নওগাঁ ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

আজকের সম্পাদকীয় : কমিউনিটি পর্যায়ে তদারকি নেই

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ : গত ১৬ জুন দিবাগত রাতে নওগাঁর পোরশায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেড় বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির পরিবারের কেউ ঢাকা, গাজীপুর বা অন্য কোথাও যাননি। মনে করা হচ্ছে যে, শিশুটি কমিউনিটি ট্রান্সপারেন্সির মাধ্যমেই আক্রান্ত হয়। এর আগে মহাদেবপুরের ভীমপুরেও এভাবে আক্রান্ত হয়েছিল।

এরই মধ্যে ১৯ জুন শুক্রবার জেলায় আবার একদিনে ১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত ১০৪ দিনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৯ জন। এদের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ১৬১ জন, আর মারা গেছেন ৪ জন। শুক্রবার দুপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মান্দা উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর।

বলা হচ্ছে নওগাঁয় আক্রান্ত বিবেচনায় সুস্থ্য হবার হার বেশী। কিন্তু এই পরিসংখ্যান কি প্রমাণ করে যে, আমাদের অবস্থা উন্নতির দিকে?
গত ১৫ জুন মহাদেবপুর দর্পণের সম্পাদকীয়তে আমরা বলেছিলাম, এতটা মানবিক হবেন না। অন্তত: সব নাগরিককে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করানোর ব্যবস্থা নিন। ১৬ জুন নওগাঁ জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় সকলকে মাস্ক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেউ মাস্ক ব্যবহার না করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এধরনের একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা নওগাঁ জেলা প্রশাসনকে অকৃত্রিম ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এই মিটিংয়ের পরদিন থেকে জেলা সদর ও ১১ উপজেলায় প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাস্ক ব্যবহার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়, বিভিন্নভাবে জনতাকে উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং মাস্ক ব্যবহার না করলে জরিমানা করা হয়। কিন্তু কমিউনিটি পর্যায়ে এর কোন প্রভাব পড়েনি। এখনও গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় মানুষ দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছেন আগের মতই। যেন করোনা নামের কিছুই নেই। ভাবখানা যেন, যখন উপজেলা সদরে যাবেন মাস্ক দরকার হবে শুধু তখনই।

আসলে মানুষ বাধ্য না হলে, কমেন্ট পছন্দ করেননা কেউই। কোন মানুষই জোড় করে চাপিয়ে দেয়া কিছু সহজে মেনে নিতে চান না। জেল জরিমানার ভয় দেখিয়ে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করা এক দূরুহ কাজ। এখন আমাদের এই পরিস্থিতি চাই যখন মানুষ নিজে থেকেই মাস্ক ব্যবহার করতে চাইবে।

এজন্য পুলিশ, সেনা, ম্যাজিষ্ট্রেট শুরু থেকেই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু কমিউনিটি পর্যায়ে কাজ করার দায়িত্ব যাদের উপর বর্তায় তারা মোটেও একটিভ নন। সরকারের তৃণমূল শক্তি ইউনিয়ন পরিষদ। সাধারণ নাগরিকের ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব সরকারের হলে, এর পুরো দায়ই ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের। প্রতিটি ওয়ার্ডের করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ওই ওয়ার্ডের মেম্বার।

কিন্তু তারা এখন ব্যস্ত শুধু রিলিফের তালিকা তৈরীতে। কখনো কখনো ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে করোনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মাইকিং শোনা যায়। কিন্তু চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে তৃণমূলের সাধারণ মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। প্রতিদিনই দেখা হয় সবার সাথে। কুশল বিনিময় হয়। হয় চা খাওয়া। সালিস বিচারও। জনপ্রতিনিধিদেরকে বেশীরভাগ মানুষই সমীহ করেন। তাদের কথা শুনলেই পাওয়া যাবে যত সুযোগ সুবিধা। একজন ইউপি চেয়ারম্যান বা মেম্বার যদি তাদের কমিউনিটির কারও সাথে দেখা হলেই মাস্ক ব্যবহারের কথা বলেন, বলতেই থাকেন, তাহলে একদিন কি তারা সে কথা শুনবেন না?

শুধু জনপ্রতিনিধি কেন, অনেকেই ভবিষ্যৎ নেতা হবার জন্য ত্রাণ বিতরণ করছেন, মাস্ক বিতরণ করছেন। কিন্তু দেখা হলেই মাস্ক ব্যবহারের কথা বলছেন কয়জন?

বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের যারা নেতৃস্থানীয় রয়েছেন, সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, এনজিও কর্মী, এমনকি চাকরিজীবীরাও পালন করতে পারেন এ গুরু দায়িত্ব।

সচেতন সকলে যদি আমরা একযোগে এই সিদ্ধান্ত নিই যে, কাউকে মাস্ক ছাড়া বাইরে দেখতে চাইনা। সকলকেই আমরা এমনভাবে সচেতন করতে চাই যেন, নিজের থেকেই মাস্ক ব্যবহার করেন সব্বাই।

এটা করতে গেলে আগে তো নিজেদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ উঁচু স্তরের অনেককেই এখনও দেখা যায় মাস্ক ছাড়া। কারও মুখে থাকলেও তা নীচে নামানো। #
—– কিউ, এম, সাঈদ টিটো, ২০.৬.২০২০

আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সম্পাদকীয় : কমিউনিটি পর্যায়ে তদারকি নেই

প্রকাশের সময় : ০৭:০২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ : গত ১৬ জুন দিবাগত রাতে নওগাঁর পোরশায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেড় বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির পরিবারের কেউ ঢাকা, গাজীপুর বা অন্য কোথাও যাননি। মনে করা হচ্ছে যে, শিশুটি কমিউনিটি ট্রান্সপারেন্সির মাধ্যমেই আক্রান্ত হয়। এর আগে মহাদেবপুরের ভীমপুরেও এভাবে আক্রান্ত হয়েছিল।

এরই মধ্যে ১৯ জুন শুক্রবার জেলায় আবার একদিনে ১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত ১০৪ দিনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৯ জন। এদের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ১৬১ জন, আর মারা গেছেন ৪ জন। শুক্রবার দুপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মান্দা উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর।

বলা হচ্ছে নওগাঁয় আক্রান্ত বিবেচনায় সুস্থ্য হবার হার বেশী। কিন্তু এই পরিসংখ্যান কি প্রমাণ করে যে, আমাদের অবস্থা উন্নতির দিকে?
গত ১৫ জুন মহাদেবপুর দর্পণের সম্পাদকীয়তে আমরা বলেছিলাম, এতটা মানবিক হবেন না। অন্তত: সব নাগরিককে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করানোর ব্যবস্থা নিন। ১৬ জুন নওগাঁ জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় সকলকে মাস্ক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেউ মাস্ক ব্যবহার না করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এধরনের একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা নওগাঁ জেলা প্রশাসনকে অকৃত্রিম ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এই মিটিংয়ের পরদিন থেকে জেলা সদর ও ১১ উপজেলায় প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাস্ক ব্যবহার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়, বিভিন্নভাবে জনতাকে উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং মাস্ক ব্যবহার না করলে জরিমানা করা হয়। কিন্তু কমিউনিটি পর্যায়ে এর কোন প্রভাব পড়েনি। এখনও গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় মানুষ দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছেন আগের মতই। যেন করোনা নামের কিছুই নেই। ভাবখানা যেন, যখন উপজেলা সদরে যাবেন মাস্ক দরকার হবে শুধু তখনই।

আসলে মানুষ বাধ্য না হলে, কমেন্ট পছন্দ করেননা কেউই। কোন মানুষই জোড় করে চাপিয়ে দেয়া কিছু সহজে মেনে নিতে চান না। জেল জরিমানার ভয় দেখিয়ে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করা এক দূরুহ কাজ। এখন আমাদের এই পরিস্থিতি চাই যখন মানুষ নিজে থেকেই মাস্ক ব্যবহার করতে চাইবে।

এজন্য পুলিশ, সেনা, ম্যাজিষ্ট্রেট শুরু থেকেই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু কমিউনিটি পর্যায়ে কাজ করার দায়িত্ব যাদের উপর বর্তায় তারা মোটেও একটিভ নন। সরকারের তৃণমূল শক্তি ইউনিয়ন পরিষদ। সাধারণ নাগরিকের ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব সরকারের হলে, এর পুরো দায়ই ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের। প্রতিটি ওয়ার্ডের করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ওই ওয়ার্ডের মেম্বার।

কিন্তু তারা এখন ব্যস্ত শুধু রিলিফের তালিকা তৈরীতে। কখনো কখনো ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে করোনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মাইকিং শোনা যায়। কিন্তু চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে তৃণমূলের সাধারণ মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। প্রতিদিনই দেখা হয় সবার সাথে। কুশল বিনিময় হয়। হয় চা খাওয়া। সালিস বিচারও। জনপ্রতিনিধিদেরকে বেশীরভাগ মানুষই সমীহ করেন। তাদের কথা শুনলেই পাওয়া যাবে যত সুযোগ সুবিধা। একজন ইউপি চেয়ারম্যান বা মেম্বার যদি তাদের কমিউনিটির কারও সাথে দেখা হলেই মাস্ক ব্যবহারের কথা বলেন, বলতেই থাকেন, তাহলে একদিন কি তারা সে কথা শুনবেন না?

শুধু জনপ্রতিনিধি কেন, অনেকেই ভবিষ্যৎ নেতা হবার জন্য ত্রাণ বিতরণ করছেন, মাস্ক বিতরণ করছেন। কিন্তু দেখা হলেই মাস্ক ব্যবহারের কথা বলছেন কয়জন?

বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের যারা নেতৃস্থানীয় রয়েছেন, সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, এনজিও কর্মী, এমনকি চাকরিজীবীরাও পালন করতে পারেন এ গুরু দায়িত্ব।

সচেতন সকলে যদি আমরা একযোগে এই সিদ্ধান্ত নিই যে, কাউকে মাস্ক ছাড়া বাইরে দেখতে চাইনা। সকলকেই আমরা এমনভাবে সচেতন করতে চাই যেন, নিজের থেকেই মাস্ক ব্যবহার করেন সব্বাই।

এটা করতে গেলে আগে তো নিজেদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ উঁচু স্তরের অনেককেই এখনও দেখা যায় মাস্ক ছাড়া। কারও মুখে থাকলেও তা নীচে নামানো। #
—– কিউ, এম, সাঈদ টিটো, ২০.৬.২০২০