নওগাঁ ০২:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার :
মহাদেবপুর দর্পণ.কম ও সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের পরীক্সষমূলক সম্প্রচারে আপনাকে স্বাগতম ## আপামর মেহনতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় সিক্ত নওগাঁর নিজস্ব পত্রিকা ## নওগাঁর ১১ উপজেলার সব খবর সবার আগে ## মহাদেবপুর দর্পণ একবার পড়ুন, ভালো না লাগলে আর পড়বেন না ## যেখানে অনিয়ম সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ ## যেখানে দূর্নীতি, অন্যায়, অবিচার সেখানেই মহাদেবপুর দর্পণ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ## মহাদেবপুর দর্পণের ফেসবুক আইডিতে ফলো দিয়ে সঙ্গেই থাকি ##

কালের সাক্ষী আত্রাইয়ের শতবর্ষী বটগাছ

Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ), ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ :

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের পূর্বপার্শ্বে কালের সাী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত বছরের পুরনো বটগাছটি। রাস্তার দুই পাশে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটির বিশাল শাখা-প্রশাখা। শিকর-বাকরে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। শতবর্ষী এ বটগাছটি আজও কালের সাী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাজা তরুণ আর চিরসবুজ। যেন বার্ধক্যের ছাপ লাগেনি তার গায়ে। আর সে কারণেই এ বটগাছকে ঘিরে নানা রহস্যে ঘেরা গল্প-কাহিনী আর কল্পগাথা।

কী শোভা, কি ছায়া গো, কি স্নেহ, কি মায়া গো, কি আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের এ চরণে গ্রাম বাংলার অপরুপ শোভা, ছায়া-মায়া ও স্নেহের আঁচল বিছানো স্থান যেন আমাদের বটবৃরে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

বয়োবৃদ্ধরা জানান, শের শাহ্ বাদশার আমলে গ্রান্ডটাংক রোড নির্মাণ কালে আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম সংলগ্নে এ বটগাছটি রোপণ করা হয়েছিল। যার বয়স এখন একশ’ বছর পেরিয়ে গেছে। এ বট বৃরে গা ঘেসে একটি কদম গাছের জন্ম হয়। আর সে কারণেই এ জায়গাটির নামকরণ করা হয়েছিল কদমতলা। এখন সে কদম গাছটি আর নেই। কিন্তু কালের আবর্তে যুগ যুগ ধরে আজও তার স্মৃতিটুকু রয়ে গেছে।

শের শাহ্ বাদশার আমলে এ এলাকা বিল অঞ্চল ছিল। রোদ বষ্টির মাঝে কৃষাণ-কৃষাণী তাদের কষ্টের ফসল ফলাতো। রাখালেরা দিগন্তজোড়া মাঠে ঘাস খাওয়ানোর জন্য গবাদিপশুকে ছেড়ে দিয়ে কান্ত শরীরে শীতল ছায়ার প্রতিায় থাকতো। আর সে কারণেই এই বটবৃ রোপণ করা হয়েছিল। তাই গ্রীষ্মের দাবদাহে কৃষক যখন অতিষ্ট ঠিক তখনই একটু শীতল ছায়ার আশায় এ বট বৃরে নীচে জমা হতো।

এ বটবৃ সম্পর্কে আলাপচারিতায় ভবানীপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, আমার জন্মের পর থেকেই এ বটগাছটি দেখে আসছি। এই বটগাছের কত বয়স হবে তা আমরা সঠিক ভাবে বলতে পারবো না।

বর্তমানে বটগাছের নিচে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সমাগম ঘটে। এ বটগাছটি যেন সেই আদিম সনাতন সভ্যতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সারকথা আজও সবার সামনে তুলে ধরে আছে।

এদিকে অযত্ন-অবহেলা, রণাবেণের অভাবে ও নানামুখী অত্যাচারের কারণে এই ঐতিহ্যবাহী বটগাছের অস্তিত্ব আজ নষ্ট হতে চলেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বট গাছটি দেখতে আসে লোকজন বছরের প্রায় প্রতিদিন। তাদের জন্য বিশ্রাম বা বসার জায়গাটুকুও এখানে নেই। তবে বিশ্বায়নের যুগে ডিজিটাল দেশ গঠনের পাশাপাশি কান্ত কৃষাণের প্রাণ জুড়ানো সবুজ প্রকৃতির বটের ছায়ার কোন বিকল্প নেই। তাই ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিবছর বৃরোপণ সপ্তাহ উদযাপন কালে আমাদের বটের চারা রোপন করা উচিত।

এলাকার সচেতন মহল মনে করেন এই বট বৃটি সংরণ এবং এই স্থানটিতে দর্শনার্থীদের বসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এখানে আরো লোকের সমাগম ঘটবে এবং ভবিষ্যতে এ বটব পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। এলাকাবাসীর দাবী এই ঐহিত্যবাহী বটগাছটি রায় যেন প্রশাসনের সুদৃষ্টি পড়ে এবং তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। #

আপলোডকারীর তথ্য

কালের সাক্ষী আত্রাইয়ের শতবর্ষী বটগাছ

প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Spread the love

মহাদেবপুর দর্পণ, নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ), ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ :

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের পূর্বপার্শ্বে কালের সাী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত বছরের পুরনো বটগাছটি। রাস্তার দুই পাশে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটির বিশাল শাখা-প্রশাখা। শিকর-বাকরে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। শতবর্ষী এ বটগাছটি আজও কালের সাী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাজা তরুণ আর চিরসবুজ। যেন বার্ধক্যের ছাপ লাগেনি তার গায়ে। আর সে কারণেই এ বটগাছকে ঘিরে নানা রহস্যে ঘেরা গল্প-কাহিনী আর কল্পগাথা।

কী শোভা, কি ছায়া গো, কি স্নেহ, কি মায়া গো, কি আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের এ চরণে গ্রাম বাংলার অপরুপ শোভা, ছায়া-মায়া ও স্নেহের আঁচল বিছানো স্থান যেন আমাদের বটবৃরে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

বয়োবৃদ্ধরা জানান, শের শাহ্ বাদশার আমলে গ্রান্ডটাংক রোড নির্মাণ কালে আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম সংলগ্নে এ বটগাছটি রোপণ করা হয়েছিল। যার বয়স এখন একশ’ বছর পেরিয়ে গেছে। এ বট বৃরে গা ঘেসে একটি কদম গাছের জন্ম হয়। আর সে কারণেই এ জায়গাটির নামকরণ করা হয়েছিল কদমতলা। এখন সে কদম গাছটি আর নেই। কিন্তু কালের আবর্তে যুগ যুগ ধরে আজও তার স্মৃতিটুকু রয়ে গেছে।

শের শাহ্ বাদশার আমলে এ এলাকা বিল অঞ্চল ছিল। রোদ বষ্টির মাঝে কৃষাণ-কৃষাণী তাদের কষ্টের ফসল ফলাতো। রাখালেরা দিগন্তজোড়া মাঠে ঘাস খাওয়ানোর জন্য গবাদিপশুকে ছেড়ে দিয়ে কান্ত শরীরে শীতল ছায়ার প্রতিায় থাকতো। আর সে কারণেই এই বটবৃ রোপণ করা হয়েছিল। তাই গ্রীষ্মের দাবদাহে কৃষক যখন অতিষ্ট ঠিক তখনই একটু শীতল ছায়ার আশায় এ বট বৃরে নীচে জমা হতো।

এ বটবৃ সম্পর্কে আলাপচারিতায় ভবানীপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, আমার জন্মের পর থেকেই এ বটগাছটি দেখে আসছি। এই বটগাছের কত বয়স হবে তা আমরা সঠিক ভাবে বলতে পারবো না।

বর্তমানে বটগাছের নিচে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সমাগম ঘটে। এ বটগাছটি যেন সেই আদিম সনাতন সভ্যতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সারকথা আজও সবার সামনে তুলে ধরে আছে।

এদিকে অযত্ন-অবহেলা, রণাবেণের অভাবে ও নানামুখী অত্যাচারের কারণে এই ঐতিহ্যবাহী বটগাছের অস্তিত্ব আজ নষ্ট হতে চলেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বট গাছটি দেখতে আসে লোকজন বছরের প্রায় প্রতিদিন। তাদের জন্য বিশ্রাম বা বসার জায়গাটুকুও এখানে নেই। তবে বিশ্বায়নের যুগে ডিজিটাল দেশ গঠনের পাশাপাশি কান্ত কৃষাণের প্রাণ জুড়ানো সবুজ প্রকৃতির বটের ছায়ার কোন বিকল্প নেই। তাই ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিবছর বৃরোপণ সপ্তাহ উদযাপন কালে আমাদের বটের চারা রোপন করা উচিত।

এলাকার সচেতন মহল মনে করেন এই বট বৃটি সংরণ এবং এই স্থানটিতে দর্শনার্থীদের বসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এখানে আরো লোকের সমাগম ঘটবে এবং ভবিষ্যতে এ বটব পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। এলাকাবাসীর দাবী এই ঐহিত্যবাহী বটগাছটি রায় যেন প্রশাসনের সুদৃষ্টি পড়ে এবং তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। #