মহাদেবপুর দর্পণ, কিউ,এম,সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ), ১ এপ্রিল ২০২০ :
নওগাঁর মহাদেবপুরে ৩ মহিলা ৪৩ বছর পর বিরোধীয় জমিতে ঘর নির্মাণ করায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, দীর্ঘদিন তাদের পাওনা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে রাখা ঠিক হয়নি। এখন তারা তাদের সম্পত্তির দখল নিয়ে ঠিক করেছেন। আবার কেউ বলছেন এতদিন পর বিরোধীয় সম্পত্তিতে ঘর তৈরী করা অন্যায়। তারা অবিলম্বে ঘরটি অপসারণের দাবী জানান।
উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের বুজরুক অন্তপুর গ্রামের মৃত হাফেজ উদ্দিন তার জীবদ্দশায় ১৯৭৭ সালে ৩ মেয়ে খুকি বিবি, ফিরোজা বেগম ও জিন্না বেগমের নামে বিভিন্ন মৌজায় মোট ৫০ শতক সম্পত্তি দানপত্র রেজিষ্ট্রি করে দেন। কিন্তু সে দলিল তার ভাইয়েরা গোপন করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি সে বিষয়ে জানতে পেরে সে জমি পাবার জন্য শরীকদের কাছে ধর্ণা দেন। ব্যর্থ হয়ে এনায়েতপুর ইউনিয়ন গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিবাদীরা সে আদালতে হাজির হননি। নিরুপায় হয়ে গত রবিবার বিরোধীয় জমিতে টিন দিয়ে একটি ঘর তৈরী করে তারা সেখানেই বসবাস শুরু করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। একটি প্রভাবশালী মহল তাদেরকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। এমনকি থানা পুলিশ তাদেরকে সে ঘর ভেঙ্গে ফেলে সে স্থান থেকে চলে যাবার নির্দেশ দেয়।
জানতে চাইলে, ওই গ্রামের মৃত কাজী ময়েন উদ্দিনের স্ত্রী জয়নুর বেওয়া জানান, প্রতিপক্ষরা তার চাচাতো বোন। তিনি পৈত্রিক সূত্রে, ক্রয় সূত্রে ও মামলার ডিক্রি মূলে তার বসতবাড়ী সংলগ্ন মোট ৪৬ শতক সম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ সেখানে প্রতিপক্ষরা ঘর নির্মাণ করে সে সম্পত্তি জবরদখল করার চেষ্টা করছে। এব্যাপারে মহাদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের স্থাপনা তুলে নিয়ে যেতে বলেন। তারা সেদিন ঘরটি ভেঙ্গে নিয়ে যেতে রাজীও হয়েছিল। কিন্তু তা এখন আর তুলছেনা।
তিনি জানান, তার দাদা মৃত খোদাবক্স মন্ডলের সম্পত্তি গত আরএস জরিপ আমলে ভূলক্রমে তার পিতা মফেজ উদ্দিনের নাম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র তার চাচা হাফেজ উদ্দিনের নামে খতিয়ান প্রকাশিত হয়। এব্যাপারে তার মা নজিরন বেওয়া বাদী হয়ে ১৯৭৮ সালে নওগাঁর মুন্সেফি আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা দায়ের করে ১৯৮২ সালে ডিক্রি লাভ করেন। গতবছর সে বিষয়ে ডিক্রি জারী মামলা দায়ের করলে প্রতিপক্ষরা তাতে জবাব দাখিল করে। মামলাটি আদালতে চলমান থাকা অবস্থায় প্রতিপক্ষরা নালিশী সম্পত্তি জবরদখল করে ঘর তৈরী করে।
ভূক্তভোগী খুকি বিবি জানান, তারা মামলায় একতরফা ডিক্রি লাভ করেছিল। জানতে পেরে তারা সে মামলায় জবাব দাখিল করেন। এখন তারা তাদের নায্য পাওনা বুঝে চান।
মহাদেবপুর থানার এএসআই আসিফ আলী জানান, ইতিপূর্বে নালিশী সম্পত্তি নিয়ে ফৌজদারী মামলা হয়েছে। সেখানে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশংকা থাকায় ঘর তৈরী না করতে বলা হয়েছিল। #