মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ :
উত্তরাঞ্চলের শষ্যভান্ডা নামে খ্যাত নওগাঁর ১১ উপজেলার চাষীরা এখনো হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। আমনের মৌসুম শেষে হয়েছে। প্রন্তিক কৃষকদের বেশিরভাগের ঘরের ধান শেষ হতে চলেছে। যে কয়েকজনই আশায় বুক বেঁধে ধান ঘরে জমিয়ে রেখেছিলেন তাদেরও আশায় গুড়ে বালি। ধানের দাম এখন পর্যন্ত বাড়েনি। তাই ঘরে নতুন ধান উঠলেও হাসি নাই কৃষকের মুখে।
ঋণ নামের দৈত্যটির চোখ রাঙানোতে ভিত এখন কৃষক। সরকারিভাবে এক হাজার ৪০ টাকা ধানের দাম বেধে দিলেও ৬০০ এর ঘর পেরুতে পারেনি ধানের দাম।
বর্তমানের বাজারে যে দরে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে করে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠবেনা। প্রতিমণ ধানে কম করে হলেও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে লোকসান হবে বলে জানান কৃষকেরা।
এদিকে আমনের কাটা-মাড়ায়ের শুরুতেই সরকার আমনের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন ১০৪০ টাকা দরে। সরকারিভাবে আমন কেনাও শুরুও হয়েছে। ওই দামে মাঠে কোন প্রতিফলন নেই। এক মাস যাবত প্রতিমণ ধান ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ধানের বাজার। এতে বড় লোকসারের শঙ্কায় করা হচ্ছে। সঙ্গে ক্ষোভ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে।
বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ (৪০ কেজি) ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৩০ টাকা, যা সরকারে দেয়ার অর্ধেক দরে। আমন কাটা-মাড়াইয়ের শুরুতে প্রতিমণ ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ৬৬০ থেকে ৬৮০ টাকায়। মাত্র কয়দিনের ব্যবধানে আবারো মণ প্রতি কমেছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা।
নওগাঁর ধান ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল-মালিকেরা ধান ক্রয় করতে যে দর বেধে দিচ্ছে সে দর দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
কৃষকেরা বলছেন, সরকারে দেয়া দর বাজারে কোন প্রভাব নেই। বর্তমানে যে দরে ধানের বাজার চলছে তাতে করে উৎপাদ খরচ তো উঠবেনা, বরং ঘর থেকে অন্য কিছু বিক্রি করে মাহাজন পরিশোধ করতে হবে।
এর আগেও বোরো ধানের দাম মণ প্রতি এক হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। তখনও সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকেরা সরকারে গোডাউনে ধান দিতে পারেননি। বাজারে দামও ছিল না। তাই ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বড় আর্থিক ক্ষতিতে পড়তে হয়েছিল কৃষকদের।
কৃষকেরা জানান, নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলে উচু-নিচু ক্ষেত প্রায় ৭০ ভাগ জমি বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করে আমন চাষাবাদ করে থাকে কৃষকেরা। আমনের মাঝামাঝি সময়ে পোকা আক্রমন দেখা দেয়। তাই, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষকদের দ্বিগুন খরচ হয়েছে। এখন ঘরে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে। ঘরে ধান উঠলেও পর্যাপ্ত ফলনও হচ্ছেনা। বাজারে নতুন ধানের দামও কয়েক বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকায় দুশ্চিনন্তায় পড়েছেন তারা। #