নওগাঁ ০১:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

মহাদেবপুরে ধান কেটেই আলু রোপণ : একই জমিতে ফিবছর তিন ফসল<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৩ নভেম্বর ২০২১ : আমন ধান কেটেই সেই জমিতে আলু রোপণ করছেন বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক নিবাস বর্ম্মণ-----ছবি : সাঈদ টিটো

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৩ নভেম্বর ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরে বাড়ছে শস্য নিবিড়তা। একই জমিতে ফিবছর চাষ হচ্ছে তিন ফসল। ফলে কদর বেড়েছে জমির মালিকদের। কদর বেড়েছে কৃষকদের। জমির দামও বেড়েছে প্রচুর। নওগাঁর ১১ উপজেলার মধ্যে এখন জমির সবচেয়ে বেশি দাম মহাদেবপুর উপজেলায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এই কৃতিত্ব পুরোটাই চাষিদের। তবে কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানের ফলেই চাষিরা আগ্রহি হয়ে উঠেছেন। আর চাষিরা বলছেন জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ফসলি জমি ফেলে রাখার জো নেই। এক ফসল তুলে সাথে সাথেই চাষ করছেন অন্য ফসল।

উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে হাতুড় ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রাম। মহাদেবপুর-সরাইগাছী পাকা সড়কের পাশেই মাঠজুড়ে পাকা আমন ধানের খেত। ধান কাটা শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এমাঠের ধানও কাটার অপেক্ষায়। মাঠের মাঝখানে দেখা গেল অল্প জমিতে ধান নেই। সেখানে আলু রোপণের কাজ করছেন একজন কৃষক। কাছে গিয়ে সালাম বিনিময়ের সময়ই বোঝা গেল তিনি মধ্যম শ্রেণির শ্রবন প্রতিবন্ধি। কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধিও। খুব উঁচু গলায় কথা বলে ও ইশারা ইঙ্গিতে জানা গেল তার কাহিনী।

তিনি ওইগ্রামের চেঘো চন্দ্র বর্ম্মণের ছেলে নিবাস চন্দ্র বর্ম্মণ। তার ৬ কাঠা জমিতে লাগিয়েছিলেন আগাম আমন ধান। তাই সবার আগেই কাটা হয়েছে। ধান কেটেই জমি চাষ করে সার ছিটিয়ে রোপণ করছেন আলুর বীজ। ৩ মাস পর মাঘ মাসে উঠবে এই আলু। নিজের বাড়িতে সংরক্ষণ করা আধা মণ আলু অঙ্গুরিত হয়েছে। সেগুলোই রোপণ করছেন। বিঘাপ্রতি ফলন হবে ২০ মণ, এমনই আশা করছেন তিনি। আলু তুলে আবার লাগাবেন ইরিবোরো। ৩ মাস পর বোরো ধান কাটা হয়। এরপর চাষ করবেন আমন ধান। এভাবে প্রতিবছর এজমিতে আবাদ করছেন ৩ ফসল।

বয়োবৃদ্ধ চাষিরা জানালেন, আগে এসব জমিতে বছরে একটি শুধুমাত্র আমন ধান হতো। ফলন হতো বিঘাপ্রতি ৬/৭ মণ। আশির দশকে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এসব জমিতে লাগানো শুরু হলো খরালি ইরিধান। এখন অগ্রহায়ণে আমন ধান কাটার পর রবি মৌসুমে সে জমিতে কেউ কেউ লাগান আলু, কেউ সরিষা, আবার কেউ গম, ভূট্টা, সূর্যমুখি, চিনাবাদাম, পেঁয়াজ। কেউ কেউ জমিতে লারা থাকা অবস্থায় হাল না দিয়েই ছিটিয়ে দেন খেসারি কালাই, মাস কালাই, মুগ অথবা মসুর ডাল। এগুলো তুলে মাঘ-ফাল্গুন মাসে রোপণ করা হয় ইরিবোরো ধান। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠতে ইরিধান কাটা হয়। যারা সরিষা লাগান তাদের আর বোরো লাগানোর সময় থাকে না। তারা লাগান সনাতন পদ্ধতির আউশ ধান। এরপর আবার আমন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানালেন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিটি ব্লকে নিয়মিত চাষিদের নিয়ে বৈঠক করে কোন মাসে খেতের কি করণীয় তা আলোচনা করেন। তাদের তৎপরতাতেই উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে বছরে ৩ টি ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে।#

আপলোডকারীর তথ্য

মহাদেবপুরে ধান কেটেই আলু রোপণ : একই জমিতে ফিবছর তিন ফসল<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০২:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৩ নভেম্বর ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরে বাড়ছে শস্য নিবিড়তা। একই জমিতে ফিবছর চাষ হচ্ছে তিন ফসল। ফলে কদর বেড়েছে জমির মালিকদের। কদর বেড়েছে কৃষকদের। জমির দামও বেড়েছে প্রচুর। নওগাঁর ১১ উপজেলার মধ্যে এখন জমির সবচেয়ে বেশি দাম মহাদেবপুর উপজেলায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এই কৃতিত্ব পুরোটাই চাষিদের। তবে কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানের ফলেই চাষিরা আগ্রহি হয়ে উঠেছেন। আর চাষিরা বলছেন জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ফসলি জমি ফেলে রাখার জো নেই। এক ফসল তুলে সাথে সাথেই চাষ করছেন অন্য ফসল।

উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে হাতুড় ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রাম। মহাদেবপুর-সরাইগাছী পাকা সড়কের পাশেই মাঠজুড়ে পাকা আমন ধানের খেত। ধান কাটা শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এমাঠের ধানও কাটার অপেক্ষায়। মাঠের মাঝখানে দেখা গেল অল্প জমিতে ধান নেই। সেখানে আলু রোপণের কাজ করছেন একজন কৃষক। কাছে গিয়ে সালাম বিনিময়ের সময়ই বোঝা গেল তিনি মধ্যম শ্রেণির শ্রবন প্রতিবন্ধি। কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধিও। খুব উঁচু গলায় কথা বলে ও ইশারা ইঙ্গিতে জানা গেল তার কাহিনী।

তিনি ওইগ্রামের চেঘো চন্দ্র বর্ম্মণের ছেলে নিবাস চন্দ্র বর্ম্মণ। তার ৬ কাঠা জমিতে লাগিয়েছিলেন আগাম আমন ধান। তাই সবার আগেই কাটা হয়েছে। ধান কেটেই জমি চাষ করে সার ছিটিয়ে রোপণ করছেন আলুর বীজ। ৩ মাস পর মাঘ মাসে উঠবে এই আলু। নিজের বাড়িতে সংরক্ষণ করা আধা মণ আলু অঙ্গুরিত হয়েছে। সেগুলোই রোপণ করছেন। বিঘাপ্রতি ফলন হবে ২০ মণ, এমনই আশা করছেন তিনি। আলু তুলে আবার লাগাবেন ইরিবোরো। ৩ মাস পর বোরো ধান কাটা হয়। এরপর চাষ করবেন আমন ধান। এভাবে প্রতিবছর এজমিতে আবাদ করছেন ৩ ফসল।

বয়োবৃদ্ধ চাষিরা জানালেন, আগে এসব জমিতে বছরে একটি শুধুমাত্র আমন ধান হতো। ফলন হতো বিঘাপ্রতি ৬/৭ মণ। আশির দশকে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এসব জমিতে লাগানো শুরু হলো খরালি ইরিধান। এখন অগ্রহায়ণে আমন ধান কাটার পর রবি মৌসুমে সে জমিতে কেউ কেউ লাগান আলু, কেউ সরিষা, আবার কেউ গম, ভূট্টা, সূর্যমুখি, চিনাবাদাম, পেঁয়াজ। কেউ কেউ জমিতে লারা থাকা অবস্থায় হাল না দিয়েই ছিটিয়ে দেন খেসারি কালাই, মাস কালাই, মুগ অথবা মসুর ডাল। এগুলো তুলে মাঘ-ফাল্গুন মাসে রোপণ করা হয় ইরিবোরো ধান। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠতে ইরিধান কাটা হয়। যারা সরিষা লাগান তাদের আর বোরো লাগানোর সময় থাকে না। তারা লাগান সনাতন পদ্ধতির আউশ ধান। এরপর আবার আমন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানালেন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিটি ব্লকে নিয়মিত চাষিদের নিয়ে বৈঠক করে কোন মাসে খেতের কি করণীয় তা আলোচনা করেন। তাদের তৎপরতাতেই উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে বছরে ৩ টি ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে।#