মহাদেবপুর দর্পণ, জিল্লুর রহমান, মান্দা (নওগাঁ), ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ :
নওগাঁর মান্দায় হালকা কুয়াশা আর মাঝারী শৈত্যপ্রবাহের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটানা তিন দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। এতে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন শ্রমজীবী ও ছিন্নমুল মানুষ। এ অবস্থায় ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ কমাতে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে মান্দা উপজেলা প্রশাসন।
রোববার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে মানুষের সরব উপস্থিতি চোখে পড়েনি। জেঁকে বসা শীতে মানুষ জবুথবু হয়ে পড়েছেন। রাস্তাঘাটে লোকজনের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় অনেকটাই অলস সময় কাটাচ্ছেন অটোরিকশা ও ভ্যান চালকরা। তাদের আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেকে আবার উর্পাজনের এ বাহনটি নিয়ে রাস্তায় বের হননি।
এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা শৈত্যপ্রবাহে চরম বেকাদায় পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। হাড় কাঁপানো শীতে ভয়ে তারা কাজে যাচ্ছেন না। ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুন। খড়কুটো জ্বালিয়ে তারা শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার গরম কাপড় সংগ্রহের জন্য ভীড় জমিয়েছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
অটোরিকশা চালক আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন, উজ্জল কুমারসহ আরও অনেকে জানান, ঘন কুয়াশায় সারাদিন আকাশ ঢেকে থাকছে। হালকা বাতাসের কারণে জেঁকে বসেছে শীত। এতে করে রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। স্ট্যান্ডে ঘন্টার পর ঘন্টা অপো করেও কাঙ্খিত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রী না থাকায় আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। উপার্জন কমে যাওয়ায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ, নিত্যদিনের বাজারসহ আনুসাঙ্গিক খরচ যোগাতে হিমসিম খাচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে বছরের এ সময়ে বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেন এ অঞ্চলের কৃষক। হঠাৎ প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে বেকাদায় পড়েছেন কৃষক। বীজতলা তৈরি হলেও কুয়াশা ও ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে বীজ বপনে দুশ্চিতায় পড়তে হয়েছে। যেসকল কৃষকরা ইতোমধ্যে বীজতলায় বীজ বপণ করেছেন সেগুলো বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় তাদেরও দুশ্চিন্তা কাটছে না।
এ অবস্থার ছিন্নমুল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম জানান, উপজেলার কুসুম্বা ও কালীসফা ুদ্র নৃগোষ্ঠী পল্লী, বিভিন্ন হাট-বাজারের দায়িত্বরত নৈশপ্রহরী, এতিমখানা, প্রতিবন্ধী স্কুল ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ৩ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আরও সাড়ে ৩ হাজার কম্বল। পর্যায়ক্রমে ছিন্নমুল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। #