প্রকাশের সময় :
০৯:২৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর ২০২১
১০৫৩
Spread the love
মহাদেবপুর দর্পণ, কাজী রওশন জাহান, নওগাঁ, ৯ নভেম্বর ২০২১ :
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ ও বারান্দা দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছে ঠিকাদার। বিষয়টি জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উপড় ক্ষিপ্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও স্কুলের বারান্দায় প্রায় ৭ মাস ধরে স্কুলের ভবন তৈরির নির্মাণ সামগ্রী ফেলে দখল করে রাখা হয়েছে। এতে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ ও ক্লাস রুমে চলাচল করতে পোহাতে হচ্ছে দূর্ভোগ। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার তরুণরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের নতুন অবকাঠামো তৈরির জন্য ঠিকাদার ইট, পাথর, রড, খোয়া, বালি, কাঠ ও বাঁশ সহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে এসে বিদ্যালয়ের মাঠ, বারান্দা ও কিছু ক্লাস রুম দখল করে রেখেছে। করোনাকালীন দীর্ঘ ছুটির পর গত মাসে স্কুল খুলে দেওয়া হলেও নির্মাণ সামগ্রীগুলো সরানো হয়নি স্কুল মাঠ থেকে।
মাঠ জুড়ে এসব নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহ শিক্ষক-শিক্ষকাদের চলাচলের হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা। প্রায় ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা।
সুমি, রুমা, পলাশ, রায়হানসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। এখন স্কুল চালু হওয়ায় আমরা খুব খুশি। কিন্তু মাঠ জুড়ে ঠিকাদারের নির্মাণ সামগ্রীর জিনিসপত্র রাখায় আমাদের সারাক্ষণ শ্রেণিকক্ষেই আটকে থাকতে হয়। টিফিন বা অন্য সময় দৌড়ঝাঁপ বা একটু খেলাধুলা করবো সে সুযোগ পাচ্ছিনা। আমরা স্কুলের প্রাধান শিক্ষককে বারবার বলেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। বলতে গেলেই তিনি বলেন আমাদের স্কুলের কাজ তাই সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।’
স্থানীয় ক্রীড়ামোদি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আগে আমরা মাঠে খেলাধুলা করতাম। কিন্তু মাঠটি এখন ঠিকাদারের দখলে থাকায় আমাদের খেলাধুলা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। মাঠে ইট, রড ও ইটের খোয়ার টুকরার কারণে খেলাধুলা করা যায় না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদের সাথে কথা বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঠিকাদার বিদ্যালয়ের নতুন ভবন তৈরি করার জন্য নির্মাণ সামগ্রী এনে বিদ্যালয়ের মাঠে রেখেছে তাতে আপনাদের সমস্যা কি। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধূলা করবে কি করবেনা সেটা আমরা বুঝবো।’ আপনি ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বলছেন কেন ঠিকাদারের কাছে আপনার কোন স্বার্থ আছে নাকি প্রশ্ন করলে তিনি নরম শুরে বলেন ‘আমার কেন স্বার্থ থাকবে।’
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমি নিজেও দেখেছি। গত মাসের ২২ তারিখে কাজ শুরুর কথা ছিল কিন্তু ঠিকাদার কাজ শুরু করেননি।’
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, ‘রাজস্ব থেকে অর্থ না পাওয়ায় ঠিকাদার কাজ করতে পারেননি। নির্মাণ সামগ্রী রেখে স্কুলের খেলার মাঠ দখল করে রেখেছে কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ঠিকাদারকে আজই চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানাবো। ঠিকাদার স্কুলের খেলার মাঠে কেন নির্মাণ সামগ্রী রাখবে। তিনি অন্য জায়গা ভাড়া নিয়ে নির্মাণ সামগ্রী রাখবে। বিদ্যালয়ের সমস্যা কেন সৃষ্টি করবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ. টি. এম. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় শিক্ষার্থীদের খেলাধূলায় ব্যাঘাত ঘটছে। প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারকে কয়েক দিন আগেও মালামাল সরিয়ে নিতে বলেছি। আমি আবারও তাদের সঙ্গে কথা বলবো, যেন তারা দ্রুত সব কিছু সরিয়ে নেয়।’#