নওগাঁ ১১:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

দূর্নীতি : নিয়ামতপুর পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ :

সরকারি চাকরিজীবী আফজাল হোসেন দীর্ঘ ২৫ বছরের চাকরি জীবনে জমানো প্রভিডেন্ট ফান্ডের ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে তার অ্যাকাউন্ট শূন্য পেয়েছেন। তিনি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (স্যাকমো) পদে চাকরি করতেন।

এ ঘটনায় আফজাল হোসেন তহবিল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা সেলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে গত ২৩ জানুয়ারি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনা তদন্তে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ করা হয়েছে যে, আফজাল হোসেন গত বছরের ১৫ অক্টোবর সাধারণ ভবিষ্য তহবিল (জিপিএফ) থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য নিয়ামতপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আফজালের নামে প্রভিডেন্ট ফান্ডের মোট স্থিতির ৮০ শতাংশ টাকা হিসেবে ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে অর্থ ছাড় হওয়ার দীর্ঘদিন পরও আফজাল হোসেনের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নম্বরে ওই টাকা জমা হয়নি। এজন্য গত ২৩ জানুয়ারি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিনের কাছে লিখিত আবেদন করতে গেলে সেটি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো হয়।

সরাসরি আবেদনপত্রটি গ্রহণ না করায় তিনি ডাকযোগে সেলিম উদ্দিন বরাবর আবেদনপত্রটি পাঠান। পরবর্তীতে আফজাল হোসেন বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন তার প্রভিডেন্ট ফান্ডের ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ইতোমধ্যে সেলিম উদ্দিন তার ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমা করে নিয়েছেন। ঘটনায় গত ২৩ জানুয়ারি আফজাল হোসেন তার দাবি করা প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তাকে বুঝিয়ে দেয়াসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৬ জানুয়ারি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক কুস্তরি আমিনা কুইন বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের হিসাব শাখা পরিদর্শন ও সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন।

ভুক্তভোগী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আফজাল হোসেন বলেন, গত ২৫ বছর ধরে চাকরি করছি। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রভিডেন্ট ফান্ডে ওই টাকা জমা করেছি। জরুরি প্রয়োজনে প্রভিডেন্ট থেকে জমা করা টাকা উত্তোলনের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখন দেখছি আমার জমা করা পুরো টাকা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন আত্মসাৎ করেছেন।

তিনি বলেন, আতাউল গণির সঙ্গে মুঠোফোনে আমার কথা হয়েছে। তার সহযোগিতায় সেলিম উদ্দিন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পার করে নিয়েছেন এবং ওই টাকা পরবর্তীতে উত্তোলন করেছেন। এখন নিজে বাঁচার জন্য সেলিম উদ্দিন অফিস সহকারী আতাউল গণির ওপর দায় চাপাচ্ছেন।

এ বিষয়ে অফিস সহকারী আতাউল গণির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

অভিযুক্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। অফিস সহকারী আতাউল গণি উপ-সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আফজাল হোসেনের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এছাড়া গত কয়েকদিন থেকে আতাউল গণির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য গত ২০ জানুয়ারি নিয়ামতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

নওগাঁ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কুস্তরি আমিনা কুইন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কামরুল আহসানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সেলিম উদ্দিন নিয়ামতপুর উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১২ জুন ২০১২ সালে যোগদান করেন। একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন থাকায় তিনি অফিসে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। অফিসে স্বচ্ছতার কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত অন্যত্র পদায়ন করা হোক এমন দাবি সচেতনদের। #

আপলোডকারীর তথ্য

দূর্নীতি : নিয়ামতপুর পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৯:১০:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২০
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ :

সরকারি চাকরিজীবী আফজাল হোসেন দীর্ঘ ২৫ বছরের চাকরি জীবনে জমানো প্রভিডেন্ট ফান্ডের ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে তার অ্যাকাউন্ট শূন্য পেয়েছেন। তিনি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (স্যাকমো) পদে চাকরি করতেন।

এ ঘটনায় আফজাল হোসেন তহবিল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা সেলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে গত ২৩ জানুয়ারি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনা তদন্তে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ করা হয়েছে যে, আফজাল হোসেন গত বছরের ১৫ অক্টোবর সাধারণ ভবিষ্য তহবিল (জিপিএফ) থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য নিয়ামতপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আফজালের নামে প্রভিডেন্ট ফান্ডের মোট স্থিতির ৮০ শতাংশ টাকা হিসেবে ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে অর্থ ছাড় হওয়ার দীর্ঘদিন পরও আফজাল হোসেনের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নম্বরে ওই টাকা জমা হয়নি। এজন্য গত ২৩ জানুয়ারি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিনের কাছে লিখিত আবেদন করতে গেলে সেটি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো হয়।

সরাসরি আবেদনপত্রটি গ্রহণ না করায় তিনি ডাকযোগে সেলিম উদ্দিন বরাবর আবেদনপত্রটি পাঠান। পরবর্তীতে আফজাল হোসেন বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন তার প্রভিডেন্ট ফান্ডের ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ইতোমধ্যে সেলিম উদ্দিন তার ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমা করে নিয়েছেন। ঘটনায় গত ২৩ জানুয়ারি আফজাল হোসেন তার দাবি করা প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তাকে বুঝিয়ে দেয়াসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৬ জানুয়ারি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক কুস্তরি আমিনা কুইন বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের হিসাব শাখা পরিদর্শন ও সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন।

ভুক্তভোগী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আফজাল হোসেন বলেন, গত ২৫ বছর ধরে চাকরি করছি। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রভিডেন্ট ফান্ডে ওই টাকা জমা করেছি। জরুরি প্রয়োজনে প্রভিডেন্ট থেকে জমা করা টাকা উত্তোলনের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখন দেখছি আমার জমা করা পুরো টাকা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন আত্মসাৎ করেছেন।

তিনি বলেন, আতাউল গণির সঙ্গে মুঠোফোনে আমার কথা হয়েছে। তার সহযোগিতায় সেলিম উদ্দিন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পার করে নিয়েছেন এবং ওই টাকা পরবর্তীতে উত্তোলন করেছেন। এখন নিজে বাঁচার জন্য সেলিম উদ্দিন অফিস সহকারী আতাউল গণির ওপর দায় চাপাচ্ছেন।

এ বিষয়ে অফিস সহকারী আতাউল গণির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

অভিযুক্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। অফিস সহকারী আতাউল গণি উপ-সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আফজাল হোসেনের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এছাড়া গত কয়েকদিন থেকে আতাউল গণির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য গত ২০ জানুয়ারি নিয়ামতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

নওগাঁ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কুস্তরি আমিনা কুইন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কামরুল আহসানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সেলিম উদ্দিন নিয়ামতপুর উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১২ জুন ২০১২ সালে যোগদান করেন। একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন থাকায় তিনি অফিসে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। অফিসে স্বচ্ছতার কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত অন্যত্র পদায়ন করা হোক এমন দাবি সচেতনদের। #