার্থী ও তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এটা দলীয় কোন্দলনের কারণে হতে পারে। এখানে আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত নয়।
নওগাঁ সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক ফয়সাল বিন আহসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#