নওগাঁর মহাদেবপুরে সেচকাজে ব্যবহৃত দুইটি যন্ত্রের বিদ্যুৎ সংযোগ দীর্ঘ সাত বছর পর হঠাৎ করে বিচ্ছিন্ন করায় স্থানীয় কৃষকেরা দারুন বেকায়দায় পড়েছেন। অনাবাদী রয়েছে দেড়শ’ বিঘার বেশি জমি। ফলে এলাকার তিন ফসলী এসব জমি থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খাদ্য শস্য উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট চাষীরা অবিলম্বে এসব সেচযন্ত্রে পূণ:সংযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। আর বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বলছেন ওই চাষীরা আইন ভঙ্গ করেছেন।
উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম ও রনাইল গ্রামের গোবিন্দ চন্দ্র বর্মণের ছেলে শ্রী সুরেশ চন্দ্র বর্মণ অভিযোগ করেন যে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে গোবিন্দপুর মাঠে তারা পৃথক দুটি অগভীর নলকূপ খনন করেন। গত ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ওই দুটি সেচযন্ত্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর পর সম্প্রতি সে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তারা বিভিন্ন মহলে বার বার ধর্না দিলেও সেখানে আর পূণ:সংযোগ দেয়া হচ্ছেনা। গত সাত বছর তারা এই সেচযন্ত্র ব্যবহার করে বছরে তিনটি ফসল আবাদ করে আসছেন। এসব জমির আশেপাশে কোথাও গভীর অথবা অগভীর নলকূপ নেই। ফলে এবার এখানকার কমপক্ষে দেড়শ’ বিঘা জমি অনাবাদী থাকছে।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ মহাদেবপুর জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রবিউল আলম জানান, ওই দুই সেচযন্ত্র সংশ্লিষ্ট পোল থেকে ১২০ ফিটের মধ্যে খনন করা হলেও পরে তারা আইন লঙ্ঘন করে ১ হাজার ৭২৮ ফিট দূরে স্থানান্তর করা হয়। তাই সেগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। নতুন করে উপজেলা সেচ কমিটির ছাড়পত্র নিয়ে নির্দিষ্ট দাগে বোরিং করে পূণ:সংযোগ গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ভূক্তভোগী চাষীরা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, প্রথমে যে স্থানে বোরিং করা হয়েছিল গত সাত বছর ধরে সেখানেই রয়েছে। কোথাও স্থানান্তর করা হয়নি। তবে সেই স্থানটি ১২০ ফিটের চেয়ে বেশি দূরত্বে বলেও তারা জানান।
স্থানীয়রা জানান, সংযোগ দেয়ার সময় চাষীদের স্বার্থে ১২০ ফিটের বেশি দূরত্বে সেচযন্ত্র স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়। অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই করেছেন। তাদের দায় চাষীদের উপর চাপিয়ে দিয়ে দেশের খাদ্য উৎপাদনে মারাত্মক অন্তরায় সৃষ্টি করা হয়েছে। অবিলম্বে এসব সেচযন্ত্রের পূণ:সংযোগ দেয়ার দাবি চাষীদের।#