মহাদেবপুর দর্পণ, রওশন জাহান, নওগাঁ, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ :
নওগাঁর ১১ উপজেলায় হঠাৎ করেই জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রীতে। শীত নিবারণের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া অতি দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ। বিশেষ করে ুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রবীণ নারী-পুরুষ ও শিশুরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। তাঁরা প্রচন্ড শীতের মধ্যে রাতে ঘরের মেঝেতে খড় বিছিয়ে ও গায়ে খেজুর পাটি জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীতের পাবল্যতায় সামর্থ্যবান পরিবারের মানুষ যখন আধুনিক ডিজাইনের শীতবস্ত্র কেনার জন্য নগরের এ দোকান সে দোকানে উঁকি মারছেন, সে সময়ে রাতের শীতের আক্রমণ কিভাবে মোকাবিলা করবেন সে দুঃশ্চিন্তায় সময় পার করছেন প্রান্তিক মানুষেরা।
জেলার পত্নীতলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কল্যাণপুর আদিবাসী পল্লীতে আদিবাসী নারীরা কেউ নিজের শাড়ি গায়ে দিয়ে, কেউ স্বামীর লুঙ্গি জড়িয়ে, কেউ শার্ট গায়ে দিয়ে আবার কেউ পুরনো কম্বল গায়ে দিয়ে শীত থেকে রার চেষ্টা করছেন। শিশুরা খালি পায়ে, হাফ প্যান্ট ও হাফ হাতা জামা গায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ বিষয়ে সাটোর্ধ শুমারী উরাও (৬৫) এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, তাঁর থাকার কোন জায়গা নেই, চল্লিশোর্ধ মেয়ে ফুলমনিকে নিয়ে তিনি রাতে একটি খোলা বারান্দায় রাত কাটান। শীত নিবারণের ব্যবস্থা হলো পাতলা কাঁথা। পঞ্চাশোর্ধ আদিবাসী নারী অন্তবালা জানান তাঁর গায়ে দেওয়ার মতো কিছু নাই তাই নিজের অন্য একটি শাড়ি কয়েকভাঁজ করে গায়ে জড়িয়ে আছেন। রাতে তিনি ছেলের বাড়ির বারান্দায় রাত কাটান। মাটিতে খড় বিছিয়ে তাঁর উপর একটি পাটি বিছিয়ে শুয়ে গায়ের উপর আরো একটি খেজুর পাটি ও খেজুর পাটির উপর একটি পাতলা কাঁথা বিছিয়ে তিনি রাত্রী যাপন করবেন। গ্রামের যুবক প্রদীপ জানান, কল্যাণপুর গ্রামে প্রায় ৬০টি উরাও ও সান্তাল সম্প্রদায়ের আদিবাসীর বাস। গ্রামের সকল আদিবাসী পরিবারই দরিদ্র। মাঠে দিনমজুরের কাজের পাশাপাশি স্থানীয় ইটভাটাতে দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে শ্রমিকের কাজ করে এরা জীবণধারণ করে। প্রচন্ড শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। এখন পর্যন্ত গ্রামে শীতবস্ত্র বিতরণ করার জন্য কেউ আসেনি বলেও তিনি জানান।
পিছিয়ে পড়া আদিবাসীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অসহনীয় শীতের প্রকোপ থেকে রা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবান মানুষের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন এই আদিবাসী যুবক।
পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: লিটন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতি ইউনিয়নের জন্য ৪শত পিছ করে কম্বল বরাদ্দ করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে ৪হাজার ৮শত পিছ কম্বল ইউনিয়ন পরিষদকে বিতরণের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে। #