নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ অবশেষে ভ্যানচালক মহসীন আলীর (২২) হত্যারহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। এই মামলায় হত্যাকারিসহ দুইজনকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। নিহত মহসীন আলী উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের আতুড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। আটকরা হলো রাইগাাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আবু তালেবের ছেলের সাখাওয়াত হোসেন ওরফে জিয়া (৩৫), ও বগুড়া জেলার সান্তাহার ইয়ার্ড কলোনীর ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী শ্রী প্রদীপ চন্দ্র (৩০)।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম বলেন, ‘গত ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে মহসিন ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু কোনো খোঁজ না পেয়ে পরদিন মহাদেবপুর থানায় মর্জিনা বেগম সাধারণ ডায়েরি করেন। ২১ জানুয়ারি লাশ উদ্ধারের পর মর্জিনা বাদী হয়ে মহাদেবপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাখাওয়াত হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে সাখাওয়াত বলেছেন, মাস দুয়েক আগে সাখাওয়াতের কাছ থেকে মহসিন তিন হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। পরে মহসিন এক হাজার টাকা পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট দুই হাজার টাকা পরিশোধ না করায় সাখাওয়াত তাঁকে চাপ দিতে থাকেন। গত ১৩ জানুয়ারি দুপুরে জরুরি কথা আছে বলে মহসিনকে উপজেলার মাতাজিহাটে ডেকে নেন তিনি। সেখান থেকে তাঁরা ওই ভ্যানে করে রাত নয়টার দিকে উপজেলার মহিষবাথান মোড়ের পাশে হোসেনপুর বালু পয়েন্ট এলাকায় যান। সেখানে ধারের টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে সাখাওয়াত ইট দিয়ে মহসিনের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে তাঁকে হত্যা করেন।
সাখাওয়াত একটি হলুদের খেতের ভেতরে গাছের পাতা দিয়ে মহসিনের লাশ ঢেকে রেখে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যান। পরে সান্তাহারের প্রদীপ চন্দ্র নামের এক ব্যক্তির কাছে সাখাওয়াত ভ্যানটি বিক্রি করেন। সাখাওয়াতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রদীপ চন্দ্রের বাড়ি থেকে ছিনতাই হওয়া অটোভ্যানের খণ্ড খণ্ড অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। আলামত নষ্ট করার অভিযোগে প্রদীপকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন আহমেদ জানান, এসআই জয় দাস মামলাটি তদন্ত করেন। বিকেলে আসামী সাখাওয়াত হোসেন ওরফে জিয়া হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে নওগাঁর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ এর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।#