নওগাঁ ০৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

আজকের সম্পাদকীয় : মারপিটের অভিযোগ উঠলো কেন ?<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১ মে ২০২১ :

এটা এখন আর ব্রিটিশ বেনিয়া নয়। এটা আমাদের বাংলাদেশ। সোনার বাংলাদেশ। স্বাধীন, স্বার্বভৌম বাংলাদেশ। এমনি এমনিই এটা অর্জিত হয়নি। ৩০ লাখ বীর শহীদ আর দুলাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে কিনতে হয়েছে আমাদের লাল সবুজের পতাকা। আর আপনারা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর নামে ব্যাণিজ্যের আরালে এদেশ জবর দখল করে ১৯০ বছর শাসন করা ব্রিটিশ শাসকের প্রতিনিধি নন। বরং স্বাধীন প্রজাতন্ত্রের সেবক। যেখানকার রাষ্ট্রক্ষমতার মালিক সাধারণ জনতা। তাদের ট্যাক্সের টাকাতেই হয় আপনাদের বেতন।

পৃথিবী এখন আর সেই অন্ধকারে নেই। যুগ এখন ডিজিটালের। গ্রামের মানুষেরাও এখন আর অজো মূর্খ না। হাফ প্যান্ট পড়া লাল বাহিনী অথবা খাঁকি পোশাক দেখলেই মানুষ ডান্ডার ভয়ে পালিয়ে যাবে সে অবস্থা এখন আর নেই। তখনকার বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন শাসকের হুকুমের গোলাম। তাদের কাজ ছিল সাধারণ জনতাকে দাবিয়ে রাখা।

এখন অবশ্য আপনাদের একই সাথে দুটি স্বত্ত্বা। একটি হলো সরকারের হুকুমে যেকোন পরিস্থিতি টেকল দিতে মরিয়া হওয়া। আর একটি সাধারণ জনতার সেবায় আত্ম উৎসর্গ করা। ইদানিং আপনাদেরকে মানবিক বলা হয়। গতবছর শুরু হওয়া করোনা কালীন সেবা দেয়ার ধরণ আপনাদের হাজার বছরের দূর্নামকে সুনামে রুপান্তরিত করেছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও আপনাদের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তিকে মারপিটের অভিযোগ উঠলো কেন এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে সুযোগ পেলেই যে কেউ নিজেকে জজ (বিচারক) মনে করেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ যে কোন অন্যায়ের বিচার চাইতে তাঁদের কাছে যান। বিচারটা করার ক্ষমতা তার থাকলেই তিনি জজ বনে যান না। জজ মানে আইন অনুযায়ী বিচার কাজ সম্পন্ন করা। জজ বলতে আমরা একজন ইউপি চেয়ারম্যানকেও বুঝি। কারণ তাঁর এজলাশ আছে। এমনকি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে একজন মেম্বারও পারেন সে দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু সম্মানের দিক থেকে তার চেয়ে অনেক উপরে থাকা একজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে সে ক্ষমতা দেয়া হয়নি। তাই বলে কি তাঁরা কোন শালিস বিচার করতে পারবেন না। অবশ্যই।

শালিস বিচার হলো বুঝিয়ে শুনিয়ে উভয় পক্ষকে সন্তুষ্টু করে ম্যানেজ করা। যে কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ থাকলে সেটা আর শালিস থাকলো না। আবার বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হলেও গ্রাম আদালতের কোন রায় কার্যকর করতে গেলে উপযুক্ত দেওয়ানী আদালতে জারী মামলা দায়ের করতে হয়। অর্থাৎ সাজা প্রয়োগ করার ক্ষমতা এখনও রয়েছে পূর্ণ ম্যাজিষ্ট্রেসী ক্ষমতাপ্রাপ্ত বিচারকদের হাতে। একজন শালিসদার বা মাতব্বর বা অন্যকেউ উভয়পক্ষকে সন্তুষ্টু করে শালিস না করে নিজেকে জজ মনে করে কোন পক্ষকে সাজা দিতে পারেন না।

আর আপনাদের কথাতো আলাদা। সেই যে ব্রিটিশ বেনিয়ারা শিখিয়েছে আপনারা কাউকে ধরলেই তাকে পেঁদাতে পারেন। এটা যেন এখনও ওপেন সিক্রেট। কিন্তু মানুষ এখন অনেক আইন শিখেছেন। সচেতন হয়েছেন। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছে অনেক সংগঠন। আপনারা যে কোন মামলার বিষয় শুধুমাত্র তদন্ত করে উপযুক্ত আদালতে রিপোর্ট দিতে পারেন। প্রয়োজনে তাকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত আদালতে সোপর্দ করতে পারেন। নিজে জজ সেজে কাউকে সাজা দিতে পারেন না। কারও গায়ে লাঠি তো দূরের কথা হাতও তুলতে পারেন না।

কোন্ পরিবারে বিরোধ নেই ? আপনার নিজের পরিবারেও থাকতে পারে। এটা কোন অবান্তর বিষয় নয়। প্রত্যেকটি পারিবারিক বিষয়ের মামলার চূড়ান্ত বিচার শুরুর আগে সমঝোতার মাধ্যমে মিমাংসার উদ্যোগ নেয়ার একটি স্টেজ রয়েছে। প্রত্যেক বিচারক উভয়পক্ষকে বুঝিয়ে মিমাংসার সে উদ্যোগ নেন। ব্যর্থ হলে তবেই বিচার কাজ শুরু হয়। এই পর্যায়ে বিচারক মিমাংসা করার জন্য কোনক্রমেই কোন পক্ষকে চাপ সৃষ্টি করেন না বা মিমাংসা মানতে বাধ্য করার জন্য সাজাও দেন না। কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে সেই অভিযোগটিই উঠেছে। আপনি মিমাংসার জন্য বসে তাকে মিমাংসা মানতে বাধ্য করতে মারপিট করেছেন এমন অভিযোগ করছেন স্বজনরা।

আপনার মারপিটে আহত হয়েই যে তার মৃত্যু হয়েছে এটা প্রমাণ করা কঠিন। আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে নাকি তালাক দেয়া স্ত্রীর দেয়া বিষ পানে তার মৃত্যু হয়েছে এটা ময়না তদন্ত রিপোর্ট আর উপযুক্ত বিচারকই নির্ধারণ করবেন। কিন্তু যে বিষয়টি আমাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো এই ডিজিটাল যুগে আপনাদের বিরুদ্ধে কাউকে মারপিটের অভিযোগ কেন উঠবে ? সাধারণ মানুষের এত বড় সাহস কি করে হলো যে আপনাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করলো ?

আমরা চাই আপনারা জনতার বন্ধু। যে কোন বিপদে মানুষ ছুটে যাবে আপনাদের কাছে। সেখানে গিয়ে নতুন করে কাউকে যেন আরো বিপদে পড়তে না হয়। আপনাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরো উজ্জল হোক। এই আশা করছি।—————কিউ, এম, সাঈদ টিটো ১.৫.২০২১

আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সম্পাদকীয় : মারপিটের অভিযোগ উঠলো কেন ?<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ১১:৫৯:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১ মে ২০২১ :

এটা এখন আর ব্রিটিশ বেনিয়া নয়। এটা আমাদের বাংলাদেশ। সোনার বাংলাদেশ। স্বাধীন, স্বার্বভৌম বাংলাদেশ। এমনি এমনিই এটা অর্জিত হয়নি। ৩০ লাখ বীর শহীদ আর দুলাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে কিনতে হয়েছে আমাদের লাল সবুজের পতাকা। আর আপনারা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর নামে ব্যাণিজ্যের আরালে এদেশ জবর দখল করে ১৯০ বছর শাসন করা ব্রিটিশ শাসকের প্রতিনিধি নন। বরং স্বাধীন প্রজাতন্ত্রের সেবক। যেখানকার রাষ্ট্রক্ষমতার মালিক সাধারণ জনতা। তাদের ট্যাক্সের টাকাতেই হয় আপনাদের বেতন।

পৃথিবী এখন আর সেই অন্ধকারে নেই। যুগ এখন ডিজিটালের। গ্রামের মানুষেরাও এখন আর অজো মূর্খ না। হাফ প্যান্ট পড়া লাল বাহিনী অথবা খাঁকি পোশাক দেখলেই মানুষ ডান্ডার ভয়ে পালিয়ে যাবে সে অবস্থা এখন আর নেই। তখনকার বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন শাসকের হুকুমের গোলাম। তাদের কাজ ছিল সাধারণ জনতাকে দাবিয়ে রাখা।

এখন অবশ্য আপনাদের একই সাথে দুটি স্বত্ত্বা। একটি হলো সরকারের হুকুমে যেকোন পরিস্থিতি টেকল দিতে মরিয়া হওয়া। আর একটি সাধারণ জনতার সেবায় আত্ম উৎসর্গ করা। ইদানিং আপনাদেরকে মানবিক বলা হয়। গতবছর শুরু হওয়া করোনা কালীন সেবা দেয়ার ধরণ আপনাদের হাজার বছরের দূর্নামকে সুনামে রুপান্তরিত করেছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও আপনাদের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তিকে মারপিটের অভিযোগ উঠলো কেন এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে সুযোগ পেলেই যে কেউ নিজেকে জজ (বিচারক) মনে করেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ যে কোন অন্যায়ের বিচার চাইতে তাঁদের কাছে যান। বিচারটা করার ক্ষমতা তার থাকলেই তিনি জজ বনে যান না। জজ মানে আইন অনুযায়ী বিচার কাজ সম্পন্ন করা। জজ বলতে আমরা একজন ইউপি চেয়ারম্যানকেও বুঝি। কারণ তাঁর এজলাশ আছে। এমনকি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে একজন মেম্বারও পারেন সে দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু সম্মানের দিক থেকে তার চেয়ে অনেক উপরে থাকা একজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে সে ক্ষমতা দেয়া হয়নি। তাই বলে কি তাঁরা কোন শালিস বিচার করতে পারবেন না। অবশ্যই।

শালিস বিচার হলো বুঝিয়ে শুনিয়ে উভয় পক্ষকে সন্তুষ্টু করে ম্যানেজ করা। যে কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ থাকলে সেটা আর শালিস থাকলো না। আবার বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হলেও গ্রাম আদালতের কোন রায় কার্যকর করতে গেলে উপযুক্ত দেওয়ানী আদালতে জারী মামলা দায়ের করতে হয়। অর্থাৎ সাজা প্রয়োগ করার ক্ষমতা এখনও রয়েছে পূর্ণ ম্যাজিষ্ট্রেসী ক্ষমতাপ্রাপ্ত বিচারকদের হাতে। একজন শালিসদার বা মাতব্বর বা অন্যকেউ উভয়পক্ষকে সন্তুষ্টু করে শালিস না করে নিজেকে জজ মনে করে কোন পক্ষকে সাজা দিতে পারেন না।

আর আপনাদের কথাতো আলাদা। সেই যে ব্রিটিশ বেনিয়ারা শিখিয়েছে আপনারা কাউকে ধরলেই তাকে পেঁদাতে পারেন। এটা যেন এখনও ওপেন সিক্রেট। কিন্তু মানুষ এখন অনেক আইন শিখেছেন। সচেতন হয়েছেন। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছে অনেক সংগঠন। আপনারা যে কোন মামলার বিষয় শুধুমাত্র তদন্ত করে উপযুক্ত আদালতে রিপোর্ট দিতে পারেন। প্রয়োজনে তাকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত আদালতে সোপর্দ করতে পারেন। নিজে জজ সেজে কাউকে সাজা দিতে পারেন না। কারও গায়ে লাঠি তো দূরের কথা হাতও তুলতে পারেন না।

কোন্ পরিবারে বিরোধ নেই ? আপনার নিজের পরিবারেও থাকতে পারে। এটা কোন অবান্তর বিষয় নয়। প্রত্যেকটি পারিবারিক বিষয়ের মামলার চূড়ান্ত বিচার শুরুর আগে সমঝোতার মাধ্যমে মিমাংসার উদ্যোগ নেয়ার একটি স্টেজ রয়েছে। প্রত্যেক বিচারক উভয়পক্ষকে বুঝিয়ে মিমাংসার সে উদ্যোগ নেন। ব্যর্থ হলে তবেই বিচার কাজ শুরু হয়। এই পর্যায়ে বিচারক মিমাংসা করার জন্য কোনক্রমেই কোন পক্ষকে চাপ সৃষ্টি করেন না বা মিমাংসা মানতে বাধ্য করার জন্য সাজাও দেন না। কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে সেই অভিযোগটিই উঠেছে। আপনি মিমাংসার জন্য বসে তাকে মিমাংসা মানতে বাধ্য করতে মারপিট করেছেন এমন অভিযোগ করছেন স্বজনরা।

আপনার মারপিটে আহত হয়েই যে তার মৃত্যু হয়েছে এটা প্রমাণ করা কঠিন। আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে নাকি তালাক দেয়া স্ত্রীর দেয়া বিষ পানে তার মৃত্যু হয়েছে এটা ময়না তদন্ত রিপোর্ট আর উপযুক্ত বিচারকই নির্ধারণ করবেন। কিন্তু যে বিষয়টি আমাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো এই ডিজিটাল যুগে আপনাদের বিরুদ্ধে কাউকে মারপিটের অভিযোগ কেন উঠবে ? সাধারণ মানুষের এত বড় সাহস কি করে হলো যে আপনাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করলো ?

আমরা চাই আপনারা জনতার বন্ধু। যে কোন বিপদে মানুষ ছুটে যাবে আপনাদের কাছে। সেখানে গিয়ে নতুন করে কাউকে যেন আরো বিপদে পড়তে না হয়। আপনাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরো উজ্জল হোক। এই আশা করছি।—————কিউ, এম, সাঈদ টিটো ১.৫.২০২১