মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ৭ ডিসেম্বর ২০১৯ :
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের চকরাজা আহম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসার কোটি টাকার সম্পদ দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী মহল জবরদখল করে আসছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সেসব সম্পদ উদ্ধারের উদ্যোগ নিলে ওই প্রভাবশালী মহল তাদের বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাদিউজ্জামান হাদি ও মাদ্রাসার সুপার মোল্লা জালাল অভিযোগ করেন যে, মাদ্রাসার জমির উপরে এরশাদ আমলে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। ১৯৮৫-’৮৬ সালে তা মাদ্রাসার নামে কিনে নেয়া হয়। মাদ্রাসার তদানিন্তন সেক্রেটারী চকরাজা গ্রামের আব্দুর রহমান সেসময় গভীর নলকূপটি পরিচালনা করতেন। ১৯৯৬ সালে নতুন কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু অদ্যাবধী তিনি গভীর নলকূপটি নতুন কমিটির কাছে হস্তান্তর না করে নিজেই পরিচালনা করে তা থেকে প্রতিবছর আয় হওয়া লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে আসছেন। আব্দুর রহমান গভীর নলকূপটি তার নিজের দাবী করে ২০০৬ সালে নওগাঁর মহাদেবপুর সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা (১৯৪/২০০৬ অন্যপ্রকার) দায়ের করেন। ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারী বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন। আব্দুর রহমান সে রায়ের বিরুদ্ধে নওগাঁর জেলা জজ আদালতে আপিল (৬১/২০১১ টাইটেল আপিল) দায়ের করেন। ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী সে আপিল শুনানীর জন্য দিন ধার্য আছে। আদালতে জিততে না পারলেও আব্দুর রহমান গভীর নলকূপটি গত ২৩ বছর ধরে অবৈধভাবে নিজের দখলে রেখে তা থেকে আয় হওয়া কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় নওগাঁর মহাদেবপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাদ্রাসার সুপার বলেন, সম্প্রতি থানা পুলিশের সহায়তায় সে গভীর নলকূপ মাদ্রাসা কমিটির দখলে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে তারা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। গত ৩ ডিসেম্বর আব্দুর রহমানের ছেলে রাসেল এক সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে। মাদ্রাসায় বর্তমানে ১৮০ জন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও ৫০-৬০ জনের বেশী শিক্ষার্থী নেই এবং দিন দিন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পড়ছে বলে দাবী করা হয়। মাদ্রাসার এতিমখানায় ২২ জন শিশুর সরকারী বরাদ্দ থাকলেও বর্তমানে এখানে ৩০ জন শিশু নিয়মিত অবস্থান করছে। কিন্তু তারা বলে মাত্র ৮-১০ জন শিশু রয়েছে। মাদ্রাসার ১৪ বিঘা জমি থাকলেও তারা ২৫ বিঘার কথা উল্লেখ করেছে।
সুপার বলেন, গত ১৬ অক্টোবর চকরাজা গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে আজাদুল ইসলাম ও আমির হোসেনের ছেলে আমিরুল ইসলাম মাদ্রাসার বাঁশঝাড় থেকে ৭ টি বাঁশ কেটে চুরি করে নিয়ে যায়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ভীমপুর ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে গত ৩১ অক্টোবর আজাদুল তার ফেসবুক একাউন্টে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানান কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য পোষ্ট করে। গত ৩ ডিসেম্বরের সংবাদ সম্মেলনে তারাও উপস্থিত ছিল। #