নওগাঁ ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

পোরশার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া উত্তাল পূনর্ভবা নদী এখন ধূ ধূ বালুচর<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, এম রইচ উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, পোরশা (নওগাঁ), ৫ এপ্রিল ২০২২ :

নওগাঁর পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের উত্তাল পূনর্ভবা নদী নাব্যতা হারিয়ে এখন ধূ ধূ বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে খরা মৌসুমে এর তলদেশ যেমন খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তেমনি গরু ছাগলের চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

নদীটিতে এক সময় ঢেউয়ের তালে চলাচল করতো অসংখ্য নৌকা, লঞ্চ, ষ্টিমার। মাঝিরা নৌকা নিয়ে ছুটে চলতো গোমস্তাপুর, রহনপুর, নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্রে। সেসব উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা বড় বড় হাট বাজার ও ব্যবসা কেন্দ্রে ধান, পাট,আলু, বেগুন, সরিষা, কলাই, গমসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের ছোট বড় নৌকায় পাল তুলে ছুটে চলতেন। শুধু পণ্যই নয় সেসব হাটবাজারে বিক্রির জন্য তারা নিয়ে যেতেন গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি।

সে সময় পূনর্ভবা ছিল পূর্ন যৌবনা। ব্যবসায়ীরা এই পূনর্ভবাকে একমাত্র নদী পথ হিসাবে ব্যবহার করে তারা ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবন জীবিকার শক্ত ভীত গড়ে তুলেছিলেন। শুধু হাটবাজার নয়, নদীটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল অনেক জনপদ। এর পানি দিয়ে কৃষকরা দুই পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সবুজ ফসল ফলাতেন। ফলে ফসলে ভরে উঠতো মাঠের পর মাঠ।

ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অফুরন্ত উৎস ছিল এই পূনর্ভবা। মাছ পাওয়া যেত সারাবছর ধরে। ফলে জীবিকার সন্ধানে নদী সংলগ্ন ও পাশের গ্রামগুলোতে অসংখ্য জেলে পরিবারের বসতি গড়ে উঠেছিল। জীবিকা নির্বাহের জন্য জেলেরা রাতদিন ডিঙি নৌকায় জাল নিয়ে চষে বেড়াতেন মাছ ধরার জন্য। মাছ বিক্রি করে সংসার চলতো তাদের।

সময় গড়িয়ে চলার সথে সাথে সেই ভরা যৌবনা পূনর্ভবা এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। জেলে পরিবারগুলো হয়ে গেছে প্রায় বিলীন। পাড়গুলো হয়েছে কৃষি জমি। নদী গর্ভে জেগে উঠা চরে এলাকার শিশুরা খেলছে ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলা। এক সময়ের ব্যবসা বাণিজ্যের উৎসগুলো হয়ে গেছে চিরতরে বন্ধ। থমকে গেছে নদী, নিভে গেছে বিপুল সম্ভবনা।

পূনর্ভবা নদীকেন্দ্রীক সম্ভবনাগুলো নিভে গেলেও কেউ কখনও এসব নিয়ে ভাবেননি। খরা মৌসুমে সরকারিভাবে নদীটি খননের পদক্ষেপ নেয়া হলে অন্তত বালুচরে পরিণত হতোনা। নদীটি কখনও খনন বা রক্ষণাবেক্ষণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নদীটি এখন ফসলের জমিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর খরা মৌসুমে নদিটিতে পানি না থাকায় স্থানীয়ভাবে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি উত্তেলন করে অনেকেই ধান চাষ করছেন। পুরাতন এই নদিটি খনন না করে এভাবে চলতে থাকলে এক সময়ের উত্তাল পূনর্ভবা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে বিশিষ্টজনরা মনে করছেন। #

আপলোডকারীর তথ্য

পোরশার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া উত্তাল পূনর্ভবা নদী এখন ধূ ধূ বালুচর<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ১১:৫২:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২

মহাদেবপুর দর্পণ, এম রইচ উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, পোরশা (নওগাঁ), ৫ এপ্রিল ২০২২ :

নওগাঁর পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের উত্তাল পূনর্ভবা নদী নাব্যতা হারিয়ে এখন ধূ ধূ বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে খরা মৌসুমে এর তলদেশ যেমন খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তেমনি গরু ছাগলের চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

নদীটিতে এক সময় ঢেউয়ের তালে চলাচল করতো অসংখ্য নৌকা, লঞ্চ, ষ্টিমার। মাঝিরা নৌকা নিয়ে ছুটে চলতো গোমস্তাপুর, রহনপুর, নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্রে। সেসব উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা বড় বড় হাট বাজার ও ব্যবসা কেন্দ্রে ধান, পাট,আলু, বেগুন, সরিষা, কলাই, গমসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের ছোট বড় নৌকায় পাল তুলে ছুটে চলতেন। শুধু পণ্যই নয় সেসব হাটবাজারে বিক্রির জন্য তারা নিয়ে যেতেন গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি।

সে সময় পূনর্ভবা ছিল পূর্ন যৌবনা। ব্যবসায়ীরা এই পূনর্ভবাকে একমাত্র নদী পথ হিসাবে ব্যবহার করে তারা ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবন জীবিকার শক্ত ভীত গড়ে তুলেছিলেন। শুধু হাটবাজার নয়, নদীটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল অনেক জনপদ। এর পানি দিয়ে কৃষকরা দুই পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সবুজ ফসল ফলাতেন। ফলে ফসলে ভরে উঠতো মাঠের পর মাঠ।

ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অফুরন্ত উৎস ছিল এই পূনর্ভবা। মাছ পাওয়া যেত সারাবছর ধরে। ফলে জীবিকার সন্ধানে নদী সংলগ্ন ও পাশের গ্রামগুলোতে অসংখ্য জেলে পরিবারের বসতি গড়ে উঠেছিল। জীবিকা নির্বাহের জন্য জেলেরা রাতদিন ডিঙি নৌকায় জাল নিয়ে চষে বেড়াতেন মাছ ধরার জন্য। মাছ বিক্রি করে সংসার চলতো তাদের।

সময় গড়িয়ে চলার সথে সাথে সেই ভরা যৌবনা পূনর্ভবা এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। জেলে পরিবারগুলো হয়ে গেছে প্রায় বিলীন। পাড়গুলো হয়েছে কৃষি জমি। নদী গর্ভে জেগে উঠা চরে এলাকার শিশুরা খেলছে ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলা। এক সময়ের ব্যবসা বাণিজ্যের উৎসগুলো হয়ে গেছে চিরতরে বন্ধ। থমকে গেছে নদী, নিভে গেছে বিপুল সম্ভবনা।

পূনর্ভবা নদীকেন্দ্রীক সম্ভবনাগুলো নিভে গেলেও কেউ কখনও এসব নিয়ে ভাবেননি। খরা মৌসুমে সরকারিভাবে নদীটি খননের পদক্ষেপ নেয়া হলে অন্তত বালুচরে পরিণত হতোনা। নদীটি কখনও খনন বা রক্ষণাবেক্ষণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নদীটি এখন ফসলের জমিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর খরা মৌসুমে নদিটিতে পানি না থাকায় স্থানীয়ভাবে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি উত্তেলন করে অনেকেই ধান চাষ করছেন। পুরাতন এই নদিটি খনন না করে এভাবে চলতে থাকলে এক সময়ের উত্তাল পূনর্ভবা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে বিশিষ্টজনরা মনে করছেন। #