নওগাঁ ০৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

আত্রাইয়ে তিনটি খাল পূণ:খনন : ভাগ্য বদলাবে ১২ হাজার চাষির<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১ আগষ্ট ২০২২ :

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার তিনটি খাল পুণ:খনন করায় স্থানীয় চাষিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রবিশস্য, মৎস্য চাষ, হাঁস পালন, সবজি চাষসহ এলাকার প্রায় ১২ হাজার উপকারভোগীর মুখে হাসি ফুটেছে। খালের পানি থেকে কৃষিকাজে সেচ সুবিধা পাওয়ায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

এক হাজার দু’শ সদস্য বিশিষ্ট গ্রামীণ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির অধীনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি নওগাঁ ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল তিনটির খনন কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তিন ফিট গভীর ও ১৫ ফিট চওড়া করে খালগুলো খনন করা হয়।

এলজিইডি সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্প তিনটি হলো উপজেলার বুড়িগঞ্জ উপ-প্রকল্পের অধীন আত্রাই বুড়িগঞ্জ খাল, ইসলামগাথী মারিয়া কাশিয়াবাড়ি উপ-প্রকল্পের ইসলামগাথী মারিয়া খাল ও চকতেমুখ ইসলামগাথি উপ-প্রকল্পের চকতেমুখ ও সমাস পাড়া খাল।

চকতেমুখ ও সমাস পাড়া খাল আত্রাই গৌড় নদী থেকে শুরু হয়ে মাঠের মধ্য দিয়ে নাগর নদীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। আগে বন্যার সময় ভরা নাগর নদীর পানিতে সরাসরি মাঠের ফসল ডুবে থাকতো। ফরে বোরো ধান উৎপাদন বিঘিœত হতো। খালটি পূণ:খনন করায় কৃষকের ভাগ্য ফিরেছে। গৌড় নদী দিয়ে পানি সরাসরি নিষ্কাশন হওয়ায় জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে।

ইসলামগাথী গ্রামের চাষি শুকবর আলী বলেন, ‘জমিতে ধান চাষের জন্য সেঁচ দিতে এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার দু’শ টাকা খরচ করতে হতো। খাল খননের ফলে সে খরচ থেকে বাঁচা যাবে।’

মারিয়া গ্রামের চাষি দিদারুল আলম বলেন, ‘খাল খনন করায় কৃষি কাজের পাশাপাশি হাঁস পালন, মাছ চাষ, সবজি চাষে সুবিধা হবে। বন্যার পানিতে আর ফসল ডুবে যাবার ভয় থাকবে না।’

কাশিয়াবাড়ি গ্রামের চাষি বিজয় কুমার বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে খালটি খনন করা হয়েছে। এতে আমাদের এই এলাকার চাষিদের কৃষি কাজে অনেক সুবিধা হবে। পানির প্রবাহ ঠিক থাকলে আমাদের ক্ষেতগুলো বছরজুড়ে ফসলে ভরে থাকবে।’

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের এমপি মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল জানান, খাল খননের ওই এলাকাগুলোর বিশেষ ফসল হচ্ছে ধান। এছাড়াও চাষিরা নানা জাতের সবজির চাষ করে থাকেন। সারাবছর চাষি ভাইয়েরা যেন জমিতে সেঁচ দিতে পারেন মূলত: সেই লক্ষ্যেই খালটি পূণ:খনন করা হয়েছে। বিগত দিনে এই অঞ্চলে একটি ফসলও ভালো ভাবে হতো না। খাল খননের ফলে এই অঞ্চলের কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।’

তিনি জানান, আত্রাই-রাণীনগর উপজেলায় ব্যাপক ফসল আবাদ হয়। প্রয়োজন হলে নতুন করে আরও খাল খনন করা হবে।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ জানান, আত্রাই বুড়িগঞ্জ খাল খননের ফলে আত্রাই, বুড়িগঞ্জ, পাচুপুর বিহারীপুরসহ আরও কিছু গ্রাম, ইসলামগাথি মারিয়া কাশিয়াবাড়ি খাল খননের ফলে চৌথল, নওদুলী, শফিকপুর, বাশবাড়িয়া, কচুয়া, পোওয়াতাসহ বেশ কিছু গ্রাম, চকতেমুখ ইসলামগাথি খাল খননের ফলে গুড়নই, জগদশ, নৈদীঘি, পতিসর, তেতুলিয়া পর্যন্ত এবং বরশাতা, নন্দীগ্রাম, ইসলামগাথী, খরসতীসহ আরও কিছু গ্রামের কৃষকেরা কৃষি চাষের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। এরই মধ্যে খাল তিনটি পূণ:খননের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন উপকারভোগীরা। তিনটি খাল খননের ফলে মাল্টিডাইমেশন উপকার পাচ্ছেন তারা।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, তিনটি খাল থেকে দুই হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে সারাবছর ফসল ফলানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখানে উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার। আগে বন্যায় মাঠে দুই ফসল আবাদ করতে পারতেন না কৃষক। অনেক সময় মাঠেই ফসল নষ্ট হয়ে যেত। খাল খননের ফলে এখন তিন ফসল আবাদ করতে পারবেন। ফসল নষ্টের সম্ভাবনাও অনেক কমে গেছে। আর সেচ সুবিধা তো পাবেনই। প্রাকৃতিক মাছের চাহিদাও পূরণ হবে। খাল সংলগ্ন বসবাসকারীরা হাঁস চাষ করতে পারবেন। খালের পাড়ে শাক-সবজি আবাদ করতে পারবেন। তারা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবেন। খালটি খননের ফলে কৃষি খাতে ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।#

আপলোডকারীর তথ্য

আত্রাইয়ে তিনটি খাল পূণ:খনন : ভাগ্য বদলাবে ১২ হাজার চাষির<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০১:০৬:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১ আগষ্ট ২০২২ :

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার তিনটি খাল পুণ:খনন করায় স্থানীয় চাষিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রবিশস্য, মৎস্য চাষ, হাঁস পালন, সবজি চাষসহ এলাকার প্রায় ১২ হাজার উপকারভোগীর মুখে হাসি ফুটেছে। খালের পানি থেকে কৃষিকাজে সেচ সুবিধা পাওয়ায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

এক হাজার দু’শ সদস্য বিশিষ্ট গ্রামীণ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির অধীনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি নওগাঁ ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল তিনটির খনন কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তিন ফিট গভীর ও ১৫ ফিট চওড়া করে খালগুলো খনন করা হয়।

এলজিইডি সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্প তিনটি হলো উপজেলার বুড়িগঞ্জ উপ-প্রকল্পের অধীন আত্রাই বুড়িগঞ্জ খাল, ইসলামগাথী মারিয়া কাশিয়াবাড়ি উপ-প্রকল্পের ইসলামগাথী মারিয়া খাল ও চকতেমুখ ইসলামগাথি উপ-প্রকল্পের চকতেমুখ ও সমাস পাড়া খাল।

চকতেমুখ ও সমাস পাড়া খাল আত্রাই গৌড় নদী থেকে শুরু হয়ে মাঠের মধ্য দিয়ে নাগর নদীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। আগে বন্যার সময় ভরা নাগর নদীর পানিতে সরাসরি মাঠের ফসল ডুবে থাকতো। ফরে বোরো ধান উৎপাদন বিঘিœত হতো। খালটি পূণ:খনন করায় কৃষকের ভাগ্য ফিরেছে। গৌড় নদী দিয়ে পানি সরাসরি নিষ্কাশন হওয়ায় জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে।

ইসলামগাথী গ্রামের চাষি শুকবর আলী বলেন, ‘জমিতে ধান চাষের জন্য সেঁচ দিতে এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার দু’শ টাকা খরচ করতে হতো। খাল খননের ফলে সে খরচ থেকে বাঁচা যাবে।’

মারিয়া গ্রামের চাষি দিদারুল আলম বলেন, ‘খাল খনন করায় কৃষি কাজের পাশাপাশি হাঁস পালন, মাছ চাষ, সবজি চাষে সুবিধা হবে। বন্যার পানিতে আর ফসল ডুবে যাবার ভয় থাকবে না।’

কাশিয়াবাড়ি গ্রামের চাষি বিজয় কুমার বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে খালটি খনন করা হয়েছে। এতে আমাদের এই এলাকার চাষিদের কৃষি কাজে অনেক সুবিধা হবে। পানির প্রবাহ ঠিক থাকলে আমাদের ক্ষেতগুলো বছরজুড়ে ফসলে ভরে থাকবে।’

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের এমপি মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল জানান, খাল খননের ওই এলাকাগুলোর বিশেষ ফসল হচ্ছে ধান। এছাড়াও চাষিরা নানা জাতের সবজির চাষ করে থাকেন। সারাবছর চাষি ভাইয়েরা যেন জমিতে সেঁচ দিতে পারেন মূলত: সেই লক্ষ্যেই খালটি পূণ:খনন করা হয়েছে। বিগত দিনে এই অঞ্চলে একটি ফসলও ভালো ভাবে হতো না। খাল খননের ফলে এই অঞ্চলের কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।’

তিনি জানান, আত্রাই-রাণীনগর উপজেলায় ব্যাপক ফসল আবাদ হয়। প্রয়োজন হলে নতুন করে আরও খাল খনন করা হবে।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ জানান, আত্রাই বুড়িগঞ্জ খাল খননের ফলে আত্রাই, বুড়িগঞ্জ, পাচুপুর বিহারীপুরসহ আরও কিছু গ্রাম, ইসলামগাথি মারিয়া কাশিয়াবাড়ি খাল খননের ফলে চৌথল, নওদুলী, শফিকপুর, বাশবাড়িয়া, কচুয়া, পোওয়াতাসহ বেশ কিছু গ্রাম, চকতেমুখ ইসলামগাথি খাল খননের ফলে গুড়নই, জগদশ, নৈদীঘি, পতিসর, তেতুলিয়া পর্যন্ত এবং বরশাতা, নন্দীগ্রাম, ইসলামগাথী, খরসতীসহ আরও কিছু গ্রামের কৃষকেরা কৃষি চাষের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। এরই মধ্যে খাল তিনটি পূণ:খননের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন উপকারভোগীরা। তিনটি খাল খননের ফলে মাল্টিডাইমেশন উপকার পাচ্ছেন তারা।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, তিনটি খাল থেকে দুই হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে সারাবছর ফসল ফলানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখানে উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার। আগে বন্যায় মাঠে দুই ফসল আবাদ করতে পারতেন না কৃষক। অনেক সময় মাঠেই ফসল নষ্ট হয়ে যেত। খাল খননের ফলে এখন তিন ফসল আবাদ করতে পারবেন। ফসল নষ্টের সম্ভাবনাও অনেক কমে গেছে। আর সেচ সুবিধা তো পাবেনই। প্রাকৃতিক মাছের চাহিদাও পূরণ হবে। খাল সংলগ্ন বসবাসকারীরা হাঁস চাষ করতে পারবেন। খালের পাড়ে শাক-সবজি আবাদ করতে পারবেন। তারা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবেন। খালটি খননের ফলে কৃষি খাতে ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।#