মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ২৯ এপ্রিল ২০২০ :
নওগাঁর মহাদেবপুরে ২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বুধবার সকালে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: আকন্দ মো: আখতারুজ্জামান আলাল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজশাহী থেকে তাদের পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে।
আক্রান্তদের একজন উপজেলা সদরের পূর্ব দুলালপাড়ার আনোয়ার হোসেনের কন্যা আশা (২৪) জানান, তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি ডেন্টাল চেম্বারে কাজ করতেন। গত ৭ এপ্রিল তিনি বাড়ী আসেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কোন লক্ষণ তার ছিলনা। ঢাকা থেকে আসার কারণে স্বাস্থ্য কর্মীরা গত ২২ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করে। কিন্তু কি রিপোর্ট এসেছে তা এখনও তাকে জানানো হয়নি। তিনি দাবী করেন যে, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ্য রয়েছেন।
আক্রান্ত অপরজন উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিদ্দিকপুর গ্রামের শ্রী সুবোধ চন্দ্রের ছেলে সুজিত কুমার (২৪) জানান, তিনি ঢাকার খিলগাঁয়ের একটি ফার্মেসীতে সেলস্ ম্যান কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন। তার ছোট ভাই পিন্টু কুমার ঢাকায় একটি এয়ারলাইন্স কোম্পানীতে চাকরি করতেন। তারা দুজনেই গত ২০ মার্চ ঢাকা থেকে বাড়ী আসেন। কিন্তু তাদের জ্বর, কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্ট বা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত কোন লক্ষণই ছিলনা। ঢাকা থেকে আসার কারণে স্বাস্থ্য কর্মীরা গত ২৪ এপ্রিল বকাপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে। কিন্তু তাদেরকে কোন ফলাফল জানানো হয়নি।
তিনি জানান, ঢাকা থেকে বাড়ী আসার পর থেকে গত প্রায় দেড় মাস ধরে তিনি স্বাভাবিক চলফেরা করছেন। এমনকি বুধবার সকালে তিনি মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে একটি সেলুনে চুল কেটে এসেছেন। কিন্তু দুপুর থেকে স্থানীয়রা তার সাথে খারাপ ব্যবহার করছে। তিনি তার নমুনা আবার পরীক্ষা করানোর দাবী জানান।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, বেলা ১১ টায় মহাদেবপুর ইউএনও ওসিসহ আক্রান্তদের বাড়ী গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যসহ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং দুই পরিবারের আশেপাশের ৬ টি বাড়ী লকডাউন ঘোষণা করেছেন।
মহাদেবপুর ইউএনও মিজানুর রহমান মিলন জানান, আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সরবরাহ করা হবে। ২ পরিবারের মোট ৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
এছাড়া বাসস্ট্যান্ডের ওই সেলুন লকডাউন করা হয়েছে এবং ৪ নরসুন্দরসহ মোট ১২ জনকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। #