মহাদেবপুর দর্পণ, এমদাদুল হক দুলু, বদলগাছী (নওগাঁ), ১৩ আগস্ট ২০২২ :
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা সদরের অদূরে হলেও সিমান্তবর্তী একটি গ্রাম আবাদপুর। এই গ্রামের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার পানি নিস্কাশনের খাল আবাদপুর বিল। বিলের উত্তর পাশে মহাদেবপুর উপজেলার সিমান্তবর্তী রাইগাঁ ইউনিয়নের কালনা গ্রাম। আবাদপুর গ্রামের অনেক বড় একটা অংশ ছিল অনাবাদি ও পতিত। বাঁশের ঝোপঝার ও জঙ্গলে ভরা পতিত জমিগুলো বিকেল হলেই নির্জন হয়ে পরে।
এছাড়া সাড়ে তিনশ বিঘার বেশি অংশ জুড়ে রয়েছে বিল। এই বিলের উপর আবাদপুর সিমান্তে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে বিলের দুপাশের সংযোগ স্থাপনের জন্য বিলের উপর সেতু নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই দৈনন্দিন চাহিদা পুরুনে দুপাশের লোকজন আবাদপুরে একটি সাপ্তাহিক হাট বসানোর ব্যবস্থা করে। সোমবার দিনে এখানে বসে হাট। আবার সন্ধ্যা হলেই ভেঙ্গে যায়।
খুব ছোট পরিসরে হলেও হাটের দিন এখানে কাঁচা তরি তরকারি, বিলের টাটকা দেশি মাছ, হাঁস-মুরগী, কবুতরসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী কেনাবেচা হয়। পাশের মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের কালনা, নাউরাইল, সিলিমপুর, কাদিয়াল, বামনকুড়ি এবং বদলগাছীর ভাতশাইল ও চাকরাইল আবাদপুর গ্রামের অধিবাসীরা এখানে কেনাকাটা করেন। কিন্তু হাটবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিন নির্জনতায় এখানে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে উঠে দিন কিংবা রাতে। অধিক নির্জন হওয়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে এখানে ছিনতাইও হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশাপাশি এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় স্থায়ীভাবে দোকানপাট গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন অনেকেই। নাউরাইল গ্রামের ইসমাইল হোসেন বাচ্চু জানান, তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে নাপিতের কাজ করেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প নেওয়ায় তিনি বাঁশ-কাঠ দিয়ে স্থায়ী বেড়ার ঘর নির্মাণ করছেন। আর ঘুরে নয়, এখানে বসে নাপিতের কাজ করবেন।
আবাদপুর গ্রামের শ্রী লিটন চন্দ্র মন্ডল জানালেন, তার মুদির দোকানসহ এখানে স্থায়ীভাবে চায়ের স্টল বসবে। আবাদপুর গ্রামের মৃগেন্দ্রনাথ, ভাতসাইল গ্রামের উৎপল চন্দ্র জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের কারনে সেখানে লোক সমাগম বাড়বে এবং মাদকসহ অপরাধ মুলক কর্মকান্ড রোধ হবে।
বদলগাছী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, এ প্রকল্পের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগসহ সেখানে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে। জনসমাগম বাড়বে। হাটটি সম্প্রসারিত হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আবাদপুরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করেই আমরা এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে বিভিন্ন ধরণের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। যাতে করে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।#