সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিস মেকার্স বাংলাদেশের মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত বাদি হয়ে জনস্বার্থে নওগাঁ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৫ এ মামলাটি দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আদেশের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
সম্প্রতি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ‘’বালুমহাল লিজ’ কাকে বলে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ’,‘নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদী বালুশূন্য হলেও বন্ধ হচ্ছেনা লিজ প্রক্রিয়া’,‘নদীতে বালু না থাকায় নদী লিজের নামে বালু ব্যবসায়ীরা ফসলসহ কেটে নিয়ে যাচ্ছে নদীর দুপারের তিন ফসলি জমির মাটি’ প্রভৃতি শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বাদি বিষয়টি বিজ্ঞ বিচারকের নজরে আনেন।
বাদি বলেন,‘ বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি এলাকার ফসলি জমির মাটি অবৈধভাবে কেটে নেয়া হচ্ছে এবং ফসল নষ্ট করা হচ্ছে। তাই জনস্বার্থে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯০ ধারা অনুযায়ী মামলাটি দায়ের করি। সেখানে বলা হয়েছে বিজ্ঞ আদালত যদি কোনো মাধ্যমে জানতে পারেন কোথাও আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তাহলে বিজ্ঞ আদালত তার উপর ভিত্তি করে অভিযোগটি আমলে নিতে পারেন এবং আদেশ দিতে পারেন। তাই পরবর্তী আদেশের জন্য বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন।’
সরজমিনে দেখা যায়, কাষ্টডোব খাগড়া মৌজায় বালুমহাল ইজারাদার গাছপালা উপড়ে ফেলে আলুক্ষেত, পটলক্ষেতসহ তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। গভীর করা হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ ফুট। তাতে আশপাশের ফসলি জমি ভেঙে পড়ছে।
কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন,‘স্যার নাকি তাদের কাটার আদেশ দিয়েছেন। তাই তারা মাটি কাটছে। মালিকানা জমি নষ্ট হচ্ছে কোনো বাধা নিষেধের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।’
দোনইল গ্রামের হাবিল উদ্দিন জানান, তার পিতার নামে ৮৫ শতক জমি চিরস্থায়ী পত্তন নেয়া আছে। তাদের খাজনা খারিজ হাল নাগাদ রয়েছে। সে জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নওগাঁ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
অপরদিকে নালুকাবাড়ী গুচ্ছগ্রামের পাশেই বালু কাটার মহোৎসব চলছে। ভেকু মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ২০/৩০টি ট্রাক্টর একই ভাবে মাটি বহন করছে। সেখানেও কাটা হচ্ছে ফসলি জমি।
ওই গুচ্ছগ্রামের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,‘আমরা বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ঘুরছি। কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এভাবে মাটি কাটলে গুচ্ছগ্রাম রক্ষা করা যাবে না। বর্ষা মৌসুমে নদী ভরে গেলে পানির স্রোত সরাসরি গুচ্ছগ্রামে এসে আঘাত হানবে। তখন এখানকার আবাস নি:চিহ্ন হয়ে যাবে।’#