নওগাঁ ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

সাপাহারে পাওয়া বোবা ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করেছে পুলিশ : অবশেষে বাবা মার কাছে

মহাদেবপুর দর্পণ, মোছা: কাজী রওশন জাহান, নওগাঁ, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ :

গত ২৮ ডিসেম্বর মহাদেবপুর দর্পণে প্রকাশিত হয়েছিল খবরটি। ছেলেটিকে শনাক্ত করতে পারছিল না কেউই। বরং ছেলে ধরা, ভবঘুরে মনে করে দু এক ঘা বসিয়ে দেবারই চেষ্টা করছিল কোন কোন অতিউৎসাহী মানুষ।

ঘটনাটি ঘটেছিল সাপাহার থানার সরলী গ্রামে। ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখ রাত্রি অনুমান ১০:৩০ ঘটিকার সময় সরলী গ্রামের লোকজন ছেলেটিকে দেখতে পায় এবং সন্দেহ করে সে হয়তো কোনো অপরাধী। সন্দেহের পেছনের কারণ হলো তাকে কোন প্রশ্ন করা হলে সে কোন উত্তর দেয় না।পরবর্তীতে গ্রামের লোকজন সাপাহার থানা পুলিশকে অবহিত করে। থানা পুলিশ ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় বুঝতে পারে সে একজন বাকপ্রতিবন্ধী। বয়স চব্বিশ-পঁচিশ হবে।

নিজের সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীও মনে হয়। ইচ্ছে মতো কাজ করে, মন চাইলে এখানে ওখানে উধাও হয়ে যায়। এমন লোককে থানায় রাখাও সমস্যা। সে তো অপরাধী নয় যে তাকে লকআপে রাখবে।

মানবিক দিক বিবেচনা করে অফিসার ইনচার্জ ফোন করে অবহিত করেন পুলিশ সুপার, নওগাঁ জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএমকে। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য এবং লোকটির নাম ঠিকানা ও অভিভাবককে খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন অফিসার ইন চার্জ এবং সহকারী পুলিশ সুপার, সাপাহার সার্কেলকে।

অফিসার ইনচার্জ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে ছেলেটির পরিচয় জানার চেষ্টা করে। তার দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয় থানার কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল তৌহিদকে।

তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে এবং তার আচরণ দেখে তৌহিদ বুঝতে পারে ছেলেটির বাড়ি উত্তরবঙ্গের কোথাও হবে। সেই সূত্র ধরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানার মিসিং জিডি পর্যালোচনা শুরু করে সাপাহার থানা। পরবর্তীতে জানা যায় ছেলেটির বাড়ি নীলফামারী জেলায়।

টিম নওগাঁর উদ্যোগে ছেলেটির বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে বাবা মাকে জানানো হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। ছুটে আসেন আদরের সন্তানটিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

পুলিশ সুপার নিজে ছেলেটিকে (রুবেল) তার বাবা-মার জিম্মায় দিয়ে দেন এবং রুবেলের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য করার আশ্বাস প্রদান করেন।

শীতের তীব্রতাকে হার মানিয়ে হারানো সন্তানকে নিয়ে হাসিমুখে ফিরে গেলেন বাবা মা।

কনস্টেবল তৌহিদের চোখে শুধু চিকচিক করছিল আনন্দ অশ্রু। বিগত ৬ দিন ধরে সে পরম মমতায় আগলে রেখেছিল বাক-বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রুবেলকে। আর রুবেলও তাই বাবা-মার সাথে গাড়িতে বসেও বারবার তৌহিদকে কাছে ডেকে নিতে চাচ্ছিল।

আর এভাবেই, আবারো টিম নওগাঁর মানবিকতায় হারানো সন্তান ফিরে পেল বাবা মা। #

আপলোডকারীর তথ্য

সাপাহারে পাওয়া বোবা ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করেছে পুলিশ : অবশেষে বাবা মার কাছে

প্রকাশের সময় : ১০:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

মহাদেবপুর দর্পণ, মোছা: কাজী রওশন জাহান, নওগাঁ, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ :

গত ২৮ ডিসেম্বর মহাদেবপুর দর্পণে প্রকাশিত হয়েছিল খবরটি। ছেলেটিকে শনাক্ত করতে পারছিল না কেউই। বরং ছেলে ধরা, ভবঘুরে মনে করে দু এক ঘা বসিয়ে দেবারই চেষ্টা করছিল কোন কোন অতিউৎসাহী মানুষ।

ঘটনাটি ঘটেছিল সাপাহার থানার সরলী গ্রামে। ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখ রাত্রি অনুমান ১০:৩০ ঘটিকার সময় সরলী গ্রামের লোকজন ছেলেটিকে দেখতে পায় এবং সন্দেহ করে সে হয়তো কোনো অপরাধী। সন্দেহের পেছনের কারণ হলো তাকে কোন প্রশ্ন করা হলে সে কোন উত্তর দেয় না।পরবর্তীতে গ্রামের লোকজন সাপাহার থানা পুলিশকে অবহিত করে। থানা পুলিশ ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় বুঝতে পারে সে একজন বাকপ্রতিবন্ধী। বয়স চব্বিশ-পঁচিশ হবে।

নিজের সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীও মনে হয়। ইচ্ছে মতো কাজ করে, মন চাইলে এখানে ওখানে উধাও হয়ে যায়। এমন লোককে থানায় রাখাও সমস্যা। সে তো অপরাধী নয় যে তাকে লকআপে রাখবে।

মানবিক দিক বিবেচনা করে অফিসার ইনচার্জ ফোন করে অবহিত করেন পুলিশ সুপার, নওগাঁ জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএমকে। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য এবং লোকটির নাম ঠিকানা ও অভিভাবককে খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন অফিসার ইন চার্জ এবং সহকারী পুলিশ সুপার, সাপাহার সার্কেলকে।

অফিসার ইনচার্জ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে ছেলেটির পরিচয় জানার চেষ্টা করে। তার দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয় থানার কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল তৌহিদকে।

তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে এবং তার আচরণ দেখে তৌহিদ বুঝতে পারে ছেলেটির বাড়ি উত্তরবঙ্গের কোথাও হবে। সেই সূত্র ধরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানার মিসিং জিডি পর্যালোচনা শুরু করে সাপাহার থানা। পরবর্তীতে জানা যায় ছেলেটির বাড়ি নীলফামারী জেলায়।

টিম নওগাঁর উদ্যোগে ছেলেটির বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে বাবা মাকে জানানো হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। ছুটে আসেন আদরের সন্তানটিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

পুলিশ সুপার নিজে ছেলেটিকে (রুবেল) তার বাবা-মার জিম্মায় দিয়ে দেন এবং রুবেলের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য করার আশ্বাস প্রদান করেন।

শীতের তীব্রতাকে হার মানিয়ে হারানো সন্তানকে নিয়ে হাসিমুখে ফিরে গেলেন বাবা মা।

কনস্টেবল তৌহিদের চোখে শুধু চিকচিক করছিল আনন্দ অশ্রু। বিগত ৬ দিন ধরে সে পরম মমতায় আগলে রেখেছিল বাক-বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রুবেলকে। আর রুবেলও তাই বাবা-মার সাথে গাড়িতে বসেও বারবার তৌহিদকে কাছে ডেকে নিতে চাচ্ছিল।

আর এভাবেই, আবারো টিম নওগাঁর মানবিকতায় হারানো সন্তান ফিরে পেল বাবা মা। #