নওগাঁ ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নওগাঁয় বেলকন চাউল কলের দুষিত পানিতে ফসলের ক্ষতি : পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৮ জানুয়ারী ২০২০ :

নওগাঁ সদর উপজেলায় নওগাঁ-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের সাহাপুর নামক স্থানে কার্লভার্টের মুখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চাউল কল তৈরী করেছেন আলহাজ্ব বেলাল হোসেন। চাউল কল তৈরীর কারণে কার্লভার্ট দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওই চাউল কলের দুষিত পানি সরাসরি ফসলের মাঠে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

১৯৮৪ সালে নওগাঁ-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তর পাশে সাহাপুর নামক স্থানে সুনামধন্য ‘বেলকন চাউল কল’ তৈরী করা হয়। কিন্তু তার আগে তৈরী করা হয় কার্লভার্ট। কার্লভার্টের মুখ ঘেঁষে চাউল কলের স্থাপনা তৈরী করায় এলাকাবাসীর কোন কাজে আসে না। এতে করে রাস্তার উত্তর পাশের ধামকুড়ি, সাহাপুর ও বশিপুরসহ কয়েকটি গ্রামের পানি ওই কার্লভার্ট দিয়ে যেতে পারেনা বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

চাউল কল থেকে দুষিত কালো পানি তার আশ পাশে ফসলের জমিতে পড়ছে। আবার সরাসরি কার্লভার্ট দিয়ে রাস্তার দক্ষিণপাশে দোগাছী গ্রামের মাঠের ব্যক্তিগত ফসলে গিয়ে পড়ে। এতে করে প্রায় শতাধিক কৃষকের ফসলের ক্ষতি হওয়ায় ঠিকমতো ফসল হয়না। এছাড়া ফসলে পোকামাকড়ের আক্রমন দেখা দেয়।

চাউলকলের দুষিত পানিতে উত্তর ও দক্ষিণ পাশের প্রায় দুইশ থেকে আড়াইশ বিঘা জমিতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়রা বিষয়টি বার বার চাউল কল মালিককে বলার পরও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

দোগাছী গ্রামের ওয়ার্কসপ মিস্ত্রী মুসা বলেন, আগে তারা গাড়ি দিয়ে দুষিত পানি ফেলে দিতেন। কিন্তু সেটা কয়েক বছর থেকে আর দেখা যায় না। এখন চাউল কলের দুষিত পানি কালভার্টের ভিতর দিয়ে নালা দিয়ে সরাসরি ফসলের ক্ষেতের মধ্য দিয়ে চলে যায়। পানি যাচ্ছে ব্যক্তিগত জমির ফসলের উপর দিয়ে। ফলে মাঠের ফসল পোকা ধরে নষ্ট হয়। নির্ধারিত কোন নালা নাই। শুধু চাউল কলের পানি এ কালভার্ট দিয়ে যায়।

দোগাছী গ্রামের বয়জ্যেষ্ঠ দুলাল হোসেন ও সাহাপুর গ্রামের মুঞ্জুর রহমান বাবু বলেন, আগে কয়েকটি গ্রামের পানি এ কালভার্ট দিয়ে যেতে। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে কালভার্টটি প্রায় দখলে নিয়েছেন বেলকন গ্রুপ। দুষিত পানি ছেড়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় সিমেন্ট ব্যবসায়ী মেহেরুল হাসান সাবু বলেন, আমাদের জমিটা ওয়ার্কফ স্টেটের। যার কারণে বেলকন গ্রুপের মালিক একটু বেশি সুবিধা নিতে চান। চাউল কলের দুষিত ও গরম পানি তাদের হাউজে ফেলার পরে সেখান থেকে ওভারফ্লু হয়ে আমার জমিতে পড়ে। এ কারণে আমার ৪৬ শতাংশ জমির পুরোটাই ফসল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। এছাড়া একটু দুরে ২৫ শতাংশ জমির অর্ধেক পরিমাণ ফসল পাই। আমি অনেক বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু তারা ক্ষমতাবান হওয়ায় কোন কর্ণপাত করেননি। আমাদের দাবি দুষিত পানি বন্ধ হোক।

বেলকন গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বেলাল হোসেন বলেন, ১৯৮৪ সালে চাউল কলটি স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে শুধু আমার চাউল কলের পানি না, অন্যান্য চাউল কলের পানিও যায়। আমার জানামতে আমি কারো উপকার ছাড়া ক্ষতি করি নাই।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হামিদুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাস্থল দেখার পর যদি কার্লভার্ট দিয়ে পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা দেখা যায় তবে সরকারি বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মফিদুল ইসলাম বলেন, দুষিত পানি ফসলি জমিতে পড়লে ফসল নষ্ট হয়। তবে ওই চাউল কলের দুষিত পানি যে ফসলের মাঠে যায় বিষয়টি জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। #

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁয় বেলকন চাউল কলের দুষিত পানিতে ফসলের ক্ষতি : পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত

প্রকাশের সময় : ১০:৪২:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২০
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৮ জানুয়ারী ২০২০ :

নওগাঁ সদর উপজেলায় নওগাঁ-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের সাহাপুর নামক স্থানে কার্লভার্টের মুখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চাউল কল তৈরী করেছেন আলহাজ্ব বেলাল হোসেন। চাউল কল তৈরীর কারণে কার্লভার্ট দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওই চাউল কলের দুষিত পানি সরাসরি ফসলের মাঠে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

১৯৮৪ সালে নওগাঁ-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তর পাশে সাহাপুর নামক স্থানে সুনামধন্য ‘বেলকন চাউল কল’ তৈরী করা হয়। কিন্তু তার আগে তৈরী করা হয় কার্লভার্ট। কার্লভার্টের মুখ ঘেঁষে চাউল কলের স্থাপনা তৈরী করায় এলাকাবাসীর কোন কাজে আসে না। এতে করে রাস্তার উত্তর পাশের ধামকুড়ি, সাহাপুর ও বশিপুরসহ কয়েকটি গ্রামের পানি ওই কার্লভার্ট দিয়ে যেতে পারেনা বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

চাউল কল থেকে দুষিত কালো পানি তার আশ পাশে ফসলের জমিতে পড়ছে। আবার সরাসরি কার্লভার্ট দিয়ে রাস্তার দক্ষিণপাশে দোগাছী গ্রামের মাঠের ব্যক্তিগত ফসলে গিয়ে পড়ে। এতে করে প্রায় শতাধিক কৃষকের ফসলের ক্ষতি হওয়ায় ঠিকমতো ফসল হয়না। এছাড়া ফসলে পোকামাকড়ের আক্রমন দেখা দেয়।

চাউলকলের দুষিত পানিতে উত্তর ও দক্ষিণ পাশের প্রায় দুইশ থেকে আড়াইশ বিঘা জমিতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়রা বিষয়টি বার বার চাউল কল মালিককে বলার পরও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

দোগাছী গ্রামের ওয়ার্কসপ মিস্ত্রী মুসা বলেন, আগে তারা গাড়ি দিয়ে দুষিত পানি ফেলে দিতেন। কিন্তু সেটা কয়েক বছর থেকে আর দেখা যায় না। এখন চাউল কলের দুষিত পানি কালভার্টের ভিতর দিয়ে নালা দিয়ে সরাসরি ফসলের ক্ষেতের মধ্য দিয়ে চলে যায়। পানি যাচ্ছে ব্যক্তিগত জমির ফসলের উপর দিয়ে। ফলে মাঠের ফসল পোকা ধরে নষ্ট হয়। নির্ধারিত কোন নালা নাই। শুধু চাউল কলের পানি এ কালভার্ট দিয়ে যায়।

দোগাছী গ্রামের বয়জ্যেষ্ঠ দুলাল হোসেন ও সাহাপুর গ্রামের মুঞ্জুর রহমান বাবু বলেন, আগে কয়েকটি গ্রামের পানি এ কালভার্ট দিয়ে যেতে। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে কালভার্টটি প্রায় দখলে নিয়েছেন বেলকন গ্রুপ। দুষিত পানি ছেড়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় সিমেন্ট ব্যবসায়ী মেহেরুল হাসান সাবু বলেন, আমাদের জমিটা ওয়ার্কফ স্টেটের। যার কারণে বেলকন গ্রুপের মালিক একটু বেশি সুবিধা নিতে চান। চাউল কলের দুষিত ও গরম পানি তাদের হাউজে ফেলার পরে সেখান থেকে ওভারফ্লু হয়ে আমার জমিতে পড়ে। এ কারণে আমার ৪৬ শতাংশ জমির পুরোটাই ফসল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। এছাড়া একটু দুরে ২৫ শতাংশ জমির অর্ধেক পরিমাণ ফসল পাই। আমি অনেক বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু তারা ক্ষমতাবান হওয়ায় কোন কর্ণপাত করেননি। আমাদের দাবি দুষিত পানি বন্ধ হোক।

বেলকন গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বেলাল হোসেন বলেন, ১৯৮৪ সালে চাউল কলটি স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে শুধু আমার চাউল কলের পানি না, অন্যান্য চাউল কলের পানিও যায়। আমার জানামতে আমি কারো উপকার ছাড়া ক্ষতি করি নাই।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হামিদুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাস্থল দেখার পর যদি কার্লভার্ট দিয়ে পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা দেখা যায় তবে সরকারি বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মফিদুল ইসলাম বলেন, দুষিত পানি ফসলি জমিতে পড়লে ফসল নষ্ট হয়। তবে ওই চাউল কলের দুষিত পানি যে ফসলের মাঠে যায় বিষয়টি জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। #