নওগাঁ ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

রাণীনগরে একাধিক মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছে একজন করে শিক্ষার্থী<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, অহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ, ১৩ আগস্ট ২০২৩ :

চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় পাশের হারে নওগাঁর রাণীনগরের মাদ্রাসাগুলো অনেকটাই শূণ্যের কোঠায়। কোন কোন মাদ্রাসা থেকে একজন, কোন মাদ্রাসা থেকে দুইজন আবার কোন মাদ্রাসা থেকে তিনজন শিক্ষার্থী কোন মতে পাশ করেছে। এতে করে মাদ্রাসার পাঠদান নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের কঠোর তদারকি ও নজরদারীর মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রের অনিয়ম বন্ধ করে পরীক্ষা গ্রহণ করায় টনক নড়েছে অভিভাবকদের। এই ধারাটি অব্যাহত থাকলে সঠিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ শেষে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার রেওয়াজটি পুনরায় চালু হওয়ার পাশাপাশি মেধাবীদের মূল্যায়নের পরিসর আরো বৃদ্ধি পাবে এবং পড়ার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আরও বাড়বে।

উপজেলায় ৭টি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা রয়েছে। না পড়ে সহজেই মাদ্রাসা থেকে পাশ করা যায় এমন ধারণা বহুদিনের। সেই কারণে চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় ধরা খেয়েছে উপজেলার ৬টি মাদ্রাসা। সদ্য প্রকাশিত ফলাফলে উপজেলার রাজাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২১জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তারমধ্য থেকে পাশ করেছে মাত্র একজন, ভেটি আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র একজন, পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসা থেকে ২২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে মাত্র দুইজন, আবাদপুকুর ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৮জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে তিনজন, আল আমিন দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে মাত্র চারজন, পারইল মাদ্রাসা থেকে ১৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে মাত্র ছয়জন। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানরা পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন করা, প্রতিষ্ঠানে ফেল হওয়া বিষয়ে শিক্ষক না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যাকে ফলাফল খারাপ হওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন।

আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার শরীফ উদ্দিন মাজাহারি বলেন, ‘চলতি বছর পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করার কারণে ফলাফলে এমন ধ্বস নেমেছে। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে পরীক্ষায় ভালো করে লেখতে পারেনি। নতুন কেন্দ্রে আমার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রতি কঠোর হওয়ার কারণে তারা নিজেদের মতো করে লিখতে পারেনি।’

রাজাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার মাদ্রাসার অধিকাংশ শিক্ষার্থী গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে খারাপ করার কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠানে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষক নেই। সম্প্রতি গণিত বিষয়ে এক মহিলা শিক্ষক মাদ্রাসায় যোগদান করার পরই বিএড করতে যান।’

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর উপজেলায় কঠোর নজরদারী ও তদারকির মাধ্যমে স্বজনপ্রীতিকে উর্ধে রেখে নিয়ম মাফিক ছকের মধ্যে চলতি বছর দাখিল পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানাই। শতকরা ফলাফল একটু কম হলেও উপজেলাবাসী জেনে গেছেন যে পরীক্ষায় আর অসৎ পন্থা অবলম্বন করার সুযোগ নেই। আর মাদ্রাসায় সঠিকভাবে পাঠদান না করার পাশাপাশি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে সঠিক পন্থায় গড়েও তোলা হয় না। যার ফলে পরীক্ষার কেন্দ্রে একটু কড়াকড়ি করা হলেই মাদ্রাসার ফলাফলে ধ্বস নামে। মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই রেওয়াজ থেকে বের করে নিয়ে আসতে হলে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। পরীক্ষা যতই কঠিন নিয়মের মধ্যে গ্রহণ করা হোক না কেন যদি একজন শিক্ষার্থীকে সঠিক নিয়মের মধ্যে পাঠদান করানো হয় সেই শিক্ষার্থী অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল লাভ করবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘আমি চেস্টা করেছি শতভাগ সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশের মধ্যে দাখিল পরীক্ষা গ্রহণের। এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে সকলের সার্বিক সহযোগীতা নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিয়মের বেড়াজালকে ছিঁড়ে একটি সুস্থ্য পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের চেস্টা করে আসছি। আমি আশাবাদী আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

আপলোডকারীর তথ্য

রাণীনগরে একাধিক মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছে একজন করে শিক্ষার্থী<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৫:৪৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, অহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ, ১৩ আগস্ট ২০২৩ :

চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় পাশের হারে নওগাঁর রাণীনগরের মাদ্রাসাগুলো অনেকটাই শূণ্যের কোঠায়। কোন কোন মাদ্রাসা থেকে একজন, কোন মাদ্রাসা থেকে দুইজন আবার কোন মাদ্রাসা থেকে তিনজন শিক্ষার্থী কোন মতে পাশ করেছে। এতে করে মাদ্রাসার পাঠদান নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের কঠোর তদারকি ও নজরদারীর মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রের অনিয়ম বন্ধ করে পরীক্ষা গ্রহণ করায় টনক নড়েছে অভিভাবকদের। এই ধারাটি অব্যাহত থাকলে সঠিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ শেষে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার রেওয়াজটি পুনরায় চালু হওয়ার পাশাপাশি মেধাবীদের মূল্যায়নের পরিসর আরো বৃদ্ধি পাবে এবং পড়ার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আরও বাড়বে।

উপজেলায় ৭টি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা রয়েছে। না পড়ে সহজেই মাদ্রাসা থেকে পাশ করা যায় এমন ধারণা বহুদিনের। সেই কারণে চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় ধরা খেয়েছে উপজেলার ৬টি মাদ্রাসা। সদ্য প্রকাশিত ফলাফলে উপজেলার রাজাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২১জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তারমধ্য থেকে পাশ করেছে মাত্র একজন, ভেটি আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র একজন, পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসা থেকে ২২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে মাত্র দুইজন, আবাদপুকুর ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৮জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে তিনজন, আল আমিন দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে মাত্র চারজন, পারইল মাদ্রাসা থেকে ১৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাশ করেছে মাত্র ছয়জন। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানরা পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন করা, প্রতিষ্ঠানে ফেল হওয়া বিষয়ে শিক্ষক না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যাকে ফলাফল খারাপ হওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন।

আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার শরীফ উদ্দিন মাজাহারি বলেন, ‘চলতি বছর পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করার কারণে ফলাফলে এমন ধ্বস নেমেছে। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে পরীক্ষায় ভালো করে লেখতে পারেনি। নতুন কেন্দ্রে আমার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রতি কঠোর হওয়ার কারণে তারা নিজেদের মতো করে লিখতে পারেনি।’

রাজাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার মাদ্রাসার অধিকাংশ শিক্ষার্থী গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে খারাপ করার কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠানে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষক নেই। সম্প্রতি গণিত বিষয়ে এক মহিলা শিক্ষক মাদ্রাসায় যোগদান করার পরই বিএড করতে যান।’

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর উপজেলায় কঠোর নজরদারী ও তদারকির মাধ্যমে স্বজনপ্রীতিকে উর্ধে রেখে নিয়ম মাফিক ছকের মধ্যে চলতি বছর দাখিল পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানাই। শতকরা ফলাফল একটু কম হলেও উপজেলাবাসী জেনে গেছেন যে পরীক্ষায় আর অসৎ পন্থা অবলম্বন করার সুযোগ নেই। আর মাদ্রাসায় সঠিকভাবে পাঠদান না করার পাশাপাশি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে সঠিক পন্থায় গড়েও তোলা হয় না। যার ফলে পরীক্ষার কেন্দ্রে একটু কড়াকড়ি করা হলেই মাদ্রাসার ফলাফলে ধ্বস নামে। মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই রেওয়াজ থেকে বের করে নিয়ে আসতে হলে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। পরীক্ষা যতই কঠিন নিয়মের মধ্যে গ্রহণ করা হোক না কেন যদি একজন শিক্ষার্থীকে সঠিক নিয়মের মধ্যে পাঠদান করানো হয় সেই শিক্ষার্থী অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল লাভ করবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘আমি চেস্টা করেছি শতভাগ সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশের মধ্যে দাখিল পরীক্ষা গ্রহণের। এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে সকলের সার্বিক সহযোগীতা নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিয়মের বেড়াজালকে ছিঁড়ে একটি সুস্থ্য পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের চেস্টা করে আসছি। আমি আশাবাদী আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’