নওগাঁ ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

এ সপ্তাহের খুৎবা : মোবইলফোনের রিংটোনে গান না রাখার পরামর্শ<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৬ আগস্ট ২০২২ :

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাজার জামেহ মসজিদের পেশ ইমাম, উপজেলা ইমাম ওলামা কমিটির সভাপতি ও জোয়ানপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো: জিল্লুর রহমান শুক্রবার জুম্মার নামাজে বাংলায় যে খুৎবা দেন, তার সারাংস মহাদেবপুর দর্পণের অগণিত পাঠক পাঠিকার জন্য তুলে ধরা হলো :

আজ আরবি ১৪৪৪ সালের মহররম মাসের ২৭ তারিখ। মাসের শেষ খুৎবা। আজকের খুৎবায় ইমাম সাহেব পবিত্র কোরআন হাতে নিয়ে ‘ইয়া আইয়্যুহান্নাফসুল মোতমাইন্না….আয়াত পাঠ করে তার তরজমা করেন। তরজমায় উল্লেখ করেন, মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন সব মানুষের আত্মা একবারে সৃষ্টি করে সাত স্তবক আসমানের উপর আল্লাহর আরশের নিচে ইল্লিন নামক স্থানে রেখেছেন। এখন যেসব মানবশিশুর জন্ম হয় সেখান থেকেই তাদরে আত্মা পাঠানো হয়। মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন মোমিন বান্দা হলে ফেরেস্তারা তার পবিত্র আত্মাকে আবার সেখানেই ফেরৎ নিয়ে যায়। আর নাফরমান বান্দা হলে তার আত্মাকে সিজ্জিন নামক স্থানে আল্লাহর কারাগারে নিয়ে যায়।

খুৎবার এক পর্যায়ে ইমাম সাহেব মসজিদে নামাজের সময় কারো কারো মোবাইলফোন বেজে ওঠার বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, মানুষের আরবি নাম ইনসান। ইনসান শব্দের এক অর্থ ভূলে যাওয়া। হযরত আদম (আ:) বেহেশতে থাকার সময় আল্লাহর হুকুম ভূলে গিয়েছিলেন। তাই তার নাম দেয়া হয় ইনসান। ইনসানের আর এক অর্থ মানবতা বা মনুষ্যত্ব। মানুষের মধ্যে মানবিক গুণাবলী বা মনুষ্যত্ব আছে বলেই তাকে ইনসান বলা হয়।

ইমাম সাহেব বলেন, কোন নামাজীই ইচ্ছে করে নামাজের সময় মোবাইলফোনের রিংটোন খুলে রাখেন না। সবাই জানেন এসময় রিংটোন সাইলেন্ট করতে হয়। কিন্তু মানুষের ভোলামনের কারণে অনেক সময় কারো কারো মনে থাকেনা। নামাজের সময় যে কেউ রিং দিতেই পারে। রিং বাজতেই পারে। সেক্ষেত্রে নামাজরত অবস্থাতেই এক হাতে মোবাইলফোন বন্ধ করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, এতে নামাজ নষ্ট হবেনা।

ইমাম সাহেব বলেন, নামাজের সময় হঠাৎ যদি মোবাইলফোন বেজে ওঠে, আর তার রিংটোন যদি একটি অশ্লীল গান হয়, তা ওয়েস্টার্ন মিউজিক বা আধ্যাত্মিক কোন গান যাইই হোক না কেন অন্য নামাজীরা তা শুনে বিরক্ত হতে বাধ্য। ফোন বন্ধ না করলে সে মিউজিক যদি বাজতেই থাকে তাহলে অন্যদের মনোযোগ সেদিকে গেলে তাদের ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠা স্বাভাবিক।

ইমাম সাহেব বলেন, প্রত্যেকটি জিনিসের ভাল এবং মন্দ এই দুই দিকই থাকে। উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাতাস, পানি, আগুন, মাটি এসব ছাড়া আমাদের জীবন চলেনা। আবার এসব আমাদের জীবননাশের কারণও হতে পারে। তাই এটা কিভাবে ব্যবহার করা হবে তার উপরই নির্ভর করবে ভাল আর মন্দের। মোবাইলফোনেরও এদুটো দিক আছে। প্রাত্যহিক জীবনে মোবাইলফোনের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এর খারাপ দিক যদি আমরা পরিহার করি। তবেই ভাল।

ইমাম সাহেব বলেন, ইসলামের প্রথম দিকে মদ্যপান জায়েজ ছিল। আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন আয়াত নাজিল করে বললেন, মদের ভাল দিকও আছে, খারাপ দিকও আছে। তবে ভালোর চেয়ে খারাপ দিকই বেশি। মানুষকে ভাল মন্দ দুটোই ব্যবহারের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কেউ যদি ভালোর দিকে যায়, তবে তার শেষ গন্তব্য জান্নাত। আর যারা খারাপ দিকে যাবে, তাদের শেষ গন্তব্য জাহান্নাম। মানুষ যখন মদের ভাল মন্দ দুটো দিকের কথা বুঝতে পেরেছে, তখন আল্লাহ্ আবার আয়াত নাজিল করে মদ্যপান হারাম করেন। এই আয়াত নাজিলের সাথে সাথেই মোমিন বান্দারা মদ্যপান ছেড়ে দেন আর মজুদ মদ ধ্বংস করেন।

ইমাম সাহেব বলেন, যেহেতু মানুষের মন ভোলামন, মসজিদে ঢোকার সময় রিংটোন বন্ধ করতে কেউ কেউ ভূলে যেতে পারেন। আবার নামাজের সময় কেউ রিং দিতেই পারে। সেই ক্ষেত্রে উচ্চস্বরে রিং বাজতেই পারে। সে রিংটোন যদি অশ্লীল গানের না হয়ে স্বাভাবিক কোন শব্দ, বা আজান, বা ভালো কিছু হয় তবে অন্য নামাজীদের মন একটু কম খারাপ হবে। তাই যারা মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেন তাদের রিংটোনে কোন গান না রেখে ভালো কিছু রাখার পরামর্শ দেন তিনি।#

আপলোডকারীর তথ্য

এ সপ্তাহের খুৎবা : মোবইলফোনের রিংটোনে গান না রাখার পরামর্শ<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৬ আগস্ট ২০২২ :

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাজার জামেহ মসজিদের পেশ ইমাম, উপজেলা ইমাম ওলামা কমিটির সভাপতি ও জোয়ানপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো: জিল্লুর রহমান শুক্রবার জুম্মার নামাজে বাংলায় যে খুৎবা দেন, তার সারাংস মহাদেবপুর দর্পণের অগণিত পাঠক পাঠিকার জন্য তুলে ধরা হলো :

আজ আরবি ১৪৪৪ সালের মহররম মাসের ২৭ তারিখ। মাসের শেষ খুৎবা। আজকের খুৎবায় ইমাম সাহেব পবিত্র কোরআন হাতে নিয়ে ‘ইয়া আইয়্যুহান্নাফসুল মোতমাইন্না….আয়াত পাঠ করে তার তরজমা করেন। তরজমায় উল্লেখ করেন, মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন সব মানুষের আত্মা একবারে সৃষ্টি করে সাত স্তবক আসমানের উপর আল্লাহর আরশের নিচে ইল্লিন নামক স্থানে রেখেছেন। এখন যেসব মানবশিশুর জন্ম হয় সেখান থেকেই তাদরে আত্মা পাঠানো হয়। মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন মোমিন বান্দা হলে ফেরেস্তারা তার পবিত্র আত্মাকে আবার সেখানেই ফেরৎ নিয়ে যায়। আর নাফরমান বান্দা হলে তার আত্মাকে সিজ্জিন নামক স্থানে আল্লাহর কারাগারে নিয়ে যায়।

খুৎবার এক পর্যায়ে ইমাম সাহেব মসজিদে নামাজের সময় কারো কারো মোবাইলফোন বেজে ওঠার বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, মানুষের আরবি নাম ইনসান। ইনসান শব্দের এক অর্থ ভূলে যাওয়া। হযরত আদম (আ:) বেহেশতে থাকার সময় আল্লাহর হুকুম ভূলে গিয়েছিলেন। তাই তার নাম দেয়া হয় ইনসান। ইনসানের আর এক অর্থ মানবতা বা মনুষ্যত্ব। মানুষের মধ্যে মানবিক গুণাবলী বা মনুষ্যত্ব আছে বলেই তাকে ইনসান বলা হয়।

ইমাম সাহেব বলেন, কোন নামাজীই ইচ্ছে করে নামাজের সময় মোবাইলফোনের রিংটোন খুলে রাখেন না। সবাই জানেন এসময় রিংটোন সাইলেন্ট করতে হয়। কিন্তু মানুষের ভোলামনের কারণে অনেক সময় কারো কারো মনে থাকেনা। নামাজের সময় যে কেউ রিং দিতেই পারে। রিং বাজতেই পারে। সেক্ষেত্রে নামাজরত অবস্থাতেই এক হাতে মোবাইলফোন বন্ধ করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, এতে নামাজ নষ্ট হবেনা।

ইমাম সাহেব বলেন, নামাজের সময় হঠাৎ যদি মোবাইলফোন বেজে ওঠে, আর তার রিংটোন যদি একটি অশ্লীল গান হয়, তা ওয়েস্টার্ন মিউজিক বা আধ্যাত্মিক কোন গান যাইই হোক না কেন অন্য নামাজীরা তা শুনে বিরক্ত হতে বাধ্য। ফোন বন্ধ না করলে সে মিউজিক যদি বাজতেই থাকে তাহলে অন্যদের মনোযোগ সেদিকে গেলে তাদের ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠা স্বাভাবিক।

ইমাম সাহেব বলেন, প্রত্যেকটি জিনিসের ভাল এবং মন্দ এই দুই দিকই থাকে। উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাতাস, পানি, আগুন, মাটি এসব ছাড়া আমাদের জীবন চলেনা। আবার এসব আমাদের জীবননাশের কারণও হতে পারে। তাই এটা কিভাবে ব্যবহার করা হবে তার উপরই নির্ভর করবে ভাল আর মন্দের। মোবাইলফোনেরও এদুটো দিক আছে। প্রাত্যহিক জীবনে মোবাইলফোনের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এর খারাপ দিক যদি আমরা পরিহার করি। তবেই ভাল।

ইমাম সাহেব বলেন, ইসলামের প্রথম দিকে মদ্যপান জায়েজ ছিল। আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন আয়াত নাজিল করে বললেন, মদের ভাল দিকও আছে, খারাপ দিকও আছে। তবে ভালোর চেয়ে খারাপ দিকই বেশি। মানুষকে ভাল মন্দ দুটোই ব্যবহারের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কেউ যদি ভালোর দিকে যায়, তবে তার শেষ গন্তব্য জান্নাত। আর যারা খারাপ দিকে যাবে, তাদের শেষ গন্তব্য জাহান্নাম। মানুষ যখন মদের ভাল মন্দ দুটো দিকের কথা বুঝতে পেরেছে, তখন আল্লাহ্ আবার আয়াত নাজিল করে মদ্যপান হারাম করেন। এই আয়াত নাজিলের সাথে সাথেই মোমিন বান্দারা মদ্যপান ছেড়ে দেন আর মজুদ মদ ধ্বংস করেন।

ইমাম সাহেব বলেন, যেহেতু মানুষের মন ভোলামন, মসজিদে ঢোকার সময় রিংটোন বন্ধ করতে কেউ কেউ ভূলে যেতে পারেন। আবার নামাজের সময় কেউ রিং দিতেই পারে। সেই ক্ষেত্রে উচ্চস্বরে রিং বাজতেই পারে। সে রিংটোন যদি অশ্লীল গানের না হয়ে স্বাভাবিক কোন শব্দ, বা আজান, বা ভালো কিছু হয় তবে অন্য নামাজীদের মন একটু কম খারাপ হবে। তাই যারা মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেন তাদের রিংটোনে কোন গান না রেখে ভালো কিছু রাখার পরামর্শ দেন তিনি।#