নওগাঁ ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

রাণীনগর, আত্রাই, মান্দার দেড়শ’ গ্রামের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, রায়হান আলম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ, ৪ অক্টোবর ২০২০ :

তৃতীয় দফায় নওগাঁর বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। জেলার রানীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের দেড়শ’ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী।

রানীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ৭টি স্থানের ভাঙ্গা অংশ মেরামত না করায় ওই অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
কাঁচা ঘরবাড়ী ভেঙ্গে যাচ্ছে। ফসলের মাঠ তলিয়ে যাচ্ছে। উচু স্থানে বা বাধের উপর আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। জেলায় ৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। কয়েকশ’ পুকুরের মাছ ভেঁসে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ উজ্জামান খান জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আত্রাই ও যমুনা নদীর পানি কয়েকটি স্থানে কমলেও আত্রাই নদীর পানি আত্রাই রেলওয়ে ষ্টেশন পয়েন্টে বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ছোট যমুনা নদীর পানি কমে গিয়ে বর্তমানে বিপদসীমার সমান্তরালে প্রবাহিত হচ্ছে।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, এই উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ তাঁদের গৃহপালিত গবাদি পশু ও হাঁস মুরগী নিয়ে বন্যা কবলিত হয়ে কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছেন।

বন্যা কবলিত ১ হাজার পরিবারের মধ্যে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ১০ কেজি করে চাল ও ডাল, তেল, লবন, নুডলস ইত্যাদি শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে ২ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বন্যা দূর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

আত্রাই উপজেলার নির্বাহী অফিসার সানাউল ইসলাম জানিয়েছেন, এই উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৮০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ৩ হাজার পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল ও ডাল, তেল, লবন, চিনি, নুডলস ইত্যাািদ শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে আরও ২ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

রাণীনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আল মামুন জানিয়েছেন, এই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৪০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ২ হাজার পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল ও ডাল, তেল, লবন, চিনি, নুডলস ইত্যাািদ শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে আরও ২ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, চলতি বন্যায় জেলায় মোট ৬ হাজার ৮১৬ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১১১ হেক্টর জমির শাকসব্জি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বন্যা দুর্গতদের মাঝে সরকারীভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১২৫ মেট্রিক টন চাল ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

বন্যা কবলিতরা জানান, প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণসামগ্রী অপ্রতুল। এই বন্যা মোকাবেলায় আরও ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দের জন্য সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।#

আপলোডকারীর তথ্য

রাণীনগর, আত্রাই, মান্দার দেড়শ’ গ্রামের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, রায়হান আলম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ, ৪ অক্টোবর ২০২০ :

তৃতীয় দফায় নওগাঁর বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। জেলার রানীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের দেড়শ’ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী।

রানীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ৭টি স্থানের ভাঙ্গা অংশ মেরামত না করায় ওই অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
কাঁচা ঘরবাড়ী ভেঙ্গে যাচ্ছে। ফসলের মাঠ তলিয়ে যাচ্ছে। উচু স্থানে বা বাধের উপর আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। জেলায় ৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। কয়েকশ’ পুকুরের মাছ ভেঁসে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ উজ্জামান খান জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আত্রাই ও যমুনা নদীর পানি কয়েকটি স্থানে কমলেও আত্রাই নদীর পানি আত্রাই রেলওয়ে ষ্টেশন পয়েন্টে বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ছোট যমুনা নদীর পানি কমে গিয়ে বর্তমানে বিপদসীমার সমান্তরালে প্রবাহিত হচ্ছে।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, এই উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ তাঁদের গৃহপালিত গবাদি পশু ও হাঁস মুরগী নিয়ে বন্যা কবলিত হয়ে কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছেন।

বন্যা কবলিত ১ হাজার পরিবারের মধ্যে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ১০ কেজি করে চাল ও ডাল, তেল, লবন, নুডলস ইত্যাদি শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে ২ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বন্যা দূর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

আত্রাই উপজেলার নির্বাহী অফিসার সানাউল ইসলাম জানিয়েছেন, এই উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৮০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ৩ হাজার পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল ও ডাল, তেল, লবন, চিনি, নুডলস ইত্যাািদ শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে আরও ২ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

রাণীনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আল মামুন জানিয়েছেন, এই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৪০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ২ হাজার পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল ও ডাল, তেল, লবন, চিনি, নুডলস ইত্যাািদ শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে আরও ২ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, চলতি বন্যায় জেলায় মোট ৬ হাজার ৮১৬ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১১১ হেক্টর জমির শাকসব্জি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বন্যা দুর্গতদের মাঝে সরকারীভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১২৫ মেট্রিক টন চাল ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

বন্যা কবলিতরা জানান, প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণসামগ্রী অপ্রতুল। এই বন্যা মোকাবেলায় আরও ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দের জন্য সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।#