নওগাঁ ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

আম ব্যবসায় চাঙ্গা পোরশার অর্থনীতি<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, এম রইচ উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, পোরশা (নওগাঁ), ১২ জুন ২০২১ :

মহামারি করোনায় জনজীবন কিছুটা স্থবির হলেও নওগাঁর পোরশায় জমে উঠেছে আমের ব্যবসায়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে সরগরম হয়ে উঠেছে আমের আড়তগুলো। এ মৌসুমে পোরশা উপজেলায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন। ফলে চাঙ্গা হচ্ছে পোরশার অর্থনীতি।

এ উপজেলার আড়তগুলো থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রাক আম ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। বাজারগুলোতে আমের চাহিদা থাকায় আম ব্যবসায়ীরা ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। করোনার সময় আমের দাম কিছুটা হলেও ভালো পাওয়ায় আম চাষিরাও খুশি। তবে চলতি মৌসুমে আম ব্যবসার ক্ষেত্রে তারা প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগীতা চান।

আম ব্যবসায়কে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী, বাগান মালিক, গাছ থেকে আম নামানো, ঝুড়িতে আম সাজানোসহ ট্রাকে লোড করার কাজে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গাছ থেকে আম নামানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা আম বাজারজাত করণের জন্য প্যাাকেট করতে ব্যস্ত। একটুও যেন ফুরসত নেই তাদের। আর এই আমের জন্য আগের আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের মত চাঙ্গা হচ্ছে এ উপজেলার অর্থনীতি।

উপজেলার নোচনাহার বাজার, সরাইগাছী মোড়, পোরশা মিনা বাজার আড়তের মোড়, তেঁতুলিয়া বাজার আমের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, আড়তগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত। গোপালভোগ, খিরসাপাত ও ল্যাংড়া জাতের আম বেচাকেনা হচ্ছে। ভাল মানের আম প্রতি মণ গোপালভোগ ও ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা ও ভাল মানের খিরসাপাত (হিমসাগর) বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায়।

নোচনাহার বাজার আম আড়ৎদার একতা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত তাদের আমের ব্যবসায় ভালোই চলছে। এই বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার থেকে প্রতি দিন প্রায় ৪০ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রাকে ১২০ থেকে ৩০০ ক্যারেট আম পাঠানো হচ্ছে। যার পরিমাণ প্রতি ক্যারেটে ২২ কেজি এবং মোট ওজন সাড়ে ৬ হাজার কেজির বেশী। এই হিসেবে একটি ট্রাকে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকার আম যাচ্ছে। তিনি জানান, উপজেলার বেশীর ভাগ জমিতে আম্রপালী জাতের আম চাষ হওয়ায় জুনের শেষের দিকে ওই আম নামানো শুরু হলে বাজারে আমের আমদানি আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় পোরশা উপজেলায়। এ বছর উপজেলায় ১০ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এতে প্রতি হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ মেট্রিক টন। এই হিসেবে উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যদি বাজার প্রতি মণে দুই হাজার টাকা হয়, তাহলে চলতি মৌসুমে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আম কেনাবেচা হবে।

পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মককর্তা কৃষিবিদ মাহফুজ আলম জানান, উপজেলার অধিকাংশ জমিতে একবার ধান উৎপাদন হয়। অনেক সময় খরা ও বন্যায় জমিতে ধান উৎপাদন কম হওয়ায় এখানকার কৃষকেরা ধান চাষ বাদ দিয়ে আম চাষে ঝুঁকছেন। গত তিন বছরে এ উপজেলায় প্রতি বছর ৫৫০ হেক্টর করে জমিতে আম চাষ বেড়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে বাজার দর হিসাবে ধান ও আমের দামের পার্থক্যটা একটু বেশী হওয়ায় অনেকে আম চাষ করছেন। একারণে কৃষি বিভাগ থেকেও আম চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে পোরশা উপজেলাসহ সমগ্র নওগাঁ জেলায় প্রতি বছর যে হারে আম চাষ বাড়ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জকেও ছাড়িয়ে গেছে।#

আপলোডকারীর তথ্য

আম ব্যবসায় চাঙ্গা পোরশার অর্থনীতি<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৩:২৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুন ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, এম রইচ উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, পোরশা (নওগাঁ), ১২ জুন ২০২১ :

মহামারি করোনায় জনজীবন কিছুটা স্থবির হলেও নওগাঁর পোরশায় জমে উঠেছে আমের ব্যবসায়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে সরগরম হয়ে উঠেছে আমের আড়তগুলো। এ মৌসুমে পোরশা উপজেলায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন। ফলে চাঙ্গা হচ্ছে পোরশার অর্থনীতি।

এ উপজেলার আড়তগুলো থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রাক আম ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। বাজারগুলোতে আমের চাহিদা থাকায় আম ব্যবসায়ীরা ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। করোনার সময় আমের দাম কিছুটা হলেও ভালো পাওয়ায় আম চাষিরাও খুশি। তবে চলতি মৌসুমে আম ব্যবসার ক্ষেত্রে তারা প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগীতা চান।

আম ব্যবসায়কে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী, বাগান মালিক, গাছ থেকে আম নামানো, ঝুড়িতে আম সাজানোসহ ট্রাকে লোড করার কাজে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গাছ থেকে আম নামানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা আম বাজারজাত করণের জন্য প্যাাকেট করতে ব্যস্ত। একটুও যেন ফুরসত নেই তাদের। আর এই আমের জন্য আগের আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের মত চাঙ্গা হচ্ছে এ উপজেলার অর্থনীতি।

উপজেলার নোচনাহার বাজার, সরাইগাছী মোড়, পোরশা মিনা বাজার আড়তের মোড়, তেঁতুলিয়া বাজার আমের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, আড়তগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত। গোপালভোগ, খিরসাপাত ও ল্যাংড়া জাতের আম বেচাকেনা হচ্ছে। ভাল মানের আম প্রতি মণ গোপালভোগ ও ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা ও ভাল মানের খিরসাপাত (হিমসাগর) বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায়।

নোচনাহার বাজার আম আড়ৎদার একতা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত তাদের আমের ব্যবসায় ভালোই চলছে। এই বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার থেকে প্রতি দিন প্রায় ৪০ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রাকে ১২০ থেকে ৩০০ ক্যারেট আম পাঠানো হচ্ছে। যার পরিমাণ প্রতি ক্যারেটে ২২ কেজি এবং মোট ওজন সাড়ে ৬ হাজার কেজির বেশী। এই হিসেবে একটি ট্রাকে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকার আম যাচ্ছে। তিনি জানান, উপজেলার বেশীর ভাগ জমিতে আম্রপালী জাতের আম চাষ হওয়ায় জুনের শেষের দিকে ওই আম নামানো শুরু হলে বাজারে আমের আমদানি আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় পোরশা উপজেলায়। এ বছর উপজেলায় ১০ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এতে প্রতি হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ মেট্রিক টন। এই হিসেবে উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যদি বাজার প্রতি মণে দুই হাজার টাকা হয়, তাহলে চলতি মৌসুমে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আম কেনাবেচা হবে।

পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মককর্তা কৃষিবিদ মাহফুজ আলম জানান, উপজেলার অধিকাংশ জমিতে একবার ধান উৎপাদন হয়। অনেক সময় খরা ও বন্যায় জমিতে ধান উৎপাদন কম হওয়ায় এখানকার কৃষকেরা ধান চাষ বাদ দিয়ে আম চাষে ঝুঁকছেন। গত তিন বছরে এ উপজেলায় প্রতি বছর ৫৫০ হেক্টর করে জমিতে আম চাষ বেড়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে বাজার দর হিসাবে ধান ও আমের দামের পার্থক্যটা একটু বেশী হওয়ায় অনেকে আম চাষ করছেন। একারণে কৃষি বিভাগ থেকেও আম চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে পোরশা উপজেলাসহ সমগ্র নওগাঁ জেলায় প্রতি বছর যে হারে আম চাষ বাড়ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জকেও ছাড়িয়ে গেছে।#