নওগাঁ ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

মহাদেবপুরে বেশি দামে সার বিক্রি : নিরব প্রশাসন : ভোগান্তিতে কৃষক<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২০ আগস্ট ২০২২ :

নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেই। একশ্রেণির মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তা পর্যায়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। তবে প্রশাসন বলছেন সারের কোন সংকট নেই।

সরকার সম্প্রতি ইউরিয়া সারের দাম কেজি প্রতি ৬টাকা বাড়িয়ে ২২টাকা নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু বাড়তি দামেও মিলছেনা সার। চাষিদের কিনতে হচ্ছে ২৪ টাকা থেকে ২৬টাকায়। টিএসপি ও এমওপি সারও কিনতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজি প্রতি ৫টাকা থেকে ৮টাকা বেশিতে। দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন নানা কৌশল।

এই উপজেলায় রয়েছেন ১২ জন সরকারি সার ডিলার। তাদের সরাসরি কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করার কথা। কিন্তু তারা তা না করে বিক্রি করে দিচ্ছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগী খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। তারা খুচরা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এছাড়া সরকারি সার ডিলাররা সার অবৈধভাবে মজুদ করে রাখায় বাজারে সারের সরবরাহ কম। চাষিরা সার কেনার জন্য দীর্ঘ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। তবু চাহিদামত সার পাচ্ছেন না তারা। ফলে তারা বেশি দামেই সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা সদরের বিভিন্ন ডিলারের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে সার কিনতে আসা চাষিদের দীর্ঘ লাইন। এদের মধ্যে অনেকেই চাহিদামত সার পাননি বলে অভিযোগ করেন।

উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোশাইপুর গ্রামের চাষি মোজাফফর রহমান বলেন, ডিলারের দোকানে চাহিদামত সার না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে দেড় হাজার টাকা বেশি দিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৬ বস্তা সার কিনেছেন।

তিনি জানান, প্রতিবস্তা ইউরিয়া সারের সরকার নির্ধারিত দাম ১ হাজার ২শ টাকা হলেও ২শ টাকা বেশি দিয়ে ১ হজার ৪শ টাকা দরে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তাকে সার কিনতে হয়েছে। এমওপি ও ডিএপি সারও বস্তাপ্রতি ২শ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে তাকে।

উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের ভালাইন গ্রামের চাষি গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, বিসিআইসি সার ডিলার সবিতা রাণী ঘোষ ও মন্ডল ট্রেডার্সে ডিএপি সার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বস্তাপ্রতি ১শ থেকে ২শ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে চাষিদের কাছ থেকে। বকের মোড়ের গোবিন্দ ট্রেডার্সে প্রতি বস্তা ডিএপি সার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫০ টাকা বেশি নিয়ে ৯৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। চাষিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম নেয়া হলেও মেমোতে সরকার নির্ধারিত মূল্যই লেখা হচ্ছে এমন অভিযোগও করেছেন চাষিরা।

ডিলারদের কাছ থেকে কৃষকদের সরাসরি সার নেয়ার কথা থাকলেও কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে বেশী দামে এসব সার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, ডিলারদের কাছ থেকে বেশী দামে সার কিনে কৃষক পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে একটু বেশি দামে সার বিক্রি করছেন তারা।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, দীর্ঘদিন খরার পরে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় প্রতিটি মাঠে পানি জমেছে। এ কারণে একযোগে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ শুরু করায় সারের দোকানে ভীড় বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন হচ্ছে। তবে সারের কোনো সংকট নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, খুচরা পর্যায়ে দুই একজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সারের বেশি দাম নেয়ার অভিযোগ পাওয়ায় কৃষকদেরকে সরাসরি ডিলারের কাছ থেকে সার ক্রয় করতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কেউ সার বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’#

আপলোডকারীর তথ্য

মহাদেবপুরে বেশি দামে সার বিক্রি : নিরব প্রশাসন : ভোগান্তিতে কৃষক<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৩:২৩:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২০ আগস্ট ২০২২ :

নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেই। একশ্রেণির মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তা পর্যায়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। তবে প্রশাসন বলছেন সারের কোন সংকট নেই।

সরকার সম্প্রতি ইউরিয়া সারের দাম কেজি প্রতি ৬টাকা বাড়িয়ে ২২টাকা নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু বাড়তি দামেও মিলছেনা সার। চাষিদের কিনতে হচ্ছে ২৪ টাকা থেকে ২৬টাকায়। টিএসপি ও এমওপি সারও কিনতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজি প্রতি ৫টাকা থেকে ৮টাকা বেশিতে। দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন নানা কৌশল।

এই উপজেলায় রয়েছেন ১২ জন সরকারি সার ডিলার। তাদের সরাসরি কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করার কথা। কিন্তু তারা তা না করে বিক্রি করে দিচ্ছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগী খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। তারা খুচরা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এছাড়া সরকারি সার ডিলাররা সার অবৈধভাবে মজুদ করে রাখায় বাজারে সারের সরবরাহ কম। চাষিরা সার কেনার জন্য দীর্ঘ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। তবু চাহিদামত সার পাচ্ছেন না তারা। ফলে তারা বেশি দামেই সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা সদরের বিভিন্ন ডিলারের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে সার কিনতে আসা চাষিদের দীর্ঘ লাইন। এদের মধ্যে অনেকেই চাহিদামত সার পাননি বলে অভিযোগ করেন।

উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোশাইপুর গ্রামের চাষি মোজাফফর রহমান বলেন, ডিলারের দোকানে চাহিদামত সার না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে দেড় হাজার টাকা বেশি দিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৬ বস্তা সার কিনেছেন।

তিনি জানান, প্রতিবস্তা ইউরিয়া সারের সরকার নির্ধারিত দাম ১ হাজার ২শ টাকা হলেও ২শ টাকা বেশি দিয়ে ১ হজার ৪শ টাকা দরে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তাকে সার কিনতে হয়েছে। এমওপি ও ডিএপি সারও বস্তাপ্রতি ২শ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে তাকে।

উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের ভালাইন গ্রামের চাষি গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, বিসিআইসি সার ডিলার সবিতা রাণী ঘোষ ও মন্ডল ট্রেডার্সে ডিএপি সার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বস্তাপ্রতি ১শ থেকে ২শ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে চাষিদের কাছ থেকে। বকের মোড়ের গোবিন্দ ট্রেডার্সে প্রতি বস্তা ডিএপি সার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫০ টাকা বেশি নিয়ে ৯৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। চাষিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম নেয়া হলেও মেমোতে সরকার নির্ধারিত মূল্যই লেখা হচ্ছে এমন অভিযোগও করেছেন চাষিরা।

ডিলারদের কাছ থেকে কৃষকদের সরাসরি সার নেয়ার কথা থাকলেও কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে বেশী দামে এসব সার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, ডিলারদের কাছ থেকে বেশী দামে সার কিনে কৃষক পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে একটু বেশি দামে সার বিক্রি করছেন তারা।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, দীর্ঘদিন খরার পরে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় প্রতিটি মাঠে পানি জমেছে। এ কারণে একযোগে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ শুরু করায় সারের দোকানে ভীড় বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন হচ্ছে। তবে সারের কোনো সংকট নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, খুচরা পর্যায়ে দুই একজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সারের বেশি দাম নেয়ার অভিযোগ পাওয়ায় কৃষকদেরকে সরাসরি ডিলারের কাছ থেকে সার ক্রয় করতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কেউ সার বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’#