নওগাঁ ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

মহাদেবপুরে মেয়েরা বুঁনছে পরচুলা ক্যাপ, যাচ্ছে বিদেশে<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১৬ অক্টোবর ২০২১ : পরচুলা তৈরি করছে এক কিশোরী (বামে), আর তৈরি পরচুলা ক্যাপ দেখাচ্ছে অপরজন--------ছবি : কাজী সামছুজ্জোহা মিলন

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১৬ অক্টোবর ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরের কিশোরী মেয়েরা নিপুন হাতে বুঁনছে পরচুলা। সেসব পরচুলা যাচ্ছে বিদেশে। আসছে বৈদেশিক মুদ্রা।

উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের চকহরিবল্লভ আদর্শ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আদর্শ গ্রাম প্রকল্পের অফিস ঘরে বিশেষভাবে তৈরি টেবিলে বসে একদল কিশোরী মেয়ের হাতের কারিশমায় তৈরি হচ্ছে পরচুলা ক্যাপ। প্রতিজন এক একটি ড্যামি মাথায় সুক্ষ্ম নেটে বিশেষ ধরনের সুঁই দিয়ে বুঁনছে একটা একটা করে লম্বা চুল। একটি মাথার চুলের গোছার সমান হলেই তৈরি শেষ।

সেখানে কাজ করছিল এনায়েতপুর গ্রামের আদিবাসী কিশোরী শিখা রাণী পাহান। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এই কিশোরীর বাবা মা কৃষি কাজ করেন। অবসরে এখানে কাজ করে সংসারের হাল ধরেছে এই কিশোরী। সে জানায়, এপর্যন্ত ২টি ক্যাপ তৈরি করেছে। সময় লেগেছে ২ দিন করে। আর টাকা পেয়েছে ৬০০ করে। তার মত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুশাপুকুর গ্রামের তুলি রাণী, ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসি আকতার খাদিজা, চকহরিবল্লভ গ্রামের আশা আকতার, তনু খাতুন, সাহানারা খাতুন, মিনা আকতার, গৃহবধূ সানজিদা আকতার বৈশাখীসহ প্রায় ৩০ জন গত এক মাস থেকে কাজ করছে এখানে।

পরচুলা ক্যাপ তৈরির মিনি কারখানার উদ্যোক্তা ওই আদর্শ গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সুজন জানালেন, তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বন্ধুর সহায়তায় একমাস আগে এই প্রকল্প চালু করেছেন। উপজেলার পাহাড়পুর এলাকার তার এক বন্ধু তাকে এই ক্যাপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাথার ড্যামি, চুল, নেট, সুঁই, চক, পিন প্রভৃতি সরবরাহ করেন। শুরুতে তারা এখানকার মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এখন এখানে ক্যাপ তৈরির পর সেগুলো চলে যায় ঢাকায়। সেখান থেকে রপ্তানি হয় চীন, জাপান, ভারত, দুবাই, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে। এজন্য তাকে মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়।

ওইগ্রামের বাসিন্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিক্ষক রাজু আহমেদ জানান, এলাকার দরিদ্র কিশোরীদের কর্মসংস্থানের জন্য এ এক বিশাল সুযোগ। কূলবধূরা এ থেকে বাড়তি আয় করে স্বাবলম্বি হচ্ছেন। সমাজের পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এ ক্ষুদ্র কুটির শিল্পটির প্রসারে সংশ্লিষ্ট সকলের এগিয়ে আসা উচিৎ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘চকহরিবল্লভ আদর্শগ্রামে কিশোরীরা সুনিপুণ দক্ষতায় পরচুলাযুক্ত ক্যাপ বানাচ্ছে। অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক, ব্যতিক্রমী ও ইনোভেটিভ পেশা মনে হলো আমার কাছে। এই সমস্ত মা-বোনের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এমডিজি অর্জনের পর ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্টে পৌঁছাচ্ছে। অর্জিত হচ্ছে জেন্ডার সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়ের ক্ষমতায়ন।’ এই প্রকল্পে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলেও জানান।#

আপলোডকারীর তথ্য

মহাদেবপুরে মেয়েরা বুঁনছে পরচুলা ক্যাপ, যাচ্ছে বিদেশে<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৬:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১৬ অক্টোবর ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরের কিশোরী মেয়েরা নিপুন হাতে বুঁনছে পরচুলা। সেসব পরচুলা যাচ্ছে বিদেশে। আসছে বৈদেশিক মুদ্রা।

উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের চকহরিবল্লভ আদর্শ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আদর্শ গ্রাম প্রকল্পের অফিস ঘরে বিশেষভাবে তৈরি টেবিলে বসে একদল কিশোরী মেয়ের হাতের কারিশমায় তৈরি হচ্ছে পরচুলা ক্যাপ। প্রতিজন এক একটি ড্যামি মাথায় সুক্ষ্ম নেটে বিশেষ ধরনের সুঁই দিয়ে বুঁনছে একটা একটা করে লম্বা চুল। একটি মাথার চুলের গোছার সমান হলেই তৈরি শেষ।

সেখানে কাজ করছিল এনায়েতপুর গ্রামের আদিবাসী কিশোরী শিখা রাণী পাহান। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এই কিশোরীর বাবা মা কৃষি কাজ করেন। অবসরে এখানে কাজ করে সংসারের হাল ধরেছে এই কিশোরী। সে জানায়, এপর্যন্ত ২টি ক্যাপ তৈরি করেছে। সময় লেগেছে ২ দিন করে। আর টাকা পেয়েছে ৬০০ করে। তার মত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুশাপুকুর গ্রামের তুলি রাণী, ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসি আকতার খাদিজা, চকহরিবল্লভ গ্রামের আশা আকতার, তনু খাতুন, সাহানারা খাতুন, মিনা আকতার, গৃহবধূ সানজিদা আকতার বৈশাখীসহ প্রায় ৩০ জন গত এক মাস থেকে কাজ করছে এখানে।

পরচুলা ক্যাপ তৈরির মিনি কারখানার উদ্যোক্তা ওই আদর্শ গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সুজন জানালেন, তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বন্ধুর সহায়তায় একমাস আগে এই প্রকল্প চালু করেছেন। উপজেলার পাহাড়পুর এলাকার তার এক বন্ধু তাকে এই ক্যাপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাথার ড্যামি, চুল, নেট, সুঁই, চক, পিন প্রভৃতি সরবরাহ করেন। শুরুতে তারা এখানকার মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এখন এখানে ক্যাপ তৈরির পর সেগুলো চলে যায় ঢাকায়। সেখান থেকে রপ্তানি হয় চীন, জাপান, ভারত, দুবাই, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে। এজন্য তাকে মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়।

ওইগ্রামের বাসিন্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিক্ষক রাজু আহমেদ জানান, এলাকার দরিদ্র কিশোরীদের কর্মসংস্থানের জন্য এ এক বিশাল সুযোগ। কূলবধূরা এ থেকে বাড়তি আয় করে স্বাবলম্বি হচ্ছেন। সমাজের পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এ ক্ষুদ্র কুটির শিল্পটির প্রসারে সংশ্লিষ্ট সকলের এগিয়ে আসা উচিৎ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘চকহরিবল্লভ আদর্শগ্রামে কিশোরীরা সুনিপুণ দক্ষতায় পরচুলাযুক্ত ক্যাপ বানাচ্ছে। অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক, ব্যতিক্রমী ও ইনোভেটিভ পেশা মনে হলো আমার কাছে। এই সমস্ত মা-বোনের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এমডিজি অর্জনের পর ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্টে পৌঁছাচ্ছে। অর্জিত হচ্ছে জেন্ডার সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়ের ক্ষমতায়ন।’ এই প্রকল্পে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলেও জানান।#