নওগাঁ ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

মহাদেবপুরে সোনালী আঁশের সুদিন ফিরেছে<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

মহাদেবপুর দর্পণ, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১৪ আগষ্ট ২০২১ : নওগাঁর মহাদেবপুর-সতিহাট পাকা সড়কের পাশের খালে জাগ দেয়া পাটগাছ থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছেন সুলতানপুর গ্রামের পাট চাষী দেলোয়ার হোসেন-----------ছবি : কাজী সামছুজ্জোহা মিলন

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১৪ আগষ্ট ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরে সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরেছে। হিরন্ময় স্বপ্ন দেখছেন এখানকার পাটচাষীরা। পাটকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ পাট কাটছেন। আঁটি বাঁধছেন। কেউ পাট জাগ দিচ্ছেন। কেউ এরই মধ্যে জাগ দেয়া পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত। বাজারে তুলছেনও কেউ কেউ। কৃষি বিভাগ বলছে এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আর চাষীরা বলছেন পাটের ফলন হয়েছে ভাল। বাজারে দামও বেশী। সব মিলিয়ে পাটচাষীরা এবার বেজায় খুশী।

উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় নায্যমূল্য না পাওয়ায় একসময় পাট চাষ ছেড়ে দিয়েছিলেন চাষীরা। গত এক দশকজুড়ে কৃষি বিভাগ পাট চাষের কোন লক্ষ্যমাত্রাই নির্ধারণ করেনি। কিন্তু গতবছর পাটের ভাল দাম পাওয়ায়, দেশে বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ায় চাষীরা আবার ঝুকেছেন পাট চাষে। অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় চাষীরা এবার বেশী জমিতে পাটের চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার উপজেলায় ১১৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু চাষীরা আবাদ করেছেন ২০০ হেক্টর জমিতে। এ থেকে ১০ দশমিক ২ বেল পাট উৎপাদন হবে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, সরকার পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি হিসেবে পাটকাঠির ব্যবহার ও জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা পাট চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। পাট চাষ সফল করতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে হাতে-কলমে চাষীদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাটবীজ সরবরাহ প্রভৃতি।

উপজেলার সদর, সুলতানপুর, এনায়েতপুর, শিবরামপুর ও ধর্মপুর এলাকার পাটচাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চৈত্র-বৈশাখ মাসে সার-গোবর ছিটিয়ে জমি তৈরি করে পাটের বীজ বপণ করেছেন চাষীরা। ২০-২৫ দিনে গাছ একটু বড় হওয়ার পর ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেছেন। এর দুই থেকে আড়াই মাস পর পাট পরিপক্কতা লাভ করে আঁশযুক্ত হয়। এর পরই পাট কেটে আঁটি বেঁধে ডোবায় জাগ দেন। মৌসুমের শুরু থেকে নিয়মমাফিক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে পাট জাগ দিতে পানির অভাব হয়নি।

উপজেলার মহাদেবপুর-সতিহাট পাকা সড়কের উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে সড়কের পাশের খালে জাগ দেয়া পাট থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছিলেন ওইগ্রামের পাটচাষী দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানালেন, নিজের ৫ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। ৫৩ আঁটি পাটগাছ হয়েছে। এ থেকে ১০ হাবল পাট হয়েছে। এর ওজন হবে আড়াই মণ। মহাদেবপুরের হাটে এখন পাট বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে। এই হিসেবে ৭ হাজার টাকা বিক্রি হবে। লাভ হবে ৫ হাজার টাকা। অন্য ফসলে এত লাভ হতোনা বলেও তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘পাটচাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে পাটের আবাদ। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কৃষকেরা পাট উৎপাদনে আবারও মনযোগী হয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।’#

আপলোডকারীর তথ্য

মহাদেবপুরে সোনালী আঁশের সুদিন ফিরেছে<<মহাদেবপুর দর্পণ>>

প্রকাশের সময় : ০১:৪১:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২১
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ, এম, সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১৪ আগষ্ট ২০২১ :

নওগাঁর মহাদেবপুরে সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরেছে। হিরন্ময় স্বপ্ন দেখছেন এখানকার পাটচাষীরা। পাটকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ পাট কাটছেন। আঁটি বাঁধছেন। কেউ পাট জাগ দিচ্ছেন। কেউ এরই মধ্যে জাগ দেয়া পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত। বাজারে তুলছেনও কেউ কেউ। কৃষি বিভাগ বলছে এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আর চাষীরা বলছেন পাটের ফলন হয়েছে ভাল। বাজারে দামও বেশী। সব মিলিয়ে পাটচাষীরা এবার বেজায় খুশী।

উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় নায্যমূল্য না পাওয়ায় একসময় পাট চাষ ছেড়ে দিয়েছিলেন চাষীরা। গত এক দশকজুড়ে কৃষি বিভাগ পাট চাষের কোন লক্ষ্যমাত্রাই নির্ধারণ করেনি। কিন্তু গতবছর পাটের ভাল দাম পাওয়ায়, দেশে বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ায় চাষীরা আবার ঝুকেছেন পাট চাষে। অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় চাষীরা এবার বেশী জমিতে পাটের চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার উপজেলায় ১১৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু চাষীরা আবাদ করেছেন ২০০ হেক্টর জমিতে। এ থেকে ১০ দশমিক ২ বেল পাট উৎপাদন হবে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, সরকার পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি হিসেবে পাটকাঠির ব্যবহার ও জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা পাট চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। পাট চাষ সফল করতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে হাতে-কলমে চাষীদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাটবীজ সরবরাহ প্রভৃতি।

উপজেলার সদর, সুলতানপুর, এনায়েতপুর, শিবরামপুর ও ধর্মপুর এলাকার পাটচাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চৈত্র-বৈশাখ মাসে সার-গোবর ছিটিয়ে জমি তৈরি করে পাটের বীজ বপণ করেছেন চাষীরা। ২০-২৫ দিনে গাছ একটু বড় হওয়ার পর ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেছেন। এর দুই থেকে আড়াই মাস পর পাট পরিপক্কতা লাভ করে আঁশযুক্ত হয়। এর পরই পাট কেটে আঁটি বেঁধে ডোবায় জাগ দেন। মৌসুমের শুরু থেকে নিয়মমাফিক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে পাট জাগ দিতে পানির অভাব হয়নি।

উপজেলার মহাদেবপুর-সতিহাট পাকা সড়কের উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে সড়কের পাশের খালে জাগ দেয়া পাট থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছিলেন ওইগ্রামের পাটচাষী দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানালেন, নিজের ৫ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। ৫৩ আঁটি পাটগাছ হয়েছে। এ থেকে ১০ হাবল পাট হয়েছে। এর ওজন হবে আড়াই মণ। মহাদেবপুরের হাটে এখন পাট বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে। এই হিসেবে ৭ হাজার টাকা বিক্রি হবে। লাভ হবে ৫ হাজার টাকা। অন্য ফসলে এত লাভ হতোনা বলেও তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘পাটচাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে পাটের আবাদ। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কৃষকেরা পাট উৎপাদনে আবারও মনযোগী হয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।’#