নওগাঁ ০৬:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নওগাঁ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে বছরের ছয় মাসই জলাবদ্ধতা

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১২ অক্টোবর ২০২০ :

নওগাঁ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর ও চকরামপুর এলাকায় পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে প্রতিবছর বর্ষা শুরু হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। বছরের ছয় মাসই পানিবন্দী থাকে এখানকার প্রায় দুই হাজার বাসিন্দা।

এলাকার লোকজন বলছেন, প্রতিবার নির্বাচনের আগে সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ জনপ্রতিনিধিরা জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস দেন। গত ২০ বছরেও তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর কোনো জনপ্রতিনিধি খোঁজ নেন না। এর সমাধান চেয়ে বিভিন্ন সময় এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিলেও লাভ হয়নি।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, ভবানীপুর ও চকরামপুর ১৯৮৯ সালে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর থেকে ভবানীপুর ও চকরামপুর এলাকায় বসতি গড়ে উঠতে শুরু করে। ক্রমে বাড়তে থাকে বসতি। বর্তমানে এখানকার প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের বাস। বসতি গড়ে ওঠার শুরুর দিকে বৃষ্টির পানি যে পথ দিয়ে নামত, সেদিকে একাধিক বাড়ি ও দুটি চালকল নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর থেকে বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কয়েক বছর ধরে বছরে ছয় মাসই পানি জমে থাকছে।

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভবানীপুর মধ্য, দক্ষিণ ও পূর্ব পাড়া ও চকরামপুর এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে আছে। কোথাও বাড়ি, এমনকি শোবার ঘরেও পানি ঢুকেছে।

এলাকার কয়েকজন বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে এসব এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবারের অন্তত দুই হাজার মানুষ কষ্টে আছে। চার মাসের বেশি সময় ধরে পানি জমে থাকায় এ দুটি এলাকার প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে কোনো ফসল আবাদ হয়নি।

চকরামপুরের সুমন হোসেনের বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি। শোবার ঘরেও পানি। তিনি বলেন, গত জুলাই থেকে বাড়িতে পানি উঠেছে। এখনো নামছে না। শোবার ঘর ও রান্নাঘরে পানি ঢুকে গেছে। প্রতিবছর একই দুর্ভোগ। এই অবস্থার অবসান কবে হবে আল্লাই জানে।

ভবানীপুর এলাকার মীর মোশাররফ হোসেন, দেলওয়ার হোসেন ও এরশাদ আলীসহ সাত-আটজন জানান, পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই তাঁরা এলাকার পানিনিষ্কাশনের জন্য নালা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রতিবারই নির্বাচনের আগে মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা আশার কথা শোনান। সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরাও জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা সব ভুলে যান। এক-দুই দিন টানা বর্ষণ হলেই এলাকায় পানি জমে যায়। সেই পানি ১০-১২ দিনেও সরে না।

জানতে চাইলে ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল লতিফ খান বলেন, জলাবদ্ধতার এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। গত বছর মেয়র এসব এলাকা ঘুরে গেছেন। তিনি জলাবদ্ধতা কিছুটা কমানোর জন্য রিং পাইপের মাধ্যমে তুলসীগঙ্গা নদীতে পানি বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু আজও সেই রিং পাইপ বসানো হয়নি।

এ বিষয়ে মেয়র নজমুল হক বলেন, ‘নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতকরণ প্রকল্প-৩-এর আওতায় ভবানীপুর থেকে তুলসীগঙ্গা নদী পর্যন্ত একটি নালা করার প্রকল্প অনুমোদন হয়ে আছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এই প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই অর্থবছরেই নালাটির নির্মাণকাজ শুরু হতো।’#

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে বছরের ছয় মাসই জলাবদ্ধতা

প্রকাশের সময় : ০৭:০৮:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০২০

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১২ অক্টোবর ২০২০ :

নওগাঁ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর ও চকরামপুর এলাকায় পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে প্রতিবছর বর্ষা শুরু হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। বছরের ছয় মাসই পানিবন্দী থাকে এখানকার প্রায় দুই হাজার বাসিন্দা।

এলাকার লোকজন বলছেন, প্রতিবার নির্বাচনের আগে সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ জনপ্রতিনিধিরা জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস দেন। গত ২০ বছরেও তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর কোনো জনপ্রতিনিধি খোঁজ নেন না। এর সমাধান চেয়ে বিভিন্ন সময় এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিলেও লাভ হয়নি।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, ভবানীপুর ও চকরামপুর ১৯৮৯ সালে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর থেকে ভবানীপুর ও চকরামপুর এলাকায় বসতি গড়ে উঠতে শুরু করে। ক্রমে বাড়তে থাকে বসতি। বর্তমানে এখানকার প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের বাস। বসতি গড়ে ওঠার শুরুর দিকে বৃষ্টির পানি যে পথ দিয়ে নামত, সেদিকে একাধিক বাড়ি ও দুটি চালকল নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর থেকে বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কয়েক বছর ধরে বছরে ছয় মাসই পানি জমে থাকছে।

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভবানীপুর মধ্য, দক্ষিণ ও পূর্ব পাড়া ও চকরামপুর এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে আছে। কোথাও বাড়ি, এমনকি শোবার ঘরেও পানি ঢুকেছে।

এলাকার কয়েকজন বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে এসব এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবারের অন্তত দুই হাজার মানুষ কষ্টে আছে। চার মাসের বেশি সময় ধরে পানি জমে থাকায় এ দুটি এলাকার প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে কোনো ফসল আবাদ হয়নি।

চকরামপুরের সুমন হোসেনের বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি। শোবার ঘরেও পানি। তিনি বলেন, গত জুলাই থেকে বাড়িতে পানি উঠেছে। এখনো নামছে না। শোবার ঘর ও রান্নাঘরে পানি ঢুকে গেছে। প্রতিবছর একই দুর্ভোগ। এই অবস্থার অবসান কবে হবে আল্লাই জানে।

ভবানীপুর এলাকার মীর মোশাররফ হোসেন, দেলওয়ার হোসেন ও এরশাদ আলীসহ সাত-আটজন জানান, পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই তাঁরা এলাকার পানিনিষ্কাশনের জন্য নালা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রতিবারই নির্বাচনের আগে মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা আশার কথা শোনান। সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরাও জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা সব ভুলে যান। এক-দুই দিন টানা বর্ষণ হলেই এলাকায় পানি জমে যায়। সেই পানি ১০-১২ দিনেও সরে না।

জানতে চাইলে ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল লতিফ খান বলেন, জলাবদ্ধতার এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। গত বছর মেয়র এসব এলাকা ঘুরে গেছেন। তিনি জলাবদ্ধতা কিছুটা কমানোর জন্য রিং পাইপের মাধ্যমে তুলসীগঙ্গা নদীতে পানি বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু আজও সেই রিং পাইপ বসানো হয়নি।

এ বিষয়ে মেয়র নজমুল হক বলেন, ‘নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতকরণ প্রকল্প-৩-এর আওতায় ভবানীপুর থেকে তুলসীগঙ্গা নদী পর্যন্ত একটি নালা করার প্রকল্প অনুমোদন হয়ে আছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এই প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই অর্থবছরেই নালাটির নির্মাণকাজ শুরু হতো।’#