মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১২ নভেম্বর ২০২০ :
উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁ। শুধু খাদ্যেই নয়- এই জেলা আদিকাল হতেই নানা বৈচিত্রে ভরপুর। ছোট ছোট নদী বহুল এ জেলা প্রাচীনকাল হতেই কৃষি কাজের জন্য প্রসিদ্ধ। ফসলের মাঠ জুড়ে বাতাসে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। জেলায় মাঠের পর মাঠ এখন পাকা ধানের সোনালী চাদরে মোড়ানো। চলতি রোপা আমন মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। পর পর দুইবারের বন্যায় ক্ষতি হওয়ার পরও কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে। জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হাজার ১১৫ মেট্টিক টন অতিরিক্ত চাল উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
নওগাঁ জেলা কৃষি সসম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামসুল ওয়াদুদ জানান, চলতি খরিপ-২/২০২০-২০২১ মৌসুমে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উন্নত ফলনশীল উফশী জাতের ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৭০ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ২৯ হাজার ৮০ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ২৫০ হেক্টর।
উপজেলা ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৭৫০ হেক্টর, রাণীনগর উপজেলায় ১৮ হাজার ৮৫ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ৫ হাজার ১৩০ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ১৩ হাজার ৭৭০ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ২৮ হাজার ৩৩৫ হেক্টর, পতœীতলা উপজেলায় ২৮ হাজার ৪৫০ হেক্টর, ধামইরহাট উপজেলায় ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ১২ হাজার ৭৫ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ১৬ হাজার ৬৯৫ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ১৫ হাজার ৭৫৫ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ২৯ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে।
লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত মোট ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়। কৃষি বিভাগ এই পরিমাণ জমিতে হেক্টর প্রতি গড়ে ৩ দমমিক ১০ মেট্টিক টন হিসেবে ৬ লাখ ১২ হাজার ৭১৫ মেট্টিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
কিন্তু জেলায় পর পর দুই বারের বন্যায় ৫ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার পর জেলায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান উৎপাদন নিশ্চিত হয়। ইতোমধ্যে ধান কাটাও শুরু হয়েছে।
কৃষি বিভাগ পরিমাপ করে জানিয়েছে, হেক্টর প্রতি গড়ে চাল উৎপাদিত হয়েছে ৩ দশমিক ৪০ মেট্টিক টন। এতে জেলায় মোট ৬ লাখ ৫২ হাজার ২৯০ মেট্টিকটন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়েছে। যা ধার্যকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হাজার ১১৫ মেট্টিক টন বেশি।#