নওগাঁ ০৪:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

মহাদেবপুর দর্পণে লাইভ প্রচারের পর থানা পুলিশ অবশেষে টর্চার রুহুলের বিরুদ্ধে মামলা নিল : দুই স্ত্রী গ্রেফতার<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৩ আগস্ট ২০২১ : মহাদেবপুরে যুবদল নেতার নির্যাতন ও চুল কর্তনের শিকার পত্নীতলার শ্যামলী রাণী (বাম থেকে), অভিযুক্ত রুহুল আমিন এবং পুলিশের হাতে গ্রেফতার রুহুলের দুই স্ত্রী রুবাইয়া আকতার বৃষ্টি ও মুক্তা পারভীন-----------সাঈদ টিটো

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৩ আগস্ট ২০২১ :

মহাদেবপুর দর্পণে লাইভ প্রচারের পর অবশেষে নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ ঘটনার ৮ দিন পর আলোচিত টর্চার রুহুলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে লাইভ প্রচারের পরই প্রশাসনের টনক নড়ে। পুলিশ পত্নীতলা থেকে নির্যাতিত শ্যামলী রাণীকে ডেকে এনে রাত সাড়ে ১২টায় মামলা এন্ট্রি করে।

মামলা দায়েরের পর রাতেই থানা পুলিশ রুহুলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তার দুই স্ত্রী রুবাইয়া আকতার বৃষ্টি (২২) ও মুক্তা পারভীনকে (২১) আটক করে। কিন্তু মূল আসামী রুহুল পালিয়ে যায়। পুলিশ তার ব্যবহৃত কার (ঢাকা-৭৫৫/৯) জব্দ করেছে ও ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষর নেয়া ফাঁকা ষ্ট্যাম্প উদ্ধার করেছে। মামলার অন্য আসামী হলো রুহুলের সহযোগী পত্নীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম (৪০)। রুহুল মহাদেবপুর উপজেলার দক্ষিণ হোসেনপুর বোয়ালমারী মোড়ের চাতাল ব্যবসায়ী আবুল কালামের ছেলে ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

পত্নীতলা উপজেলার উত্তর মামুদপুর গ্রামের কৃষ্ণ চৌধুরীর ছেলে নার্সারী ব্যবসায়ী মিঠুন চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী রাণী জানান, অভিযুক্ত রুহুল আমিন তাদের নার্সারী থেকে বিভিন্ন জাতের চারাগাছ কিনতেন। গত ১৫ আগস্ট সকালে রুহুল তার কাজ করার জন্য মিঠুনকে ডেকে নিয়ে জোড়পূর্বক তার কার গাড়িতে উঠিয়ে মহাদেবপুরে নিয়ে আসে। সেখানে তার বয়লারের সামনে অবস্থিত টর্চার সেলে মিঠুনকে আটকে রেখে মোবাইলফোনে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। শ্যামলী রাণী তার শাশুড়ির গলার সোনার মালা বন্ধক রেখে বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু রুহুল ও তার লোকেরা আরও টাকা চায়। টাকা না পেয়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিঠুনের পায়ের রগ কেটে দেয়, প্লায়ার দিয়ে চিমটিয়ে হাতের আঙ্গুল জখম করে, হাতুড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তাকে ঠিকমত খেতেও দেয়া হয়নি। তৃতীয় দিন ১৭ আগস্ট শ্যামলী পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুর থানার সামনে এসে এসআই সাইফুল ইসলামকে বিষয়টি জানিয়ে রুহুলের বয়লারে যান। সেখানে রুহুল ও তার দুই স্ত্রী শ্যামলীকে বেদম প্রহার করে তার মাথার চুল কেটে দেয়। পরে এসআই সাইফুল সেখানে উপস্থিত হয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় শ্যামলী ও তার স্বামীকে রুহুলের টর্চার সেল থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু তিনি রুহুল বা তার দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা নেননি। আহত মিঠুন ও শ্যামলীকে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

বিষয়টি জানার পর দৈনিক ডেল্টা টাইমসের মহাদেবপুর প্রতিনিধি কিউ, এম, সাঈদ টিটো, যায়যায়দিন প্রতিনিধি ইউসুফ আলী সুমন, বাংলাদেশ বুলেটিন প্রতিনিধি কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি বরুণ মজুমদার, সংবাদ প্রতিদিন প্রতিনিধি অসিত দাস ও দৈনিক খবরপত্র প্রতিনিধি সোহেল রানা রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে শ্যামলীর বাড়িতে গিয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেন। তারা মহাদেবপুর দর্পণ নামক ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি লাইভ দেখালে ও রাতে বিভিন্ন অনলাইনে এসংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে পুরো জেলা জুড়ে বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। এরপরই থানা পুলিশ শ্যামলী রাণীকে ডেকে এনে মামলা এন্ট্রি করে।

মহাদেবপুর দর্পণে লাইভ দেখে ওই টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার অনেকেই তাদের ঘটনাও গণমাধ্যমে প্রকাশের অনুরোধ জানান। ভুক্তভোগীরা জানান, অভিযুক্ত রুহুলের বয়লারে প্রায়ই মাদকের ও গ্রুপসেক্সের আসর বসতো। রুহুল তার কার ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে মাদকের চালান পৌঁছে দিত। এসব কাজের বিরোধীতা করলে তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হতো।

এদিকে মহাদেবপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে রুহুলকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পুলিশ এব্যাপারে কোনই পদক্ষেপ নেয়নি। পুলিশী অভিযানের কিছুক্ষণ আগেই রুহুল কার যোগে পালিয়ে যায়। পুলিশ কারটি জব্দ করলেও রুহুলকে আটক করতে সক্ষম হয়নি। সোমবার (২৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত রুহুলের ব্যবহৃত মোবাইফোন চালু থাকলেও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তাকে আটক করতে পারেনি। এব্যাপারে ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এক্ষেত্রে পুলিশের কোন গাফলতি নেই। রুহুলকে আটকের জোড় তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

লাইভ দেখানের পর আইনগত সহায়তা পাওয়ায় নির্যাতিতা শ্যামলী রাণী মহাদেবপুর দর্পণ ও সাংবাদিকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।#

আপলোডকারীর তথ্য

মহাদেবপুর দর্পণে লাইভ প্রচারের পর থানা পুলিশ অবশেষে টর্চার রুহুলের বিরুদ্ধে মামলা নিল : দুই স্ত্রী গ্রেফতার<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ অগাস্ট ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৩ আগস্ট ২০২১ :

মহাদেবপুর দর্পণে লাইভ প্রচারের পর অবশেষে নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ ঘটনার ৮ দিন পর আলোচিত টর্চার রুহুলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে লাইভ প্রচারের পরই প্রশাসনের টনক নড়ে। পুলিশ পত্নীতলা থেকে নির্যাতিত শ্যামলী রাণীকে ডেকে এনে রাত সাড়ে ১২টায় মামলা এন্ট্রি করে।

মামলা দায়েরের পর রাতেই থানা পুলিশ রুহুলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তার দুই স্ত্রী রুবাইয়া আকতার বৃষ্টি (২২) ও মুক্তা পারভীনকে (২১) আটক করে। কিন্তু মূল আসামী রুহুল পালিয়ে যায়। পুলিশ তার ব্যবহৃত কার (ঢাকা-৭৫৫/৯) জব্দ করেছে ও ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষর নেয়া ফাঁকা ষ্ট্যাম্প উদ্ধার করেছে। মামলার অন্য আসামী হলো রুহুলের সহযোগী পত্নীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম (৪০)। রুহুল মহাদেবপুর উপজেলার দক্ষিণ হোসেনপুর বোয়ালমারী মোড়ের চাতাল ব্যবসায়ী আবুল কালামের ছেলে ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

পত্নীতলা উপজেলার উত্তর মামুদপুর গ্রামের কৃষ্ণ চৌধুরীর ছেলে নার্সারী ব্যবসায়ী মিঠুন চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী রাণী জানান, অভিযুক্ত রুহুল আমিন তাদের নার্সারী থেকে বিভিন্ন জাতের চারাগাছ কিনতেন। গত ১৫ আগস্ট সকালে রুহুল তার কাজ করার জন্য মিঠুনকে ডেকে নিয়ে জোড়পূর্বক তার কার গাড়িতে উঠিয়ে মহাদেবপুরে নিয়ে আসে। সেখানে তার বয়লারের সামনে অবস্থিত টর্চার সেলে মিঠুনকে আটকে রেখে মোবাইলফোনে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। শ্যামলী রাণী তার শাশুড়ির গলার সোনার মালা বন্ধক রেখে বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু রুহুল ও তার লোকেরা আরও টাকা চায়। টাকা না পেয়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিঠুনের পায়ের রগ কেটে দেয়, প্লায়ার দিয়ে চিমটিয়ে হাতের আঙ্গুল জখম করে, হাতুড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তাকে ঠিকমত খেতেও দেয়া হয়নি। তৃতীয় দিন ১৭ আগস্ট শ্যামলী পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুর থানার সামনে এসে এসআই সাইফুল ইসলামকে বিষয়টি জানিয়ে রুহুলের বয়লারে যান। সেখানে রুহুল ও তার দুই স্ত্রী শ্যামলীকে বেদম প্রহার করে তার মাথার চুল কেটে দেয়। পরে এসআই সাইফুল সেখানে উপস্থিত হয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় শ্যামলী ও তার স্বামীকে রুহুলের টর্চার সেল থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু তিনি রুহুল বা তার দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা নেননি। আহত মিঠুন ও শ্যামলীকে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

বিষয়টি জানার পর দৈনিক ডেল্টা টাইমসের মহাদেবপুর প্রতিনিধি কিউ, এম, সাঈদ টিটো, যায়যায়দিন প্রতিনিধি ইউসুফ আলী সুমন, বাংলাদেশ বুলেটিন প্রতিনিধি কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি বরুণ মজুমদার, সংবাদ প্রতিদিন প্রতিনিধি অসিত দাস ও দৈনিক খবরপত্র প্রতিনিধি সোহেল রানা রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে শ্যামলীর বাড়িতে গিয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেন। তারা মহাদেবপুর দর্পণ নামক ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি লাইভ দেখালে ও রাতে বিভিন্ন অনলাইনে এসংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে পুরো জেলা জুড়ে বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। এরপরই থানা পুলিশ শ্যামলী রাণীকে ডেকে এনে মামলা এন্ট্রি করে।

মহাদেবপুর দর্পণে লাইভ দেখে ওই টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার অনেকেই তাদের ঘটনাও গণমাধ্যমে প্রকাশের অনুরোধ জানান। ভুক্তভোগীরা জানান, অভিযুক্ত রুহুলের বয়লারে প্রায়ই মাদকের ও গ্রুপসেক্সের আসর বসতো। রুহুল তার কার ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে মাদকের চালান পৌঁছে দিত। এসব কাজের বিরোধীতা করলে তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হতো।

এদিকে মহাদেবপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে রুহুলকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পুলিশ এব্যাপারে কোনই পদক্ষেপ নেয়নি। পুলিশী অভিযানের কিছুক্ষণ আগেই রুহুল কার যোগে পালিয়ে যায়। পুলিশ কারটি জব্দ করলেও রুহুলকে আটক করতে সক্ষম হয়নি। সোমবার (২৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত রুহুলের ব্যবহৃত মোবাইফোন চালু থাকলেও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তাকে আটক করতে পারেনি। এব্যাপারে ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এক্ষেত্রে পুলিশের কোন গাফলতি নেই। রুহুলকে আটকের জোড় তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

লাইভ দেখানের পর আইনগত সহায়তা পাওয়ায় নির্যাতিতা শ্যামলী রাণী মহাদেবপুর দর্পণ ও সাংবাদিকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।#