নওগাঁ ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নিয়ামতপুরে অনুমতি ছাড়াই চলছে কৃষি জমিতে ইটভাটা : দেখার কেউ নেই

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ ২২ জানুয়ারী ২০২০ :

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে ইট পোড়াতে কাঠ-খড়ি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও কৃষি জমির উপর স্থাপিত এ সব ভাটা মালিক নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে পরিবেশ ও ক্ষতি করছে কৃষি জমির। ভাটার ক্ষতিকারক প্রভাবে চলতি বোরো মওসুমের শুরুতে ভটার পার্শ্ববর্তী জমির ফসল রক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষীরা।

প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইটভাটায় গাছের গুঁড়ি পোড়ানোয় বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে স্থানীয় জীববৈচিত্র ও পরিবেশ। হুমকির মুখে পড়েছে ভাটা সংলগ্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও গ্রামীণ জনপদের জনস্বাস্থ্য।

অবৈধ ইটভাটার সৃষ্ট দূষণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বয়স্ক ও শিশুরাও। প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না থাকায় বেপরোয়া মালিকপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ এসব ইটভাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নেই কার্যকর কোন ভূমিকা।

উপজেলা সদর নিয়ামতপুরের অদুরেই গাবতলী গ্রাম ঘেঁষে কৃষি জমিতে একের পর এক গড়ে উঠছে ইটের ভাটা। এতে পরিবেশ ও ফসল উৎপাদন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এইসব ইট ভাটার মূল ক্লেন এর পাশেই বিপুল পরিমাণ কাঠ-খড়ি স্তূপ করে রাখা হয়েছে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানোর জন্য। ইট ভাটার চিমনির ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগ বালাই ছড়াচ্ছে। ধোঁয়া ও ধূলি দূষণে বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, নিয়ামতপুরে রয়েছে ৫ টি ইটভাটা। ভাটাগুলো একেবারেই গ্রামের ভেতর অবস্থিত। এগুলোর একটিরও বৈধ লাইসেন্স বা কাগজপত্র নেই। বিভিন্ন গাছের গুঁড়ি ও লাকড়ি ভাটাগুলোর প্রধান জ্বালানী।

মোসাদ্দেক হোসেন শাহিনের মালিকাধীন মেসার্স এসএসটি ব্রিকস উপজেলার মালঞ্চি মৌজার ভাবিচা ইউনিয়নে। ইটভাটাটি একেবারে নিয়ামতপুর-নওগাঁ প্রধান সড়কের পাশে হওয়ায় বেশীর ভাগ সময় পাকা সড়কের উপর মাটি পড়ে থাকে। একটু বৃষ্টি হলেই এ মাটি গলে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে করে প্রায়শ দুর্ঘটনা ঘটে এখানে।

একই গ্রামে রয়েছে আবুল হোসেন সোনারের মালীকানাধীন এমএবি ইটভাটা ও বাছের আলী খানের মালীকানাধীন এসকেবি ইটভাটা। এ ভাটাগুলোর চারিদিকেই ফসলি জমি। ভাটাগুলো পাশাপাশি স্থাপন করায় এর ক্ষতিকারক প্রভাবে এলাকার কৃষি ফসল ও রবি শস্য চাষ ব্যাহত হচ্ছে এমন অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের।

এলাকাবাসী জানান, ভাটা মালিকরা ক্ষমতাসীন দলের লোক এবং প্রভাবশালী হওয়ায় এই এলাকার তিনটি ইট ভাটায় প্রচুর ট্রাক আসা-যাওয়া করে। এতে করে গ্রামীণ সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে। ইটভাটার ধুলাবালী ও বিসাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ আবাসনের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। গাছপালা বিবর্ণ হচ্ছে। ফসলী জমির উর্বরতা কমে গেছে।

তারা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর সরেজমিনে যাচাই করলে কোন ক্রমেই কৃষি জমিতে এসব ভাটা করার অনুমতি পেতনা। অতি দ্রুত ইটভাটাগুলো অপসারনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

ভাবিচা ইউপি চেয়ারম্যান ওবাইদুল হক বলেন, “গ্রামটিতে তিনটি ইটভাটা থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছেন। গ্রামটির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তার বোধগম্য হচ্ছেনা, কী করে এমন জায়গায় ভাটা করার অনুমতি মিলতে পারে। বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেছেন, কিন্তু কোনো প্রকার প্রতিকার মিলছেনা।” #

আপলোডকারীর তথ্য

নিয়ামতপুরে অনুমতি ছাড়াই চলছে কৃষি জমিতে ইটভাটা : দেখার কেউ নেই

প্রকাশের সময় : ১১:২৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ ২২ জানুয়ারী ২০২০ :

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে ইট পোড়াতে কাঠ-খড়ি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও কৃষি জমির উপর স্থাপিত এ সব ভাটা মালিক নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে পরিবেশ ও ক্ষতি করছে কৃষি জমির। ভাটার ক্ষতিকারক প্রভাবে চলতি বোরো মওসুমের শুরুতে ভটার পার্শ্ববর্তী জমির ফসল রক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষীরা।

প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইটভাটায় গাছের গুঁড়ি পোড়ানোয় বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে স্থানীয় জীববৈচিত্র ও পরিবেশ। হুমকির মুখে পড়েছে ভাটা সংলগ্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও গ্রামীণ জনপদের জনস্বাস্থ্য।

অবৈধ ইটভাটার সৃষ্ট দূষণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বয়স্ক ও শিশুরাও। প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না থাকায় বেপরোয়া মালিকপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ এসব ইটভাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নেই কার্যকর কোন ভূমিকা।

উপজেলা সদর নিয়ামতপুরের অদুরেই গাবতলী গ্রাম ঘেঁষে কৃষি জমিতে একের পর এক গড়ে উঠছে ইটের ভাটা। এতে পরিবেশ ও ফসল উৎপাদন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এইসব ইট ভাটার মূল ক্লেন এর পাশেই বিপুল পরিমাণ কাঠ-খড়ি স্তূপ করে রাখা হয়েছে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানোর জন্য। ইট ভাটার চিমনির ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগ বালাই ছড়াচ্ছে। ধোঁয়া ও ধূলি দূষণে বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, নিয়ামতপুরে রয়েছে ৫ টি ইটভাটা। ভাটাগুলো একেবারেই গ্রামের ভেতর অবস্থিত। এগুলোর একটিরও বৈধ লাইসেন্স বা কাগজপত্র নেই। বিভিন্ন গাছের গুঁড়ি ও লাকড়ি ভাটাগুলোর প্রধান জ্বালানী।

মোসাদ্দেক হোসেন শাহিনের মালিকাধীন মেসার্স এসএসটি ব্রিকস উপজেলার মালঞ্চি মৌজার ভাবিচা ইউনিয়নে। ইটভাটাটি একেবারে নিয়ামতপুর-নওগাঁ প্রধান সড়কের পাশে হওয়ায় বেশীর ভাগ সময় পাকা সড়কের উপর মাটি পড়ে থাকে। একটু বৃষ্টি হলেই এ মাটি গলে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে করে প্রায়শ দুর্ঘটনা ঘটে এখানে।

একই গ্রামে রয়েছে আবুল হোসেন সোনারের মালীকানাধীন এমএবি ইটভাটা ও বাছের আলী খানের মালীকানাধীন এসকেবি ইটভাটা। এ ভাটাগুলোর চারিদিকেই ফসলি জমি। ভাটাগুলো পাশাপাশি স্থাপন করায় এর ক্ষতিকারক প্রভাবে এলাকার কৃষি ফসল ও রবি শস্য চাষ ব্যাহত হচ্ছে এমন অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের।

এলাকাবাসী জানান, ভাটা মালিকরা ক্ষমতাসীন দলের লোক এবং প্রভাবশালী হওয়ায় এই এলাকার তিনটি ইট ভাটায় প্রচুর ট্রাক আসা-যাওয়া করে। এতে করে গ্রামীণ সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে। ইটভাটার ধুলাবালী ও বিসাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ আবাসনের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। গাছপালা বিবর্ণ হচ্ছে। ফসলী জমির উর্বরতা কমে গেছে।

তারা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর সরেজমিনে যাচাই করলে কোন ক্রমেই কৃষি জমিতে এসব ভাটা করার অনুমতি পেতনা। অতি দ্রুত ইটভাটাগুলো অপসারনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

ভাবিচা ইউপি চেয়ারম্যান ওবাইদুল হক বলেন, “গ্রামটিতে তিনটি ইটভাটা থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছেন। গ্রামটির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তার বোধগম্য হচ্ছেনা, কী করে এমন জায়গায় ভাটা করার অনুমতি মিলতে পারে। বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেছেন, কিন্তু কোনো প্রকার প্রতিকার মিলছেনা।” #