মহাদেবপুর দর্পণ, এম,এ,মালেক, ধামইরহাট (নওগাঁ), ২২ জানুয়ারী ২০২০ :
আগাম আলু নওগাঁর ধামইরহাটের চাষীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এমনিতেই সারাবছর এবার আলুর দাম ছিল বেশী। তার উপর যারা আগাম আলুর চাষ করেছেন, তারা ফলনও পেয়েছেন ভাল।
চাষীরা আমন ধান কাটার পর ওই জমিতেই আলু চাষ করে অতিরিক্ত অর্থ আয় করছেন। এতে আমন ধান চাষে ঘাটতি অর্থ পুষিয়ে নেয়ার পাশাপাশি একই জমিতে তিন ফলস উৎপাদন করছেন তারা।
নওগাঁর আদি রবেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিতি ধামইরহাট উপজেলা। এখানে মূলত ধান চাষ হয়। কিছু এলাকায় শাক সবজিরও চাষ হয়ে থাকে। গত ইরি বোরো এবং চলতি আমন মওসুমে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। অনেক কৃষক ধান চাষ ছেড়ে দেওয়ার সিন্ধান্তও নেয়। কিন্তু কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরণায় অনেক কৃষক এবার জমিতে আলু চাষ করেন। বর্তমানে আলু ক্ষেত থেকে ওঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকার পাইকাড়রা জমিতে গিয়ে গাছসহ আলু ক্রয় করে পাইকাড়দের শ্রমিক দিয়ে আলু উত্তোলন করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার এ উপজেলায় ২ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। ২৩৫ হেক্টর পাকড়ী সাদা, লাল জাত এবং ৩৪৫ হেক্টর এস টেরিক্স (স্থানীয় ভাষায় স্টিট), ৪৮০ হেক্টর রোমানা, ২৭৫ হেক্টর কাটিনাল, ২৪৫ হেক্টর গ্যানোলা, ২০৫ হেক্টর ক্যারেজ এবং ১৭৫ হেক্টর জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় জাতের আলুর চাষ হয়েছে। পরিপক্ক হওয়ায় মাঠ থেকে আলু ওঠাতে শুরু করেছেন কৃষকরা।
উপজেলার ধানতাড়া গ্রামের কৃষক মো: মাজেদুর রহমান বলেন, ইরি বোরো ধান কাটার পর তিনি ১ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। মাত্র ৬৫ দিনের মধ্যে আলু পরিপক্ক হয়েছে। পাইকাড়রা তার এক একর জমির আলু ক্ষেত থেকে ৭৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন। আলু চাষে তার মোট খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। স্বল্প সময়ে তিনি ৪০ হাজার টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে ওই জমিতে তিনি ইরি বোরো ধান রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: সেলিম রেজা বলেন, বিগত ইরি বোরো ও আমন মওসুমে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকদেরকে আলুসহ অন্যান্য শাক সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। বাজারে আলুর দাম ভালো পেয়ে কৃষকরা বেশ উপকৃত হয়েছেন। বর্তমানে এলাকার কৃষকরা একই জমিতে বছরে তিন ফসল উৎপাদন করছেন। #