নওগাঁ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

নওগাঁয় চিকন চালের কদর বাড়ায় বেড়েছে দাম<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ :

গত দুসপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁয় চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা। তবে কমেছে মোটা চালের দাম। চালের দাম বাড়ায় মিল মালিকরা দুষধেন খুচরা ব্যবসায়ীদের। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন মানুষ চিকন চাল বেশি কিনছেন বলে দাম বেড়েছে। মোটা চাল কেউ আর কিনতে চাননা। তাই দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। এ থেকে চাল উৎপন্ন হয় ৮ লাখ ১৮ হাজার ২৩৬ মেট্রিক টন। চিকন জাতের ধানের উৎপাদন হয় ১ লাখ ৩০ হেক্টর জমিতে। এ চাল উৎপন্ন হয় ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।

জেলার পাইকারি চাল বাজার সূত্রে জানা যায়, প্রতি কেজি চিকন চালের দাম ৩ টাকা বেড়ে কাটারিভোগ ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা ও নাজিরশাইল ৬০ টাকা থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা-৫ জাতের মোটা চাল কেজি প্রতি ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায়।

পৌর খুচরা চাল বাজার সূত্রে জানা যায়, চিকন চালের মধ্যে রনজিত প্রতিকেজি ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকা, ব্রি-২৮ ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, জিরাশাইল ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা, কাটারিভোগ ৬৫ টাকা থেকে ৬৬ টাকা, সুগন্ধি চাল আতব ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা ও স্বর্ণা-৫ মোটা চাল ৪২ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুসপ্তাহ আগে চিকন চাল কেজিতে ৩ টাকা কম আর মোটা চাল কেজিতে ২ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতো।

চিকন ও মাঝারি হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধান। প্রতিবছর ইরি-বোরো মৌসুমে এ জাতের ধান উৎপাদন হয় যা সারা বছর যোগান দিতে হয়। এ ধান থেকে বছরে ৮ থেকে ৯ মাস চাহিদা পূরণের পর শেষ সময় এসে দাম বাড়তে থাকে। মানুষের খাদ্যভাস পরিবর্তন হওয়ায় সরু জাতের চালের ভাত খেয়ে অভ্যস্ত হয়েছেন। এখন দিনমজুর থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ সরু জাতের চালের ভাত খান। বছরের শেষ সময় এসে সরু ধানের সংকট হওয়ায় চালেরও সংকট পড়ে। এতে স্বাভাবিকভাবেই সরু চালের দাম বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন ধান-চাল ব্যবসায়ীরা।

খুচরা বাজারের ভাই ভাই খাদ্য ভান্ডারের প্রোপাইটর রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরু চালের আদমানি কম থাকায় দাম বেড়েছে। বাজারে এসে ভ্যানচালক ও দিনমজুররাও সরু চালের খোঁজ করছেন। দাম বেশি হলেও তারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’

পাইকারি ব্যবসায়ী আয়েন উদ্দিন মোল্লা অ্যান্ড সন্স’র ম্যানেজার নিতাই সাহা বলেন, ১গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সরু চালের কেজি ২-৩ টাকা বেড়েছে। তবে মোটা চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।’ ধান ব্যবসায়ী রিপন বলেন, ‘গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমণ ধানের দাম ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিমণ ধান পাইজাম ১ হাজার ৩৮০ টাকা তেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, কাটারি দেড় হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা, মিনিকেট ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪২০ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নওগাঁ শহরের পৌর খুচরা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার বলেন, ‘চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখি। আমরা খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করে থাকি। বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় আমাদের পুঁজিও বেশি লাগছে। সবমহল যদি বাজার মনিটরিং করেন তাহলে বাজার স্থিতিশীল হবে।’

নওগাঁ জেলা চাউলকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘ইরি-বোরো মৌসুমে বছরে একবার সরু জাতের ধানের আবাদ হয়ে থাকে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হয়ে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এখন সরু চালের ভাত খাওয়া শুরু করেছেন। মোটা চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত না। এ কারণে বছরের শেষ সময়ে এসে সরু ধানের সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি দামে ধান কিনে বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া সরু চালের উৎপাদন কমে যাওয়ায় চালের দামও বেড়ে গেছে।’#

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁয় চিকন চালের কদর বাড়ায় বেড়েছে দাম<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ১০:২৬:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ :

গত দুসপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁয় চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা। তবে কমেছে মোটা চালের দাম। চালের দাম বাড়ায় মিল মালিকরা দুষধেন খুচরা ব্যবসায়ীদের। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন মানুষ চিকন চাল বেশি কিনছেন বলে দাম বেড়েছে। মোটা চাল কেউ আর কিনতে চাননা। তাই দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। এ থেকে চাল উৎপন্ন হয় ৮ লাখ ১৮ হাজার ২৩৬ মেট্রিক টন। চিকন জাতের ধানের উৎপাদন হয় ১ লাখ ৩০ হেক্টর জমিতে। এ চাল উৎপন্ন হয় ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।

জেলার পাইকারি চাল বাজার সূত্রে জানা যায়, প্রতি কেজি চিকন চালের দাম ৩ টাকা বেড়ে কাটারিভোগ ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা ও নাজিরশাইল ৬০ টাকা থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা-৫ জাতের মোটা চাল কেজি প্রতি ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায়।

পৌর খুচরা চাল বাজার সূত্রে জানা যায়, চিকন চালের মধ্যে রনজিত প্রতিকেজি ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকা, ব্রি-২৮ ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, জিরাশাইল ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা, কাটারিভোগ ৬৫ টাকা থেকে ৬৬ টাকা, সুগন্ধি চাল আতব ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা ও স্বর্ণা-৫ মোটা চাল ৪২ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুসপ্তাহ আগে চিকন চাল কেজিতে ৩ টাকা কম আর মোটা চাল কেজিতে ২ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতো।

চিকন ও মাঝারি হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধান। প্রতিবছর ইরি-বোরো মৌসুমে এ জাতের ধান উৎপাদন হয় যা সারা বছর যোগান দিতে হয়। এ ধান থেকে বছরে ৮ থেকে ৯ মাস চাহিদা পূরণের পর শেষ সময় এসে দাম বাড়তে থাকে। মানুষের খাদ্যভাস পরিবর্তন হওয়ায় সরু জাতের চালের ভাত খেয়ে অভ্যস্ত হয়েছেন। এখন দিনমজুর থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ সরু জাতের চালের ভাত খান। বছরের শেষ সময় এসে সরু ধানের সংকট হওয়ায় চালেরও সংকট পড়ে। এতে স্বাভাবিকভাবেই সরু চালের দাম বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন ধান-চাল ব্যবসায়ীরা।

খুচরা বাজারের ভাই ভাই খাদ্য ভান্ডারের প্রোপাইটর রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরু চালের আদমানি কম থাকায় দাম বেড়েছে। বাজারে এসে ভ্যানচালক ও দিনমজুররাও সরু চালের খোঁজ করছেন। দাম বেশি হলেও তারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’

পাইকারি ব্যবসায়ী আয়েন উদ্দিন মোল্লা অ্যান্ড সন্স’র ম্যানেজার নিতাই সাহা বলেন, ১গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সরু চালের কেজি ২-৩ টাকা বেড়েছে। তবে মোটা চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।’ ধান ব্যবসায়ী রিপন বলেন, ‘গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমণ ধানের দাম ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিমণ ধান পাইজাম ১ হাজার ৩৮০ টাকা তেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, কাটারি দেড় হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা, মিনিকেট ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪২০ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নওগাঁ শহরের পৌর খুচরা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার বলেন, ‘চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখি। আমরা খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করে থাকি। বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় আমাদের পুঁজিও বেশি লাগছে। সবমহল যদি বাজার মনিটরিং করেন তাহলে বাজার স্থিতিশীল হবে।’

নওগাঁ জেলা চাউলকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘ইরি-বোরো মৌসুমে বছরে একবার সরু জাতের ধানের আবাদ হয়ে থাকে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হয়ে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এখন সরু চালের ভাত খাওয়া শুরু করেছেন। মোটা চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত না। এ কারণে বছরের শেষ সময়ে এসে সরু ধানের সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি দামে ধান কিনে বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া সরু চালের উৎপাদন কমে যাওয়ায় চালের দামও বেড়ে গেছে।’#