নওগাঁ ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নিয়ামতপুরের অবহেলিত গ্রাম ফুলহারা বড় সমাসপুর<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, তোফাজ্জল হোসেন, নিয়ামতপুর (নওগাঁ), ১৩ জানুয়ারী ২০২১ :

গ্রামের নাম ফুলাহারা বড় সমাসপুর। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার পাড়ইল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অবহেলিত একটি গ্রাম। এ গ্রামের মানুষ স্বপ্ন দেখেন যে মৃত্যুর আগে হয়তো গ্রামে ঢোকার একটা ভালো রাস্তা দেখে যেতে পারবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে, নাকি বাস্তবে পরিণত হবে-এমন শঙ্কা নিয়েই দিনাতিপাত করছেন এখানকার বাসিন্দারা। বছরের পর বছর ধরে এ গ্রামের মানুষ এ ভোগান্তি নিয়েই অবহেলিত জনপদে বসবাস করছেন।

ইতোমধ্যে গ্রামবাসী ফুলাহারা বড় সমাসপুর থেকে ছোট সমাসপুর পর্যন্ত ৬ ফুটের একটি রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও বাধার মুখে তা বন্ধ রয়েছে। জমির আইলের উপর দিয়ে মাত্র ৬ ফিট প্রশস্থ রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল গ্রামবাসী। প্রায় ৭০ভাগ রাস্তা ভরাটের কাজ শেষ করেছেন। রাস্তার উভয় পাশের বেশির ভাগ জমির মালিক রাস্তার জন্য জমি ছেড়ে দিলেও মাত্র দু’জন মালিকের বাধার কারণে রাস্তাটি স্বপ্নই থেকে যায় গ্রামবাসীদের কাছে। বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলেও আর রাস্তাটির কাজ করতে পারেননি এলাকাবাসী।

স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও এগ্রামে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। নিয়ামতপুরের বেশির ভাগ এলাকারই চেহারা পাল্টে গেছে। শুধু এ গ্রামটি অবহেলিত। এগ্রামে সহস্রাধিক লোকের বসবাস। রয়েছে শতাধিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বর্ষা মৌসুমে গ্রাম থেকে বের হতে হলে জমির আইলের উপর দিয়ে পায়ে হাঁটা পথ। কারো মৃত্যু হলে খাটিয়ায় করে লাশ কবরস্থানে নেয়ার উপায় থাকেনা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারে না।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত এ গ্রামে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অথচ এ ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় কোনো না কোনো উন্নয়ন কাজ হয়েছে। গ্রামের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ খাটিয়ায় করে কবরস্থানে নিতে অনেক কষ্ট হয়। যাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে। আর বর্ষার দিনে তো গ্রাম থেকে বের হওয়ায় দুষ্কর হয়ে পড়ে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না।

তারা জানান, ফুলাহারা সমাসপুরে দু’টি পাড়া রয়েছে। একটি বড় সমাসপুর অন্যটি ছোট সমাসপুর। ছোট সমাসপুর গ্রামের পাশ দিয়ে পাকা রাস্তা রয়েছে। কিন্তু বড় সমাসপুরে কোন রাস্তা নেই। বড় সমাসপুর থেকে ছোট সমাসপুরে যাওয়ার জন্য মাত্র ৮শ মিটার রাস্তা জমির আইলের উপর দিয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মাত্র দুজনের বাধর কারণে রাস্তাটি নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

রাস্তাটি নির্মাণ করতে গ্রামবাসী উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় ফুলাহারা গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে কামাল এবং ছোট সমাসপুরের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে আলহাজ্ব আজাহার আলীর বাধার মুখে রাস্তাটি নির্মাণ করা যাচ্ছে না। কারণ ওই দুই ব্যক্তির জমি উপর দিয়েই রাস্তার নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য লোকের খণ্ড খণ্ড জমি থাকলেও তারা বাধা না দিয়ে রাস্তা নির্মাণে সহযোগিতা করেছেন।

এ ব্যাপারে বড় সমাসপুর গ্রামের মৃত লালমনের ছেলে ফুল মোহাম্মাদ জানান, রাস্তা নির্মাণ করতে তারা কোনো বাধা দেননি। দশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে সবাই যদি রাস্তা নির্মাণ করতে তারা সব রকমের সহযোগিতা করবেন।

এ ব্যাপারে পাড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তোজাম্মেল হক বলেন, ‘একটি রাস্তার অভাবে বড় সমাসপুর গ্রামের মানুষগুলো খুবই কষ্টে রয়েছেন। আমি চাই অবশ্যই রাস্তাটি নির্মান হোক। এ ব্যাপারে যত রকমের সহযোগিতা প্রয়োজন আমি করবো। কয়েকদিন আগে আমি এবং আমার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেখানে গিয়েছিলাম। রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে সব রকমের সহযোগিতার কথাও আমরা বলে এসেছি’।

পাড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজিব গ্যান্দা বলেন, ‘আমার পাড়ইল ইউনিয়নের এই একটি মাত্র গ্রামই রাস্তা ছাড়া। গ্রামবাসী রাস্তা নির্মাণে যে উদ্যোগ নিয়েছে আমি তা শুধু সমর্থনই করি না রাস্তা নির্মাণে যা যা সহযোগিতা লাগবে আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে সব রকমের সহযোগিতা করবো’।#

আপলোডকারীর তথ্য

নিয়ামতপুরের অবহেলিত গ্রাম ফুলহারা বড় সমাসপুর<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, তোফাজ্জল হোসেন, নিয়ামতপুর (নওগাঁ), ১৩ জানুয়ারী ২০২১ :

গ্রামের নাম ফুলাহারা বড় সমাসপুর। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার পাড়ইল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অবহেলিত একটি গ্রাম। এ গ্রামের মানুষ স্বপ্ন দেখেন যে মৃত্যুর আগে হয়তো গ্রামে ঢোকার একটা ভালো রাস্তা দেখে যেতে পারবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে, নাকি বাস্তবে পরিণত হবে-এমন শঙ্কা নিয়েই দিনাতিপাত করছেন এখানকার বাসিন্দারা। বছরের পর বছর ধরে এ গ্রামের মানুষ এ ভোগান্তি নিয়েই অবহেলিত জনপদে বসবাস করছেন।

ইতোমধ্যে গ্রামবাসী ফুলাহারা বড় সমাসপুর থেকে ছোট সমাসপুর পর্যন্ত ৬ ফুটের একটি রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও বাধার মুখে তা বন্ধ রয়েছে। জমির আইলের উপর দিয়ে মাত্র ৬ ফিট প্রশস্থ রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল গ্রামবাসী। প্রায় ৭০ভাগ রাস্তা ভরাটের কাজ শেষ করেছেন। রাস্তার উভয় পাশের বেশির ভাগ জমির মালিক রাস্তার জন্য জমি ছেড়ে দিলেও মাত্র দু’জন মালিকের বাধার কারণে রাস্তাটি স্বপ্নই থেকে যায় গ্রামবাসীদের কাছে। বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলেও আর রাস্তাটির কাজ করতে পারেননি এলাকাবাসী।

স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও এগ্রামে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। নিয়ামতপুরের বেশির ভাগ এলাকারই চেহারা পাল্টে গেছে। শুধু এ গ্রামটি অবহেলিত। এগ্রামে সহস্রাধিক লোকের বসবাস। রয়েছে শতাধিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বর্ষা মৌসুমে গ্রাম থেকে বের হতে হলে জমির আইলের উপর দিয়ে পায়ে হাঁটা পথ। কারো মৃত্যু হলে খাটিয়ায় করে লাশ কবরস্থানে নেয়ার উপায় থাকেনা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারে না।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত এ গ্রামে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অথচ এ ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় কোনো না কোনো উন্নয়ন কাজ হয়েছে। গ্রামের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ খাটিয়ায় করে কবরস্থানে নিতে অনেক কষ্ট হয়। যাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে। আর বর্ষার দিনে তো গ্রাম থেকে বের হওয়ায় দুষ্কর হয়ে পড়ে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না।

তারা জানান, ফুলাহারা সমাসপুরে দু’টি পাড়া রয়েছে। একটি বড় সমাসপুর অন্যটি ছোট সমাসপুর। ছোট সমাসপুর গ্রামের পাশ দিয়ে পাকা রাস্তা রয়েছে। কিন্তু বড় সমাসপুরে কোন রাস্তা নেই। বড় সমাসপুর থেকে ছোট সমাসপুরে যাওয়ার জন্য মাত্র ৮শ মিটার রাস্তা জমির আইলের উপর দিয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মাত্র দুজনের বাধর কারণে রাস্তাটি নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

রাস্তাটি নির্মাণ করতে গ্রামবাসী উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় ফুলাহারা গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে কামাল এবং ছোট সমাসপুরের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে আলহাজ্ব আজাহার আলীর বাধার মুখে রাস্তাটি নির্মাণ করা যাচ্ছে না। কারণ ওই দুই ব্যক্তির জমি উপর দিয়েই রাস্তার নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য লোকের খণ্ড খণ্ড জমি থাকলেও তারা বাধা না দিয়ে রাস্তা নির্মাণে সহযোগিতা করেছেন।

এ ব্যাপারে বড় সমাসপুর গ্রামের মৃত লালমনের ছেলে ফুল মোহাম্মাদ জানান, রাস্তা নির্মাণ করতে তারা কোনো বাধা দেননি। দশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে সবাই যদি রাস্তা নির্মাণ করতে তারা সব রকমের সহযোগিতা করবেন।

এ ব্যাপারে পাড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তোজাম্মেল হক বলেন, ‘একটি রাস্তার অভাবে বড় সমাসপুর গ্রামের মানুষগুলো খুবই কষ্টে রয়েছেন। আমি চাই অবশ্যই রাস্তাটি নির্মান হোক। এ ব্যাপারে যত রকমের সহযোগিতা প্রয়োজন আমি করবো। কয়েকদিন আগে আমি এবং আমার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেখানে গিয়েছিলাম। রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে সব রকমের সহযোগিতার কথাও আমরা বলে এসেছি’।

পাড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজিব গ্যান্দা বলেন, ‘আমার পাড়ইল ইউনিয়নের এই একটি মাত্র গ্রামই রাস্তা ছাড়া। গ্রামবাসী রাস্তা নির্মাণে যে উদ্যোগ নিয়েছে আমি তা শুধু সমর্থনই করি না রাস্তা নির্মাণে যা যা সহযোগিতা লাগবে আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে সব রকমের সহযোগিতা করবো’।#