নওগাঁ ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

মহাদেবপুরে টর্চার রুহুলের নির্যাতনের আরও কাহিনী : মোটরসাইকেল হাতিয়ে নিয়ে মাদক কারবার (ভিডিও)<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৫ আগস্ট ২০২১ : মহাদেবপুরের টর্চার রুহুল (বামে) ও নির্যাতিত হাসিবুল-------------ছবি : সাঈদ টিটো

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৫ আগস্ট ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরের আলোচিত যুবদল নেতা টর্চার রুহুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও তার দুই স্ত্রী গ্রেফতারের পর তার নানান কুকীর্তি, সন্ত্রাস, অসামাজিক কাজ, মাদক কারবার, তার সন্ত্রাসী হয়ে ওঠার কাহিনী প্রভৃতি ফাঁস হচ্ছে। তার নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা প্রতিকারের আশায় সাংবাদিকদের ঘটনাগুলো অবহিত করছেন। রুহুলের টর্চারের ভয়ে এতদিন যারা মুখ খুলতে সাহস পাননি, এখন তারা সেসব অন্যায়ের বিচার দাবি করছেন।

তারা জানান, রুহুলের বয়লারে প্রায়ই মাদক ও গ্রুপসেক্সের আসর বসতো। ওই আসরে নামী দামী অনেকেই যোগ দিতেন। সেখানে অনেককেই জিম্মি করে তার সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়া হতো। প্রতিবাদ করলেই তাকে যেতে হতো টর্চার সেলে।

রুহুলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সব কিছুই থানা পুলিশের জানা ছিল বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানায়। কিন্তু এতদিন পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি মিঠুন-শ্যামলী দম্পতিকে টর্চার সেল থেকে উদ্ধার করার পরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। ঘটনার এক সপ্তাহ পর রুহুলের টর্চার সেলের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়।

উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের পদ্মপুকুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন সরদারের ছেলে হাসিবুল ইসলাম (৪৮) অভিযোগ করেন যে, তিনি গতবছর ৭ নভেম্বর রুহুলের টর্চারের শিকার হন। বন্ধুত্বের জের ধরে সেবছর ৪ নভেম্বর সকালে তিনি তার ব্যবহৃত বাজাজ ডিসকোভার-১১০ সিসি মোটরসাইকেল রুহুলের বয়লারের গ্যারেজে রেখে রুহুলের সাথে তার কারযোগে নওগাঁয় দাঁতের ডাক্তারের কাছে যান। ফিরে এসে দেখেন গ্যারেজে অন্য কয়েকটি মোটরসাইকেল থোকলেও হাসিবুলেরটি উধাও হয়েছে। তার গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে মামলা দায়ের করলে তার সম্মানহানি হবে এই অযুহাতে রুহুল মামলা দায়ের করা থেকে হাসিবুলকে বিরত রাখে। তাকে অনুরুপ একটি মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। দুদিন পর ভোর ৪টায় তার মোটরসাইকেলের খোঁজ পাওয়া গেছে জানিয়ে রুহুল হাসিবুলকে তার বয়লারে ডেকে নিয়ে মোটরসাইকেলের খোঁজ দেয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দাবি করে। হাসিবুল ৭ নভেম্বর সকালে টাকাসহ রুহুলের কাছে গিয়ে মোটরসাইকেল ফেরৎ চাইলে তাকে আটক করে বয়লারের পাশের গোডাউনে টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে রুহুল নিজে, নজিপুরের তরিকুল ও নাটশালের শাকিল হাসিবুলকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা হুমকি দিয়ে বিদায় করা হয়। তাদের প্রহারে হাসিবুলের দুই হাত ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘদিন নওগাঁ, রাজশাহী ও গ্রাম্য কবিরাজের কাছে ঝাপ বেঁধে তিনি চিকিৎসা করান। গত ১০ মাস ধরে তিনি বিভিন্ন স্থানে তার মোটরসাইকেলের খোঁজ করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন যে, তার মোটরসাইকেলটি রুহুলের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা ব্যবহার করছে। গত ২৬ জুলাই সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন তার মোটরসাইকেলযোগে ভারত সীমান্ত থেকে মাদক পাচারের সময় জেলার ধামইরহাট থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। তার মোটরসাইকেলের স্টিকারে ১১০ সিসির লেখা উঠিয়ে ১২৫ সিসি লেখা হয়েছে। আটক মোসলেম এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ৬টি মাদক মামলা রয়েছে বলে থানা পুলিশ জানায়। নির্যাতিত হাসিবুল এব্যাপারে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে মহাদেবপুর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।

জানতে চাইলে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, ধামইরহাট থানার ওসির সাথে কথা বলে অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে রুহুলের দুই স্ত্রী বৃষ্টি ও মুক্তাকে নওগাঁ কোর্টে চালান দেয়া হলে বিচারক তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলা দায়েরের তিন দিনেও পুলিশ অভিযুক্ত রুহুকে আটক করতে পারেনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীনুল ইসলাম জানান, রুহুলকে আটকের ব্যাপারে পুলিশ ব্যপক তৎপর রয়েছে। তার বয়লারে মাদকের আসরে অংশ নেয়া রাঘব বোয়ালদের নামও তাদের কাছে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। #

আপলোডকারীর তথ্য

মহাদেবপুরে টর্চার রুহুলের নির্যাতনের আরও কাহিনী : মোটরসাইকেল হাতিয়ে নিয়ে মাদক কারবার (ভিডিও)<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০২:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৫ আগস্ট ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরের আলোচিত যুবদল নেতা টর্চার রুহুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও তার দুই স্ত্রী গ্রেফতারের পর তার নানান কুকীর্তি, সন্ত্রাস, অসামাজিক কাজ, মাদক কারবার, তার সন্ত্রাসী হয়ে ওঠার কাহিনী প্রভৃতি ফাঁস হচ্ছে। তার নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা প্রতিকারের আশায় সাংবাদিকদের ঘটনাগুলো অবহিত করছেন। রুহুলের টর্চারের ভয়ে এতদিন যারা মুখ খুলতে সাহস পাননি, এখন তারা সেসব অন্যায়ের বিচার দাবি করছেন।

তারা জানান, রুহুলের বয়লারে প্রায়ই মাদক ও গ্রুপসেক্সের আসর বসতো। ওই আসরে নামী দামী অনেকেই যোগ দিতেন। সেখানে অনেককেই জিম্মি করে তার সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়া হতো। প্রতিবাদ করলেই তাকে যেতে হতো টর্চার সেলে।

রুহুলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সব কিছুই থানা পুলিশের জানা ছিল বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানায়। কিন্তু এতদিন পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি মিঠুন-শ্যামলী দম্পতিকে টর্চার সেল থেকে উদ্ধার করার পরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। ঘটনার এক সপ্তাহ পর রুহুলের টর্চার সেলের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়।

উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের পদ্মপুকুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন সরদারের ছেলে হাসিবুল ইসলাম (৪৮) অভিযোগ করেন যে, তিনি গতবছর ৭ নভেম্বর রুহুলের টর্চারের শিকার হন। বন্ধুত্বের জের ধরে সেবছর ৪ নভেম্বর সকালে তিনি তার ব্যবহৃত বাজাজ ডিসকোভার-১১০ সিসি মোটরসাইকেল রুহুলের বয়লারের গ্যারেজে রেখে রুহুলের সাথে তার কারযোগে নওগাঁয় দাঁতের ডাক্তারের কাছে যান। ফিরে এসে দেখেন গ্যারেজে অন্য কয়েকটি মোটরসাইকেল থোকলেও হাসিবুলেরটি উধাও হয়েছে। তার গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে মামলা দায়ের করলে তার সম্মানহানি হবে এই অযুহাতে রুহুল মামলা দায়ের করা থেকে হাসিবুলকে বিরত রাখে। তাকে অনুরুপ একটি মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। দুদিন পর ভোর ৪টায় তার মোটরসাইকেলের খোঁজ পাওয়া গেছে জানিয়ে রুহুল হাসিবুলকে তার বয়লারে ডেকে নিয়ে মোটরসাইকেলের খোঁজ দেয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দাবি করে। হাসিবুল ৭ নভেম্বর সকালে টাকাসহ রুহুলের কাছে গিয়ে মোটরসাইকেল ফেরৎ চাইলে তাকে আটক করে বয়লারের পাশের গোডাউনে টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে রুহুল নিজে, নজিপুরের তরিকুল ও নাটশালের শাকিল হাসিবুলকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা হুমকি দিয়ে বিদায় করা হয়। তাদের প্রহারে হাসিবুলের দুই হাত ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘদিন নওগাঁ, রাজশাহী ও গ্রাম্য কবিরাজের কাছে ঝাপ বেঁধে তিনি চিকিৎসা করান। গত ১০ মাস ধরে তিনি বিভিন্ন স্থানে তার মোটরসাইকেলের খোঁজ করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন যে, তার মোটরসাইকেলটি রুহুলের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা ব্যবহার করছে। গত ২৬ জুলাই সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন তার মোটরসাইকেলযোগে ভারত সীমান্ত থেকে মাদক পাচারের সময় জেলার ধামইরহাট থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। তার মোটরসাইকেলের স্টিকারে ১১০ সিসির লেখা উঠিয়ে ১২৫ সিসি লেখা হয়েছে। আটক মোসলেম এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ৬টি মাদক মামলা রয়েছে বলে থানা পুলিশ জানায়। নির্যাতিত হাসিবুল এব্যাপারে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে মহাদেবপুর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।

জানতে চাইলে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, ধামইরহাট থানার ওসির সাথে কথা বলে অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে রুহুলের দুই স্ত্রী বৃষ্টি ও মুক্তাকে নওগাঁ কোর্টে চালান দেয়া হলে বিচারক তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলা দায়েরের তিন দিনেও পুলিশ অভিযুক্ত রুহুকে আটক করতে পারেনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীনুল ইসলাম জানান, রুহুলকে আটকের ব্যাপারে পুলিশ ব্যপক তৎপর রয়েছে। তার বয়লারে মাদকের আসরে অংশ নেয়া রাঘব বোয়ালদের নামও তাদের কাছে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। #