নওগাঁ ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নওগাঁর নিশানের বানানো লোগো নিয়ে ছুটছে মেট্রোরেল<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ :

বুধবার চালু হয়েছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। এই মেট্রোরেলের লোগো বানিয়েছেন যিনি তিনি নওগাঁর কৃতি সন্তান আলী আহসান নিশান। নওগাঁ পৌরসভার ধামকুড়ি এলাকার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। মূল লোগো ছাড়াও মেট্রোরেলের স্টেশনে যে সাইনগুলো রয়েছে সেগুলোও তার করা। মেট্রোরেলের লোগো বানিয়ে ইতিহাসের অংশ হওয়া নিশানকে নিয়ে গর্বিত নওগাঁর মানুষ। এটি এখন নওগাঁর ট্যক অব দ্য টাউন।

সৈয়দপুরে রেলের লোকোমোটিভ ওয়ার্কসপের ইঞ্জিন হল্ড কারখানার তত্ত্বধায়ক হিসেবে কাজ করতেন নিশানের বাবা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগ থেকে সদ্য পাস করা নিশান জানান, এই লোগোর মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে পুরো বাংলাদেশকে। একটা লাল সূর্য উঠছে। নিচে বাংলার চিরচেনা সবুজের মাখামাখি। দুইয়ে মিলে বাংলাদেশ। মেট্রোর ‘এম’ অক্ষরটাও এমনভাবে বসানো, মনে হবে যেন প্লাটফর্ম। রেলটির দিকে কিছুক্ষণ তাকালেই মনে হবে, ওটা স্থীর নয়, ছুটে চলেছে। উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করছে ছুটে চলা রেল। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের গতি, সেটা লোগোর দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যাবে। সাধারণত লোগো স্থির প্রকৃতির হয়। এর রঙের ব্যবহারেও এক ধরনের ভারসাম্য থাকে। যেন চোখটা আটকে থাকে। এতে এক ধরনের গতি আছে।

মহাদেবপুৃর দর্পণ, নওগাঁ, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ : নিজের তৈরী লোগো হাতে নওগাঁর নিশান (বাম থেকে দ্বিতীয়)—–সাঈদ টিটো

নিশান তার লোগো তৈরির গল্প বললেন এভাবে, ‘সদ্য বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়েছি। কোনো কাজ নেই। চলতি বছরের শুরুর দিকে একদিন বিভাগের এক শিক্ষকের কাছে যাই। তিনি আমাকে বললেন, মেট্রোরেলের লোগো নির্বাচনের জন্য প্রযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। তুমি প্রতিযোগিতায় অংশ নাও। স্যারের আহ্বানে আমি তিনটি লোগো বানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে জমা দেই। অনেকেই লোগো বানিয়ে জমা দেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাঠানো তিনটি লোগোর মধ্যে আমার দুটো ও অন্যজনের একটি পাঠানো হয়। এরপর জাতীয়ভাবে জমা হওয়া লোগোগুলোর মধ্যে থেকেও শর্টলিস্ট হয়। সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার লোগোটি চুড়ান্ত করেন।’

প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হবার পরও সেই লোগো নিয়ে কয়েকবার কাজ করতে হয়েছে নিশানকে। তিনি বলেন, ‘এখন লোগোতে থাকা ‘এম’ অক্ষরটি লিখে যে প্লাটফর্ম বোঝানো হয়েছে, প্রথমে তা ছিল না। বিশে^র ৩৫টি দেশে মেট্রোরেলের লোগোতে ‘এম’ রয়েছে। ওটাকে যুক্ত করার সময় একটু নতুনত্ব আনা হয়েছে। এছাড়া লোগো যখন বানানো শুরু করি তখন মেট্রোরেল দেখতে কেমন সেটাও জানা ছিল না। তাই প্রথম যে রেলটা ব্যবহার করেছিলাম সেটি দেখতে বুলেট ট্রেনের মতো ছিল। পরে যখন মেট্রোরেলের ইঞ্জিন দেখলাম তখন কিছুটা পরিবর্তন করে দেওয়া হলো।’

নিশান বলেন, ‘পুরো কাজ শেষ করতে ছয় মাসের মতো লেগেছে। চলতি বছরের মে মাসে যখন কাজটি হলো আমি ভীষণ উত্তেজিত ছিলাম। অনেক প্রতিষ্ঠানে লোগো করেছি কিন্তু এতটা ভালো লাগা কাজ করেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হওয়ার আনন্দ অবশ্যই অন্যরকম।’

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেরেলের সাইনের কাজ করতে গিয়ে দেশের সব স্তরের মানুষ যেন চিহ্ন গুলো দেখে বুঝতে পারেন কোন দিকে যেতে হবে, টয়লেট কোন দিকে, টিকিট কোথায় পাবেন-এসব ভাবতে হয়েছে।’

নওগাঁ পৌরসভার ধামকুড়ি এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নওগাঁ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বপ্নের মেট্রোরেলের লোগো বানিয়েছে আমাদের গ্রামের সন্তান নিশান। দোয়া করি, ইতিহাসের অংশ হওয়ার মতো নিশান যেন আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারে।’

নওগাঁর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘নিশানের মধ্যে যে শিল্পী সত্ত্বা আছে, আশা করি ভবিষ্যতে তার আরও অনেক ভালো কাজ দেখতে পারব। তার দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।’#

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁর নিশানের বানানো লোগো নিয়ে ছুটছে মেট্রোরেল<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ :

বুধবার চালু হয়েছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। এই মেট্রোরেলের লোগো বানিয়েছেন যিনি তিনি নওগাঁর কৃতি সন্তান আলী আহসান নিশান। নওগাঁ পৌরসভার ধামকুড়ি এলাকার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। মূল লোগো ছাড়াও মেট্রোরেলের স্টেশনে যে সাইনগুলো রয়েছে সেগুলোও তার করা। মেট্রোরেলের লোগো বানিয়ে ইতিহাসের অংশ হওয়া নিশানকে নিয়ে গর্বিত নওগাঁর মানুষ। এটি এখন নওগাঁর ট্যক অব দ্য টাউন।

সৈয়দপুরে রেলের লোকোমোটিভ ওয়ার্কসপের ইঞ্জিন হল্ড কারখানার তত্ত্বধায়ক হিসেবে কাজ করতেন নিশানের বাবা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগ থেকে সদ্য পাস করা নিশান জানান, এই লোগোর মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে পুরো বাংলাদেশকে। একটা লাল সূর্য উঠছে। নিচে বাংলার চিরচেনা সবুজের মাখামাখি। দুইয়ে মিলে বাংলাদেশ। মেট্রোর ‘এম’ অক্ষরটাও এমনভাবে বসানো, মনে হবে যেন প্লাটফর্ম। রেলটির দিকে কিছুক্ষণ তাকালেই মনে হবে, ওটা স্থীর নয়, ছুটে চলেছে। উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করছে ছুটে চলা রেল। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের গতি, সেটা লোগোর দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যাবে। সাধারণত লোগো স্থির প্রকৃতির হয়। এর রঙের ব্যবহারেও এক ধরনের ভারসাম্য থাকে। যেন চোখটা আটকে থাকে। এতে এক ধরনের গতি আছে।

মহাদেবপুৃর দর্পণ, নওগাঁ, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ : নিজের তৈরী লোগো হাতে নওগাঁর নিশান (বাম থেকে দ্বিতীয়)—–সাঈদ টিটো

নিশান তার লোগো তৈরির গল্প বললেন এভাবে, ‘সদ্য বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়েছি। কোনো কাজ নেই। চলতি বছরের শুরুর দিকে একদিন বিভাগের এক শিক্ষকের কাছে যাই। তিনি আমাকে বললেন, মেট্রোরেলের লোগো নির্বাচনের জন্য প্রযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। তুমি প্রতিযোগিতায় অংশ নাও। স্যারের আহ্বানে আমি তিনটি লোগো বানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে জমা দেই। অনেকেই লোগো বানিয়ে জমা দেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাঠানো তিনটি লোগোর মধ্যে আমার দুটো ও অন্যজনের একটি পাঠানো হয়। এরপর জাতীয়ভাবে জমা হওয়া লোগোগুলোর মধ্যে থেকেও শর্টলিস্ট হয়। সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার লোগোটি চুড়ান্ত করেন।’

প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হবার পরও সেই লোগো নিয়ে কয়েকবার কাজ করতে হয়েছে নিশানকে। তিনি বলেন, ‘এখন লোগোতে থাকা ‘এম’ অক্ষরটি লিখে যে প্লাটফর্ম বোঝানো হয়েছে, প্রথমে তা ছিল না। বিশে^র ৩৫টি দেশে মেট্রোরেলের লোগোতে ‘এম’ রয়েছে। ওটাকে যুক্ত করার সময় একটু নতুনত্ব আনা হয়েছে। এছাড়া লোগো যখন বানানো শুরু করি তখন মেট্রোরেল দেখতে কেমন সেটাও জানা ছিল না। তাই প্রথম যে রেলটা ব্যবহার করেছিলাম সেটি দেখতে বুলেট ট্রেনের মতো ছিল। পরে যখন মেট্রোরেলের ইঞ্জিন দেখলাম তখন কিছুটা পরিবর্তন করে দেওয়া হলো।’

নিশান বলেন, ‘পুরো কাজ শেষ করতে ছয় মাসের মতো লেগেছে। চলতি বছরের মে মাসে যখন কাজটি হলো আমি ভীষণ উত্তেজিত ছিলাম। অনেক প্রতিষ্ঠানে লোগো করেছি কিন্তু এতটা ভালো লাগা কাজ করেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হওয়ার আনন্দ অবশ্যই অন্যরকম।’

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেরেলের সাইনের কাজ করতে গিয়ে দেশের সব স্তরের মানুষ যেন চিহ্ন গুলো দেখে বুঝতে পারেন কোন দিকে যেতে হবে, টয়লেট কোন দিকে, টিকিট কোথায় পাবেন-এসব ভাবতে হয়েছে।’

নওগাঁ পৌরসভার ধামকুড়ি এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নওগাঁ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বপ্নের মেট্রোরেলের লোগো বানিয়েছে আমাদের গ্রামের সন্তান নিশান। দোয়া করি, ইতিহাসের অংশ হওয়ার মতো নিশান যেন আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারে।’

নওগাঁর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘নিশানের মধ্যে যে শিল্পী সত্ত্বা আছে, আশা করি ভবিষ্যতে তার আরও অনেক ভালো কাজ দেখতে পারব। তার দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।’#