নওগাঁ ১০:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

কিচির মিচির শব্দে মুখরিত নওগাঁর পাখি গ্রাম হাতিপোঁতা<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১২ নভেম্বর ২০২০ :

সবুজ শ্যামলে ঘেরা ছায়া সুনিবিড় গ্রাম নওগাঁর হাতিপোঁতা। এখন পাখি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এক সময় পাখিরা অতিথি হলেও এখন তারা স্থায়ী বাসিন্দা।

৮-১০ বছর আগে থেকে পাখিদের বিচরণ শুরু হয়েছে এখানে। ফিবছর তাদের আসা-যাওয়া থাকলেও এবার তারা বাসা বেঁধে সংসার পেতেছে গাছে। ডিম পেড়ে বাচ্চা দিয়েছে। তাই মনের সুখে এবার তারা নিশ্চিন্তে সংসার করছে। সকাল-বিকেল তাদের কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে গ্রামটি। সূর্য উঠার পরপরই তারা আহারে বেরিয়ে যায়। আবার ফিরে আসে বিকেল নাগাদ। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা পাখিদের কিচিরমিচির উপভোগ করতে গ্রামটিতে বেড়াতে আসছেন।

নওগাঁ শহর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত হাতিপোঁতা দক্ষিণ পাড়া। জমিদারী আমলে হাতি নিয়ে খাজনা আদায় করতে এসে হাতিটি মারা যায়। এরপর হাতিটি এ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। সেই থেকে এর নামকরণ করা হয় হাতিপোঁতা।

গ্রামের আক্তার ফারুকের বাগানে বড় বড় গাছ শিমুল, আম, কড়ই ও বাঁশ ঝাঁড় রয়েছে। তার এই বাগানেই গড়ে ওঠেছে পাখি কলোনী। যেখানে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। রয়েছে শামুক খোল, সাদা বক, রাতচোরা, পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির ঘুঘু। নিরাপদ মনে করে প্রতি বছর পাখিরা এখানে আসে। কেউ কেউ চেলে যায়। আবার কেউ কেউ থেকে যায় সারা বছর।

গ্রামের মানুষ প্রেমে পড়েছেন তাদের। এগ্রামের সবাই তাই পাখিপ্রেমি। পাখিদের বিরক্ত করেন না কেউ। বরং নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন সবাই। কাউকে বিরক্ত বা শিকার করতে দেননা। পাখি শিকার রোধে গ্রামবাসী নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। গ্রামের প্রবেশ পথে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে, ‘পাখি কলোনীসমুহ দেশের সম্পদ, এদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের।’

ওই গ্রামের গৃহবধু লিমা বলেন, ‘গাছে গাছে অসংখ্য পাখি বাসা বেঁধেছে, বাচ্চা দিয়েছে। ভোর থেকে সকাল ও বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখিদের কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে পুরো গ্রাম। পাখিরা শামুক খেয়ে খোল নিচে ফেলে দেয়, হাঁস সেগুলো খায়। পাখির ডাকে ভোর হয়, ঘুম ভাঙে। প্রথম প্রথম একটু বিরক্ত হলেও এখন ঠিক হয়ে গেছে।’

পাখি গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন বিষয়টি উপভোগ করি। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন পাখি দেখতে আসেন। এলাকাটি শহরের কাছে হওয়ায় একটু প্রশান্তি পেতে শহরের মানুষ বেশি আসেন। আমরা পাখি শিকার রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।’

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘পাখিগুলো যাতে কেউ অবৈধভাবে শিকার করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহন করবো। হাতিপোঁতা গ্রাম নানা ধরনের পাখির কলবরে মুখরিত থাকে। প্রতিদিনই দূর দুরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই গ্রামে যা অন্য রকম আবহ সৃষ্টি করে। আমাদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব আমরা অব্যশই করবো।’#

আপলোডকারীর তথ্য

কিচির মিচির শব্দে মুখরিত নওগাঁর পাখি গ্রাম হাতিপোঁতা<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৬:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০২০

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১২ নভেম্বর ২০২০ :

সবুজ শ্যামলে ঘেরা ছায়া সুনিবিড় গ্রাম নওগাঁর হাতিপোঁতা। এখন পাখি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এক সময় পাখিরা অতিথি হলেও এখন তারা স্থায়ী বাসিন্দা।

৮-১০ বছর আগে থেকে পাখিদের বিচরণ শুরু হয়েছে এখানে। ফিবছর তাদের আসা-যাওয়া থাকলেও এবার তারা বাসা বেঁধে সংসার পেতেছে গাছে। ডিম পেড়ে বাচ্চা দিয়েছে। তাই মনের সুখে এবার তারা নিশ্চিন্তে সংসার করছে। সকাল-বিকেল তাদের কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে গ্রামটি। সূর্য উঠার পরপরই তারা আহারে বেরিয়ে যায়। আবার ফিরে আসে বিকেল নাগাদ। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা পাখিদের কিচিরমিচির উপভোগ করতে গ্রামটিতে বেড়াতে আসছেন।

নওগাঁ শহর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত হাতিপোঁতা দক্ষিণ পাড়া। জমিদারী আমলে হাতি নিয়ে খাজনা আদায় করতে এসে হাতিটি মারা যায়। এরপর হাতিটি এ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। সেই থেকে এর নামকরণ করা হয় হাতিপোঁতা।

গ্রামের আক্তার ফারুকের বাগানে বড় বড় গাছ শিমুল, আম, কড়ই ও বাঁশ ঝাঁড় রয়েছে। তার এই বাগানেই গড়ে ওঠেছে পাখি কলোনী। যেখানে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। রয়েছে শামুক খোল, সাদা বক, রাতচোরা, পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির ঘুঘু। নিরাপদ মনে করে প্রতি বছর পাখিরা এখানে আসে। কেউ কেউ চেলে যায়। আবার কেউ কেউ থেকে যায় সারা বছর।

গ্রামের মানুষ প্রেমে পড়েছেন তাদের। এগ্রামের সবাই তাই পাখিপ্রেমি। পাখিদের বিরক্ত করেন না কেউ। বরং নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন সবাই। কাউকে বিরক্ত বা শিকার করতে দেননা। পাখি শিকার রোধে গ্রামবাসী নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। গ্রামের প্রবেশ পথে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে, ‘পাখি কলোনীসমুহ দেশের সম্পদ, এদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের।’

ওই গ্রামের গৃহবধু লিমা বলেন, ‘গাছে গাছে অসংখ্য পাখি বাসা বেঁধেছে, বাচ্চা দিয়েছে। ভোর থেকে সকাল ও বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখিদের কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে পুরো গ্রাম। পাখিরা শামুক খেয়ে খোল নিচে ফেলে দেয়, হাঁস সেগুলো খায়। পাখির ডাকে ভোর হয়, ঘুম ভাঙে। প্রথম প্রথম একটু বিরক্ত হলেও এখন ঠিক হয়ে গেছে।’

পাখি গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন বিষয়টি উপভোগ করি। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন পাখি দেখতে আসেন। এলাকাটি শহরের কাছে হওয়ায় একটু প্রশান্তি পেতে শহরের মানুষ বেশি আসেন। আমরা পাখি শিকার রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।’

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘পাখিগুলো যাতে কেউ অবৈধভাবে শিকার করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহন করবো। হাতিপোঁতা গ্রাম নানা ধরনের পাখির কলবরে মুখরিত থাকে। প্রতিদিনই দূর দুরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই গ্রামে যা অন্য রকম আবহ সৃষ্টি করে। আমাদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব আমরা অব্যশই করবো।’#