নওগাঁ ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

সাপাহারের আম গেল লন্ডনে<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৮ জুন ২০২১ :

আমের নতুন রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সাপাহারের আম দেশের গন্ডি পেরিয়ে পারি জমিয়েছে সুদুর লন্ডনে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় এক টন আম্রপালি (বাবি-৩) জাতের সুস্বাদু আমের প্রথম চালান নিয়ে একটি বিমান ঢাকার শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সাপাহার উপজেলার ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পাকের্র’ এর মালিক সোহেল রানা তার নিজস্ব বাগান থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিদেশে আমগুলো রফতানি করেন।

তিনি বলেন, ‘বুধবার (১৬ জুন) হারভেস্ট করে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেজিং করা হয় বাগানের আমগুলো। এরপর রাতে পিকআপে ঢাকায় পাঠানো হয় এ আম্রপালি আম। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সারাদিন রফতানির যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে সন্ধ্যায় বিমানে আমের চালান ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছে।’

সাপাহারের আম বিশ্ববাজারে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী।

তিনি আরও বলেন, ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্কের’ বাগানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বারি) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শরফ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে এষড়নধষ এধঢ় (গ্লোবাল গ্যাপ) পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম্রপালি আমচাষ করা হয়। এ বছর ১০টন আম রফতানি করার ইচ্ছা আছে আমার। আগামী সপ্তাহে আরও এক টন বরাদ্দ আসতে পারে। রফতানিকারকের কাছে চার হাজার টাকা মণ দরে আম বিক্রি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলের বেশির ভাগ আমই বেশ সুস্বাদু। আমরা জানতাম না কীভাবে আম বিদেশে রফতানি করার উপযোগী করতে হয়? বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ার মাধ্যমে তা জানতে পেরেছি। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমের জন্য অর্ডার পাচ্ছি। আমার দেখাদেখি অনেকেই আম ব্যবসায় উৎসাহিত হবে বলে আশা করছি। স্থানীয় বাজারে দাম কম পেলেও দেশের বাইরে ভালো দাম পাওয়া যাবে আমের। এতে আমরা লাভবান হবো।’

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের রূপগ্রাম গ্রামের কৃষক আজিজার রহমানের ছেলে সোহেল রানা। তিনি নিম্নমধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের ছেলে। পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। ২০১৫ সালে নিজ গ্রামের খাড়িপাড়া এলাকায় পৈত্রিক ১২বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন সমন্বিত কৃষি খামার। নাম দেন ‘রূপগ্রাম অ্যাগ্রো ফার্ম’। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। মেধা ও পরিশ্রমে তিনি এখন ১৪০বিঘা জমিতে পৃথক দুটি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। তার এ খামার এখন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের অনুপ্রেরণার উৎস।

সাপাহার গোডাউন পাড়ায় তার সে ১৪০বিঘা জমিতে আড়াই বছর বয়সী দেড় হাজার আম্রপালি গাছ রয়েছে। এ বাগান থেকে এ বছর ৪০ টনের মতো আম পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। গাছের বয়স কম হওয়ায় আমগুলো জলদি পাকবে। কারণ গাছের বয়স বেশি হলে আম পাকতে দেরি হয়।

তরুণ উদ্যক্তা সোহেল জানান, বিদেশে আম রফতানির জন্য আমগুলোর বিশেষ পরিচর্যা করা হয়েছে। চাষের সময় সুষম ও জৈব সার, নিয়মিত কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশকের ব্যবহার নিশ্চিত করেছেন, যাতে আমগুলো রোগবালাই মুক্ত থাকে। তবে আম পাড়ার ১৫ দিন আগে গাছে সব ধরনের স্প্রে বন্ধ করতে হয়। এতে কীটনাশকের কেমিক্যাল মানুষের শরীরে আর কোনো ক্ষতি করতে পারে না। সাধারণ চাষিরা কয়েকদিন আগে কীটনাশক স্প্রে করে বাজারে নিয়ে যান আম। কিন্তু বিদেশে যেসব আম রফতানি করা হবে সেগুলো ঢাকায় যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর সব ঠিক থাকলে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় বলে জানান সোহেল।#

আপলোডকারীর তথ্য

সাপাহারের আম গেল লন্ডনে<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০২:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৮ জুন ২০২১ :

আমের নতুন রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সাপাহারের আম দেশের গন্ডি পেরিয়ে পারি জমিয়েছে সুদুর লন্ডনে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় এক টন আম্রপালি (বাবি-৩) জাতের সুস্বাদু আমের প্রথম চালান নিয়ে একটি বিমান ঢাকার শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সাপাহার উপজেলার ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পাকের্র’ এর মালিক সোহেল রানা তার নিজস্ব বাগান থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিদেশে আমগুলো রফতানি করেন।

তিনি বলেন, ‘বুধবার (১৬ জুন) হারভেস্ট করে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেজিং করা হয় বাগানের আমগুলো। এরপর রাতে পিকআপে ঢাকায় পাঠানো হয় এ আম্রপালি আম। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সারাদিন রফতানির যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে সন্ধ্যায় বিমানে আমের চালান ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছে।’

সাপাহারের আম বিশ্ববাজারে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী।

তিনি আরও বলেন, ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্কের’ বাগানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বারি) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শরফ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে এষড়নধষ এধঢ় (গ্লোবাল গ্যাপ) পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম্রপালি আমচাষ করা হয়। এ বছর ১০টন আম রফতানি করার ইচ্ছা আছে আমার। আগামী সপ্তাহে আরও এক টন বরাদ্দ আসতে পারে। রফতানিকারকের কাছে চার হাজার টাকা মণ দরে আম বিক্রি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলের বেশির ভাগ আমই বেশ সুস্বাদু। আমরা জানতাম না কীভাবে আম বিদেশে রফতানি করার উপযোগী করতে হয়? বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ার মাধ্যমে তা জানতে পেরেছি। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমের জন্য অর্ডার পাচ্ছি। আমার দেখাদেখি অনেকেই আম ব্যবসায় উৎসাহিত হবে বলে আশা করছি। স্থানীয় বাজারে দাম কম পেলেও দেশের বাইরে ভালো দাম পাওয়া যাবে আমের। এতে আমরা লাভবান হবো।’

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের রূপগ্রাম গ্রামের কৃষক আজিজার রহমানের ছেলে সোহেল রানা। তিনি নিম্নমধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের ছেলে। পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। ২০১৫ সালে নিজ গ্রামের খাড়িপাড়া এলাকায় পৈত্রিক ১২বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন সমন্বিত কৃষি খামার। নাম দেন ‘রূপগ্রাম অ্যাগ্রো ফার্ম’। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। মেধা ও পরিশ্রমে তিনি এখন ১৪০বিঘা জমিতে পৃথক দুটি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। তার এ খামার এখন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের অনুপ্রেরণার উৎস।

সাপাহার গোডাউন পাড়ায় তার সে ১৪০বিঘা জমিতে আড়াই বছর বয়সী দেড় হাজার আম্রপালি গাছ রয়েছে। এ বাগান থেকে এ বছর ৪০ টনের মতো আম পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। গাছের বয়স কম হওয়ায় আমগুলো জলদি পাকবে। কারণ গাছের বয়স বেশি হলে আম পাকতে দেরি হয়।

তরুণ উদ্যক্তা সোহেল জানান, বিদেশে আম রফতানির জন্য আমগুলোর বিশেষ পরিচর্যা করা হয়েছে। চাষের সময় সুষম ও জৈব সার, নিয়মিত কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশকের ব্যবহার নিশ্চিত করেছেন, যাতে আমগুলো রোগবালাই মুক্ত থাকে। তবে আম পাড়ার ১৫ দিন আগে গাছে সব ধরনের স্প্রে বন্ধ করতে হয়। এতে কীটনাশকের কেমিক্যাল মানুষের শরীরে আর কোনো ক্ষতি করতে পারে না। সাধারণ চাষিরা কয়েকদিন আগে কীটনাশক স্প্রে করে বাজারে নিয়ে যান আম। কিন্তু বিদেশে যেসব আম রফতানি করা হবে সেগুলো ঢাকায় যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর সব ঠিক থাকলে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় বলে জানান সোহেল।#