
মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ, ২ এপ্রিল ২০২০ :
নওগাঁর প্রত্যান্ত গ্রামঞ্চলে জনগণের দোড়গোরায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দিতে সরকার চালু করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিক সিসি। প্রতিটি সিসিতে রয়েছেন একজন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সিএইচসিপি। চিকিৎসা সেবা প্রদানে সিএইচসিপিদের সরকার থেকে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে সকল সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা বন্ধ রয়েছে। জন্মভূমির টানে অনেকে বাড়ি ফিরেছেন। অনেকে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নওগাঁয় সিএইচসিপিরা অনেকটা ঝুঁকির মুখে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নওগাঁর সিভিল সার্জন সিএস অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১১ টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৯৯ টি ইউনিয়নে ৩০১ টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। ১১ টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭৩ জন ডাক্তার ও ২৩২ জন নার্স কর্মরত রয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পিপিই, মাস্ক ও গ্লোভস ১ হাজার ১৪০ পিস করে ও হেকসাসোল ১৬৫ পিস দেয়া হয়েছে। এসব উপকরণের মধ্যে সিএস অফিসে ১৪০ পিস পিপিই ও ৫০ পিস মাস্ক রেখে বাঁকীগুলো সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিতরণ করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য শুধুমাত্র মাস্ক ও গ্লোভস বরাদ্দ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার নামা নুরপুর গ্রামের যুবক শফিক বলেন, তিনি ঢাকায় থাকতেন। ১০ দিন আগে বাড়িতে আসার পর জ্বর ও সর্দিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দূরে হওয়ায় বাড়ির পাশে কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
নামা নুরপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি কামরুল হাসান বলেন, করোনা আতঙ্কের পর সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ডিউটি দেয়া হয়েছে। আমাদের সাধারণত: প্রত্যন্ত এলাকার জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ অন্যান্য রোগী দেখতে হয়। আগে প্রতিদিন যেখানে ৩০/৩৫ জন রোগী হতো। এখন সেখানে ৫০/৬০ জন রোগী দেখতে হচ্ছে। এই মুহুর্তে ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। ঢাকা ফেরতদেরকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। এখন কে ঢাকা থেকে গ্রামে আসছেন সেটা আমরা বুঝতেও পারছি না। চিকিৎসা দিতে গিয়ে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
নওগাঁ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আবুল কালাম আজাদ বলেন, সদর উপজেলায় ৩১ টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। সিসিতে কর্মরত সিএইচসিপিরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে তাদের নিরাপত্তা সামগ্রী দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় নিবাপত্তা সামগ্রী প্রদান করা হবে।
নওগাঁর সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ মঃ আখতারুজ্জামান আলাল বলেন, প্রকারভেদে বিভিন্ন অসুস্থ রোগী দেখার জন্য সরকার থেকে একটা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডাক্তার হলেই যে পিপিই ব্যবহার করতে হবে এমন কথা না। আর সে নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করছি। সর্দি-কাশি রোগীদের জন্য আলাদা কর্ণার করা হয়েছে। তবে এসব রোগী দেখার জন্য আপাতত নিরুসাহীত করা হচ্ছে। তাদের জন্য অনলাইন বা ফোনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিএইচসিপিরা চিকিৎসা দিতে গিয়ে কিছুটা ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু ভয় পেলেও আমাদের কিছু করার নাই। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের রোগী দেখতে পিপিই থাকা প্রয়োজন। কিন্ত প্রর্যাপ্ত সরববরাহ না থাকার কারণে আপাতত কোন রোগী এলে মাস্ক ও গ্লোভস পরে দেখতে হবে। #
