মহাদেবপুর দর্পণ, তোফাজ্জল হোসেন, নিয়ামতপুর (নওগাঁ), ১৭ নভেম্বর :
প্রাথমিক সমাপনী পরীায় পরীার্থীর পে পাশে বসে উত্তর পত্রে উত্তর লিখে দিয়ে সেই খাতা জমা দিল একই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর এক শিার্থী। প্রতিবন্ধী পরীার্থীকে সহযোগিতা করার এমন সাহসী ঘটনা দেখা গেছেছ রবিবার নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার নিয়ামতপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিয়ামতপুর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি বিষয়ের পরীায়।
পরীার হলের একটি কে বসে প্রশ্নের উত্তর জোরে জোরে বলছে বালিচাঁদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক সমাপনী পরীার্থী রিয়াদ (আইডি নং-১১২০১৯১১১০৪০১১৬৬)। তার পাশেই বসে আছে তারই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিার্থী সুরাইয়া খাতুন।
সুমাইয়া রিয়াদের মুখে বলা উত্তর শুনে তা উত্তর পত্রে লিখে দিচ্ছে। নির্ধারিত সময় শেষে সেই উত্তর পত্র ক পরিদর্শককে জমা দিল রিয়াদ। দুজনেই হাসি হাসি মুখে বেরিয়ে এল পরীা হল থেকে। জানতে চাইলে জানালো পরীা ভালো হয়েছে। শিা অর্জনের অদম্য ইচ্ছা ও তাকে সহযোগীতা করার এমন সৌহার্দপূর্ণ ঘটনা পরীা কেন্দ্রে বেশ সাড়া ফেলেছে। রিয়াদ বালিচাঁদ গ্রামের আমিনুর রহমানের ছেলে।
২০১৮ সালে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়তো রিয়াদ। একদিন সহপাঠীদের সাথে গ্রামের মসজিদের ছাদে উঠে। ছাদে উঠার পর অসতর্ক অবস্থায় পাশ দিয়ে টাঙ্গানো পল্লী বিদ্যুতের তারে আটকা পড়ে রিয়াদ। এমন ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও হাসপাতালে দুটি হাত কাটতে হয় রিয়াদের। পরবর্তীতে বার্ষিক পরীায় তার মুখস্ত পড়া শুনে তা লিখে দেয় অন্য শিার্থী। কৃতির্তের সাথে পঞ্চম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয় সে।
বালিচাঁদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক মিজানুর রহমান জানান, রিয়াদ মেধাবী শিার্থী। তার আকস্মিক দূর্ঘটনায় দুটো হাত হারায় সে। কিন্তু লেখা-পড়া ছেড়ে দেয়নি রিয়াদ। বাবা-মা ও তার ইচ্ছা শক্তিতেই পড়ালেখা চালিয়ে যায় সে। পরীার পূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করে অন্যের সহযোগীতায় নিয়ে পরীায় অংশ নেবার অনুমতি নিয়ে পরীায় অংশ নিচ্ছে সে। সুযোগ পেলে রিয়াদ অনেক দুর এগিয়ে যেতে পারবে। #